বিদিশা চট্টোপাধ্যায়: সিনেমা, রাজনীতি। ফের ফিরছেন টেলিভিশনে। ফের রিয়ালিটি শোয়ের পরিচালনা। দিনের চব্বিশটা ঘণ্টা সব সময়ই কাজে ব্যস্ত। বিধায়ক, পরিচালক রাজ চক্রবর্তীর কথায় তিনি কাজ পাগল মানুষ। বাড়িতে ছোট সন্তান যুবানের। স্ত্রী অভিনেত্রী শুভশ্রী। সংসার, কাজ সবই সামলাচ্ছেন দারুণভাবে। বিধায়ক হয়ে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াছেন। শুটিং ফ্লোরে বিন্দাস কাজ করছেন। বাড়ি ফিরে বউ ছেলেকে নিয়ে সময় কাটাচ্ছেন। রাজের সোশ্যাল মিডিয়া তো রয়েছে সবেরই আপডেট। তবে এসব আপডেটেই সোশ্যাল মিডিয়ায় বার বার ট্রোল হোন রাজ-শুভশ্রী। ট্রোলের বিরুদ্ধে রাজের সোজা উত্তর, ‘এসব গায়ে মাখি না।’
প্রায় এগারো বছর পর ছোটপর্দার জন্য পরিচালনায় ফিরছেন রাজ চক্রবর্তী। কালার্স বাংলায় আসছে ‘সঙ্গীতের মহাযুদ্ধ’। একদিকে তিনি বিধায়ক, অন্যদিকে বিনোদনে ফেরা। তবে এটাকে রিয়েলিটি শো হিসাবে দেখতে নারাজ রাজ। জানালেন, ‘এটাকে রিয়েলিটি শো হিসাবে দেখো না, এখানে বড় আকর্ষণ সঞ্চালক মীর। যে রেডিয়োতে গান শুনিয়েছে এতদিন সেই মীর এবার টিভিতে গান দেখাবে। আর যারা পার্টিসিপেট করছে তারা প্রত্যেকেই কোনও না কোনও শো-তে নাম করেছিল। কিন্তু তারপর এখন তাদের কথা শোনা যায় না। এখন তারা কী করছে, কেউ জানি না। আমরা তাদের আবার নিয়ে আসছি। আমি সবসময়ই নতুনদের সঙ্গে কাজ করতে ভালবাসি। এবং হতেই পারে, এদের মধ্যে থেকে অনেক প্লেব্যাক সিঙ্গারের জন্ম হবে বাংলাতে।’ ‘সঙ্গীতের মহাযুদ্ধ’-র প্রতিটা এপিসোডে একটা গল্প থাকবে, ইমোশন থাকবে, জানালেন পরিচালক। গানের রিয়েলিটি শো-তে সঞ্চালক হিসাবে যিশু এবং আবির খুবই সফল। মীরকে কীভাবে নেবে দর্শক? ডিফেন্সিভ পরিচালক জানালেন, ‘হ্যাঁ, যিশু এবং আবিরকে দেখে দর্শক অভ্যস্ত, হয়তো একটা একঘেয়েমিও আছে। আর এক্ষেত্রে মীর গানের অনুষ্ঠানের সঞ্চালক হিসাবে একেবারে ফ্রেশ ফেস! একটা নতুন কিছু পাবে দর্শক।’
View this post on Instagram
একদিকে বিধায়ক, অন্যদিকে বাবা, তারপর পরিচালনা– এত কিছু সামলাবেন কী করে? স্পষ্টই উত্তর দিলেন, ‘আমি কাজপাগল মানুষ, চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে ছয় ঘণ্টা ঘুমোই। আর বাকি পুরোটাই কাজের মধ্যে থাকতে ভালবাসি, তার মধ্যে পরিবারকে সময় দিই। এনজয় করলে কোনও কিছুই কঠিন নয়। সকালে কলকাতার কাজ, বিকেলে বারাকপুরে, কিংবা উল্টোটা।’ রাজ আশ্বাস দিলেন, আরও নতুন প্রোজেক্ট আসবে। আর ‘হাবজি গাবজি’ এবং ‘ধর্মযুদ্ধ’ মুক্তি পেলে তারপর সিনেমার কথা ভাববেন। বুদ্ধদেব গুহর উপন্যাস ‘বাবলি’র স্বত্ব কিনেছেন তিনি। আবির এবং শুভশ্রীকে কাস্ট করে ছবি তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে, জানালেন তিনি।
