তপন বকসি, মুম্বই: মহানবমীতে কল্লোলিনী তিলোত্তমার তারকাদের মতো শারদোৎসবের আমেজে মেতে উঠেছেন স্বপ্ননগরী মুম্বই ইন্ডাস্ট্রির সেলেবরাও। তারকাখচিত ‘মুখার্জিদের পুজো’ থেকে ‘লোখন্ডওয়ালা দুর্গোৎসব’, জমজমাট শারদোৎসব। সেই তালিকা থেকে বাদ পড়েনি প্রবীণ অভিনেতা বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ির পুজোও। নবমীর দিন বেলা গড়াতেই সেই পুজোয় বাবা রাকেশ রোশনকে নিয়ে হাজির হলেন হৃতিক রোশন।
বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ির পুজোয় এসে ভক্তিভরে প্রণাম করলেন বাবা এবং ছেলে। দু’জনেরই পরনে ছিল ফরম্যাল পোশাক। সঙ্গে ছিল অভিনেতার দেহরক্ষীরাও। বাবা রাকেশ রোশন এবং ছেলে হৃতিককে একসঙ্গে নিজের বাড়ির পুজোতে পেয়ে বেশ খোশ মেজাজে দেখা গেল প্রবীণ অভিনেতা বিশ্বজিৎকে। এই অবশ্য প্রথমবার বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ির পুজোয় আসেননি রাকেশ-হৃতিক। বিগত বহু বছর ধরেই বাবা এবং ছেলে এই পুজোয় আসেন।
মাস খানেক আগেই রাকেশ রোশনের ক্যানসার ধরা পড়েছে। বাবার মারণ রোগে আক্রান্ত হওয়ার খবর হৃতিক নিজে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছিলেন। তারপর থেকেই পরিচালক তথা অভিনেতা রাকেশকে দৈনন্দিন জীবনে বেশ নিয়ম মেনে চলতে হচ্ছে। তবে এসবের মাঝেও বাদ গেল না রাকেশ রোশনের দুর্গাদর্শন। ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিবারের মতো এবারও হাজির হয়েছেন মুম্বইয়ের বাঙালি সেলেবদের মধ্যে অন্যতম বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ির পুজোয়। স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বজিতের দ্বিতীয় পক্ষের মেয়ে প্রিমা চট্টোপাধ্যায়ও।
বিশ্বজিতের জুহুর পুজোয় ছেলে হৃতিককে নিয়ে প্রতিবার রাকেশ রোশনের আসার নেপথ্যে কিন্তু অন্য এক কারণও রয়েছে। কারণ, রাকেশ রোশনের মা আদতে বাঙালি। দিল্লি আকাশবাণীর ইরাবতী মৈত্রকে ভালবেসে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন উত্তর প্রদেশের বরেলির রোশন নাগরথ। পরবর্তীকালে সেই রোশন নাগরথই হয়ে যান বলিউডের বিখ্যাত সংগীত পরিচালক ‘রোশন’, অর্থাৎ যিনি কি না সম্পর্কে হৃতিক রোশনের ঠাকুরদা। যাঁর ছোট ছেলে রাজেশ রোশনও বলিউডে বেশ নাম করেছেন সংগীত পরিচালক হিসাবে। তাই হৃতিকের ঠাকুমা ইরাবতী মৈত্রর সুবাদে মুম্বইয়ে রোশন পরিবারে রবীন্দ্র সংগীত শোনার রেওয়াজ ছিল। রাজেশ রোশনের ‘ছুঁকর মেরে মন কো কিয়া তুনে ক্যায়া ইশারা’ গানটি ‘তোমার হল শুরু আমার হল সারা’ রবীন্দ্র সংগীত থেকে উদবুদ্ধ হয়েই বানানো। আর ঠিক বাঙালিয়ানার প্রতি এমন টানেই ছেলে হৃতিককে নিয়ে রাকেশ রোশন প্রতিবার বিশ্বজিতের দুর্গা পুজোয় আসেন। সম্ভব হলে কোনও কোনওবার অঞ্জলিও দেন নিষ্ঠাভরে।
ছবি: রূপেশ সুরভে
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.