অভিরূপ দাস: আজ একজন তো কাল অন্য কেউ। বান্ধবী বদলে গিয়েছে শার্টের মতো। এমনকী এক সম্পর্কে থাকাকালীনও এই বহুগামিতার অভ্যেস তিলমাত্র কমেনি। বস্তুতই একের পর এক নারীসঙ্গের অদম্য লিপ্সাই সাগ্নিক চক্রবর্তীকে সর্বনাশের অতলে ঠেলে দিয়েছে বলে মনোবিদদের পর্যবেক্ষণ। তাঁদের বক্তব্য, খোলামকুচির মতো টাকা ওড়ানো আর নারীদের আশপাশে মৌমাছির মতো ভনভন করতে করতে বাস্তব জীবন থেকে দূরে সরে গিয়েছিল হাওড়ার বছর ছাব্বিশের যুবক। আখেড়ে মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে এলেও আপাতত তাই তার ঠাঁই হয়েছে শ্রীঘরে।
বান্ধবী টেলি অভিনেত্রী পল্লবী দে’র (Pallavi Dey) অকালমৃত্যুর পর সামনে এসেছে সাগ্নিকের বেআব্রু জীবন। পুলিশি তদন্তে উঠে এসছে তাঁর বেআইনি কলসেন্টার চালিয়ে হিসাব বহির্ভূত টাকা আয়ের ঘটনা। সেখান থেকেই ৫০ লক্ষ টাকা দামের গাড়ি, হাতে কয়েক লক্ষ টাকার আংটি, শহরের নামীদামি নাইট ক্লাবে অহরহ আনাগোনা। তদন্তকারী অফিসারদের ধারণা, নিজের ভোগবিলাসের জন্য তো বটেই, এসব দেখিয়েই বান্ধবীদের আকৃষ্ট করতেন সাগ্নিক।
তাদের দিয়েই মেটাতেন নিজের অনিয়ন্ত্রিত যৌন লালসা। ক’দিন যেতে না যেতেই আর ভাল লাগত না পুরনো বান্ধবীকে। ফের নতুন বান্ধবী চাই। মনোবিদরা বলছেন, বন্ধুত্ব করা নয়, এ ধরনের সম্পর্ক স্থাপনের মূল উদ্দেশ্য স্রেফ শারীরিক খিদে মেটানো। যে ধারণায় সিলমোহর দিচ্ছে সাগ্নিক-পল্লবীর গড়ফার ফ্ল্যাটের পরিচারিকা। জিজ্ঞাসাবাদে পরিচারিকা জানিয়েছেন, “বউদি বেরিয়ে গেলেই অন্য নারীকে নিয়ে ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিত সাগ্নিক।” এই অমোঘ যৌন লিপ্সাকে বিকৃত বলেই জানিয়েছেন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের মনোরোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. সৃজিত ঘোষ। তাঁর কথায়, “এ ধরনের ছেলেরা একধরনের মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত। নারী দেখলেই নিজেকে আটকে রাখতে পারে না। ইমপালস বা আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। চোখমুখের ভাষাই বদলে যায়।”
তবে এই যে অগুনতি সম্পর্ক তার কোনওটাই সাগ্নিকের মনে দাগ কাটেনি। উঠতি অভিনেত্রী পল্লবী দে’j মৃত্যর পর সামনে এসছে আরও এক মেয়ের গল্প। সৌমী মণ্ডল। তাঁর মা দাবি করেছেন, সেই মেয়ের সঙ্গেই প্রথম প্রেম ছিল সাগ্নিকের। বহু বছর আগে আত্মহত্যা করেছে সৌমী। তাতেও বিন্দুমাত্র হেলদোল লক্ষ্য করা যায়নি সাগ্নিকের। ফের সে বেরিয়ে পড়েছে নতুন বান্ধবী খুঁজতে। মনোবিদরা বলছেন, এই ধরনের ছেলেরা যে সম্পর্কগুলো পাতায় তাতে আদৌ কোনও গভীরতা থাকে না। পাখির পালকের চেয়েও তা হালকা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.