রবিবারের বারবেলা। আচমকাই খবর এল নিজের ফ্ল্যাটেই গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুত। মানতে পারেননি কেউ। মানতে পারেননি ‘এমএস ধোনি: দ্য আনটোল্ড স্টোরি’র সহ-অভিনেতা রাজেশ শর্মাও। কিছুক্ষণের জন্য বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন তিনি। সেই কথাই বললেন ‘সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল’কে। শুনলেন বিশাখা পাল।
সুশান্ত সিং রাজপুত কাল আত্মহত্যা করেছেন। খবরটা শুনে প্রাথমিকভাবে কতটা ধাক্কা খেলেন?
রাজেশ: আমি বাকরুদ্ধ। প্রথম এক দু’ঘণ্টা তো বুঝতেই পারিনি কী হল।
তাঁর সঙ্গে তো অভিনয়ের অভিজ্ঞতা রয়েছে আপনার…
রাজেশ: সুশান্তের সঙ্গে আমি দুটো ছবি করেছিলাম। প্রথমটা ছিল ‘শুদ্ধ দেশি রোম্যান্স’। যশরাজ ফিল্মসের ছবি ছিল। একটা সিনে আমি ছিলাম। ঋষি কাপুর ছিলেন আর সুশান্ত সিং রাজপুত ছিলেন। দু’দিনের কাজ ছিল। সুশান্ত আমার ছবি আগে দেখেছিলেন। আমাকে বলেছিলেন, ‘রাজেশদা আপনার ছবি কিন্তু আমার খুব ভাল লাগে।’ আর তারপর কাট টু- ‘এম এস ধোনি’।
রাঁচিতে শুটিংয়ের সময় তো আপনি ছিলেন?
রাজেশ: হ্যাঁ। ‘এম এস ধোনি’ যখন করছি, তখন আমরা রাচিতে ছিলাম। লম্বা শিডিউল ছিল। একসঙ্গে এক হোটেলে ছিলাম আমরা। খাওয়াদাওয়াও চলত একই সঙ্গে। ডিনার, প্রাতরাশ একসঙ্গেই করতাম আমরা। খুব প্রাণচঞ্চল মানুষ ছিলেন সুশান্ত। জীবনটাকে উপভোগ করতেন। পুরো ছবিটা নিয়ে খুব সিরিয়াস ছিলেন। ধোনির হাঁটা-চলা, ওঠা-বসা… খোনিকে খুব ভালভাবে পর্যবেক্ষণ করতেন। উনি যেভাবে ছবিটা করেছিলেন, অন্য কারওর পক্ষে করাটা হয়তো সম্ভব ছিল না।
কেন?
রাজেশ: কারণ সুশান্ত ক্রিকেট খেলতেন। ফলে আগে থেকেই খেলাটি সম্পর্কে তাঁর ধারণা ছিল। ‘ধোনি’র সময় সেই অভিজ্ঞতাই কাজে লাগান। স্কুল কলেজে ক্রিকেট খেলেছেন। প্র্যাকটিসেও ছিলেন। সেদিক থেকে উনি ছিলেন পারফেক্ট কাস্ট।
সুশান্তের এমন কোনও জিনিস যা আপনার মনে ভাল লেগেছিল?
রাজেশ: ওর খুব সুন্দর একটা হাসি ছিল। অকারণে কথা বলতেন না। ওই হোটেলে একটা কাবাব কর্নার ছিল। আমাকে একদিন বললেন, ‘রাজেশদা কাবাব খেয়েছেন ওখানে? খুব ভাল কাবাব পাওয়া যায়। এমন একজন হাসিখুশি ছেলে এভাবে চলে যাবে। মেনে নিতে পারছি না।’
শুটিংয়ে কেমন থাকতেন সুশান্ত? দু’টো ছবি একসঙ্গে করেছেন, অনেকটা সময়ই তো সেটে কাটিয়েছেন।
রাজেশ: প্রথম ছবির শুটংয়ের সময় সেটে আমি সিগারেট খাচ্ছিলাম। হঠাৎ সুশান্ত আমায় বলল ‘রাজেশদা একটা সিগারেট হবে?’ আমি বললাম ‘হ্যাঁ নিশ্চয়ই।’ সিগারেট দিয়েছিলেম ওঁকে একটা। এরপর যখন ‘ধোনি’র শুটিং করছি তখন সেটে এসে হঠাৎ একদিন আমাকে বলেন, ‘রাজেশদা এই যে একটা সিগারেট, মনে আছে?’ তারপর থেকে এই চলত। কখনও ওর সিগারেট শেষ হয়ে যায়, কখনও আমার শেষ হয়ে যায়। কখনও খাওয়ার সময় আমায় বলত, রাজেশদা এটা খান। আজ এটা খুব ভাল হয়েছে।
খাদ্যরসিক ছিলেন?
রাজেশ: না। খাদ্যরসিক ছিলেন না। কম খেতেন। কিন্তু ভালবেসে খেতেন সুশান্ত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.