সোশ্যাল মিডিয়াতে রাজ-শুভশ্রীর উপস্থিতি ভালমতোই রয়েছে। এবং নানা কারণে ট্রোলড হয়েছেন দু’জনেই। কখনও শুভশ্রীকে বডি শেমিং করা হয়েছে, তো কখনও রাজ চক্রবর্তীকে বিধায়ক হিসাবে তাঁর কাজ নিয়ে খোঁচা মারা হয়েছে। কীভাবে সামলান? উত্তরে রাজ জানালেন, “আসলে আমার কোনও ইগো নেই। কেউ আমাকে ট্রোল করলে সেটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। গায়ে মাখি না। কেউ ট্রোল করলে, আমি তার মানসিক অবস্থা, পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করি। সাহায্য চেয়ে বাচ্চার ছবি দেওয়ায় আমাকে ট্রোল করে বলেছিল, ‘তোমার এত পয়সা আছে, বউয়ের এত গয়না আছে, সেগুলো বিক্রি করতে পার না’? আমি কী সাহায্য করব, বা করেছি সেটা তো আমার ব্যাপার, কিন্তু আমার বউয়ের গয়না নিয়ে যে বলছে তার ফ্রাসট্রেশন কতটা সেটা বোঝা যায়। আবার শুভাকাঙক্ষীর সংখ্যাও কম নয়। এটা সোশ্যাল মিডিয়ার পার্ট।” আপনি তো ফোন নম্বরও শেয়ার করেছিলেন? “হ্যাঁ, বেশিরভাগ ফোন এসেছিল কাজ করতে চেয়ে, অভিনয়ের সুযোগ চেয়ে। খারাপ ফোন তেমন আসেনি। আর যারা ট্রোল করে, তাদের জীবনে নিশ্চয়ই অসহায়তা আছে। না হলে আমার বাচ্চাকে নিয়েও লোকে এত কথা বলে! একটা বাচ্চার ওপর কার রাগ থাকতে পারে? তাকে জাজ করব আমি! সেটা হতে পারে না।”
View this post on Instagram
ইউভানের প্রসঙ্গ উঠল বলে জানতে চাইছি, অনেক সেলিব্রিটিই নিজেদের বাচ্চাদের ছবি সোশ্যাল মিডিয়াতে দেন না। প্রোটেক্ট করেন। কিন্তু আপনারা ব্যতিক্রম। “আমরা খুব মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা দু’জন মানুষ। আমাদের মানসিকতাও আর পাঁচটা মধ্যবিত্ত মানুষের মতোই। আনন্দের কোনও কিছু ঘটলে আমরা নিজেদের সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করি। এতে আমি দোষের কিছু দেখি না। আমি অন্য কারও মতো করে তো চলতে পারব না। আমি আমার মতো করেই চলব”, স্পষ্ট জানালেন রাজ। তবে এই মুহূর্তে তাঁর পাখির চোখ ‘সঙ্গীতের মহাযুদ্ধ’-এ। ষোলো জন প্রতিযোগী এবং চারজন বিচারক। রাশিদ খান, জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, অভিজিৎ ও লোপামুদ্রা বিচারকের আসনে থাকবেন, জানা গিয়েছে। অগাস্টের শেষ সপ্তাহে শো-টি টেলিকাস্ট হওয়ার কথা। রাজ চক্রবর্তীর কাছে জানতে চাইলাম, তিনি শো-তে অ্যাপিয়ার করবেন কি না! ‘আমি অ্যাপিয়ার করাই, অ্যাপিয়ার করি না। আমি ব্যাক স্টেজ হিরো’, সাফ জবাব রাজের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.