সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একের পর এক ছবি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পাচ্ছে। ফলে সিনেমাহল, মাল্টিপ্লেক্স সংস্থাগুলির সঙ্গে জড়িত হাজার হাজার কর্মীরা যে অচিরেই দুর্দিন দেখতে চলেছে, সেই আশঙ্কাই গ্রাস করেছে আইনক্স, পিভিআরের মতো কোম্পানিগুলিকে। পারিশ্রমিক কমে যাওয়া, কর্মী ছাঁটাইও হতে পারে! যার জেরে ইতিমধ্যেই তরজা শুরু হয়েছে প্রোডিউসার্স গিল্ড ও মাল্টিপ্লেক্স সংস্থার মাঝে।
অমিতাভ-আয়ুষ্মানের ‘গুলাবো সিতাবো’র পর এবার বিদ্যা বালান অভিনীত ‘শকুন্তলা দেবী’ও মুক্তি পাচ্ছে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে। এই দু’টি হিন্দি ছবি ছাড়াও তামিল, তেলুগু, কন্নড় ও মালয়ালম ভাষায় আরও চারটি ছবি মুক্তি পাচ্ছে আমাজন প্রাইমে। অর্থাৎ বলিউডের পাশাপাশি আঞ্চলিক ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিগুলিও যে অনলাইন মুক্তির দিকে ঝুঁকছে, তা স্পষ্ট! পাশাপাশি অক্ষয় কুমার অভিনীত ‘লক্ষ্মী বম্ব’, রাজকুমার রাও অভিনীত ‘লুডো’ এবং জাহ্নবী কাপুরের ‘গুঞ্জন সাক্সেনা’-সহ আরও বেশ কিছু ছবিরও ওয়েব প্ল্যাটফর্মে মুক্তির জল্পনা চলছে। আর দর্শকদের কাছে বহু প্রতীক্ষীত এই হিন্দি সিনেমাগুলির মুক্তি ওয়েব প্ল্যাটফর্মে হওয়ায় প্রযোজক-পরিচালকদের উদ্দেশে অসন্তোষ প্রকাশ করে এক বিবৃতি জারি করেছে আইনক্স। তাতে সুর চড়িয়েছে পিভিআর, কার্নিভ্যাল সিনেমার মতো মাল্টিপ্লেক্স সংস্থাগুলিও। সেই প্রেক্ষিতেই প্রযোজক-পরিচালকদের পাশে দাঁড়িয়ে পালটা দিতে দেরি করেনি বলিউড প্রোডিউসার্স গিল্ড।
আইনক্স-পিভিআরের বক্তব্য, “হিন্দি সিনেমাগুলি একের পর এক যদি ওটিটি প্ল্যাটফর্মে রিলিজ করতে থাকে, তাহলে এগজিবিটর ও ডিস্ট্রিবিউটার মহল চরম ক্ষতির মুখে পড়বে।” পাশাপাশি, লকডাউন পরবর্তী সময়ে সিনেমা হল, মাল্টিপ্লেক্সগুলি যে জোর ধাক্কা খাবে, সেই আশঙ্কা থেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল আইনক্স-পিভিআরের মতো সংস্থাগুলি। পিভিআর পিকচার্সের সিইও কমল জ্ঞানচন্দানির কথায়, “কয়েক জন প্রযোজকের ডিজিটাল রিলিজের ঘোষণায় আমরা ভীষণই অবাক হলাম। তাঁদের কাছে আমাদের আরজি, যত দিন না সিনেমা হল খুলছে, তাঁরা যেন ছবির মুক্তি স্থগিত রাখেন।” একই সুর শোনা গেল কার্নিভ্যাল সিনেমার সিইও মোহন উমরোটকরের গলাতেও, ‘‘হিন্দি ছবির অনলাইন রিলিজ নিয়ে আমরাও হতাশ। তবে এটাকে এখনই ট্রেন্ড বলতে পারছি না!’’
অনলাইন মুক্তি প্রসঙ্গে আইনক্স-পিভিআরের এমন প্রতিক্রিয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বলিউড প্রোডিউসার্স গিল্ডও নেমে পড়েছে ময়দানে। গিল্ডের পক্ষ থেকে এক প্রেস বিবৃতি জারি করে তাঁরাও তাঁদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছেন। গিল্ডের বক্তব্য, “লকডাউনে ক্ষতির আশঙ্কায় দামি সেট ভেঙে ফেলা হচ্ছে (বনশালির গঙ্গুবাইয়ের সেটই গত মাসে ভেঙে ফেলা হয়েছে)। শুটিং বন্ধ অথচ ব্যাংকে সুদের হার প্রায় পাহাড়প্রমাণ। সিনেমা হল খুললেও সেখানকার পরিস্থিতি হলফ করে বলা যায় না। বিদেশে ছবির ব্যবসাও অনিশ্চিত। সিনেমার ব্যবসায়িক দিকের কথা ভেবেই প্রযোজক-পরিচালকরা ওটিটি প্ল্যাটফর্মে মুক্তির সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।”
প্রসঙ্গত, এই মুহূর্তে বলিউড-সহ বাংলা, দক্ষিণী ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির একাধিক ছবি মুক্তির অপেক্ষায়। অতঃপর করোনা বিদায় হওয়ায় পর সিনেমাহল-মাল্টিপ্লেক্সগুলি খুললেই যে একের পর এক ছবি মু্ক্তির লাইন লেগে যাবে, তা আন্দাজ করাই যায়। একই সময়ে মুক্তি পাওয়া অপেক্ষাকৃত বেশি বাজেটের সিনেমার জন্য বক্স অফিসে ধাক্কা খেতে পারে স্বল্প বাজেটের ছবিগুলি, সেই আশঙ্কাও রয়েছে। প্রথমত, করোনার জেরে লকডাউনের লোকসান, দ্বিতীয়ত লকডাউন পরবর্তী সময়েও হল পাওয়া নিয়ে দৌড়োদৌড়ি হওয়ার সম্ভাবনা, যাবতীয় বিষয় মাথায় রেখেই বুদ্ধি-বিবেচনা করে অনলাইনে ছবির রিলিজের দিকে ঝুঁকছেন নির্মাতারা, মন প্রোডিউসার্স গিল্ডের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.