আকাশ মিশ্র: ভূতে তাঁর প্রচণ্ড ভয়। একা থাকতে হলেই গায়ে জ্বর আসে। কিন্তু জনপ্রিয় ইউটিউবার প্রেরণা দাসের কাছে আরও ভয়ের সোশাল মিডিয়ায় ঘাপটি মেরে বসে থাকা ট্রোলাররা। শাঁকচুন্নি, ব্রহ্মদৈত্য়, হাজার রকম পেত্নিদের তুলনায়, এই ট্রোলাররাই প্রেরণাকে মারাত্মক ভয় পাওয়াতে ওস্তাদ। সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালে জীবনের ভূত সম্পর্কে বলতে গিয়ে, সেই ট্রোলারদের কথাই মনে করিয়ে দিলেন প্রেরণা।
প্রেরণার কথায়, ”আমরা যাঁরা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে কাজ করছি প্রতিদিন, তাঁদের জীবনের সবচেয়ে বড় ভূত হল ট্রোলাররা। অনেক সময়ই এরকম হয় যে, আমরা লোককে হাসাচ্ছি, কিন্ত আমরা নিজেরা ভিতর থেকে ভালো নেই। দিনের পর দিন আমরাও মানসিক চাপের মধ্যে দিয়ে যাই। আমার জীবনেও এমন সময় এসেছিল, যখন আমি মারাত্মক ট্রোলের মুখে পড়ে, মানসিক দিক থেকে ভেঙে পড়েছিলাম। কিন্তু এটা মাথায় ছিল, আমি যে সময়ের মধ্যে রয়েছি, সেখানে অনেক প্রতিযোগিতা। এর মধ্যে যদি আমি নিজেকে থামিয়ে দিই, তাহলে একবছর ধরে যেটা করছি, সেটা বিফলে যাবে। তাই শত অসুবিধা, কষ্ট হলেও, কাজটা থামাতে পারিনি। মানসিক চাপ নিয়েই, অনবরত ট্রোলিংয়ের মুখে পড়েছি। কিন্তু কাজ করে গিয়েছি।
প্রেরণা আরও বলেন, ”আমার মনে আছে, আমাকে আইপিএলে ধারাভাষ্যর জন্য ডাকা হয়েছিল। তবে শুধু আমি নয়, অন্য কনটেন্ট ক্রিয়েটারও সেখানে ছিলেন। আমি খুব খুশি হয়েছিলাম এমন অফার পেয়ে। কেননা,এটা আমার জন্য খুবই নতুন অভিজ্ঞতা ছিল। কিন্তু আমি যখন ওই ছবি সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করি, তখন মারাত্মকভাবে ট্রোলড হই। বহু নেটিজেন, খুব খারাপভাবে আক্রমণ করেছিল আমাকে। আমি খেলার কী বুঝি! কেন গিয়েছি? এটা আমার প্রাপ্য জায়গা নয়। আরও নানা রকম কটূক্তি। এই ঘটনা মারাত্মকভাবে প্রভাব ফেলেছিল আমার মনে। সোশাল মিডিয়া করতেই ভয় পেতাম। প্রচণ্ডে ভেঙে পড়েছিলাম। মানুষ কতটা খারাপ হলে, এরকমভাবে আক্রমণ করতে পারে! বার বার ভাবতাম। সুতরাং এরকম ধরনের মানুষ বা ট্রোলরাই আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ভূত।”
View this post on Instagram
তবে ট্রোলার ভূতের বাইরেও, ভৌতিক অভিজ্ঞতাও রয়েছে প্রেরণার। নিজের বাড়িতেই টের পেয়েছিলেন ভূতের উপস্থিতি।
প্রেরণা বলেন, ”আমি প্রচণ্ড ভূতে ভয় পাই। কাজের সূত্রে এখন আমাকে একা থাকতে হয়, তাই আমি চেষ্টা করি, আমার বন্ধু-বান্ধব যেন একটু বেশিদিন ধরে আমার সঙ্গে থাকে। চাইলে তাঁরা এক সপ্তাহ, একমাস থেকে যাক। আমি কোনও মতেই একা থাকব না। একটা ঘটনা এখনও মনে আছে। আমাদের যখন বাড়ি তৈরি হচ্ছিল, তখন বাড়ির ঢালাই করার সময় বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে এক মিস্ত্রি মারা যায়। খুবও দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছিল। এর পরই, একদিন রাতে আমি আমার ঘরে পড়াশুনো করছিলাম, আর পাশের ঘরে বোন ছিল। মা-বাবা বাড়িতে ছিলেন না। হঠাৎ মনে হল আমার দরজার সামনে দিয়ে কে একজন যেন চলে গেল! আমি প্রথমে ভেবেছিলাম, বোন হয়তো মজা করছে। কিন্তু পরে দরজার সামনে গিয়ে দেখি, কেউ ছিল না। খুব ভয় পেয়েছিলাম। এই ঘটনার পরই বাড়িতে পুজো হয়, তার পর আর কোনও সমস্য়া হয়নি।
তবে এই ভৌতিক ঘটনার থেকেও প্রেরণার মনে বেশি দাগ কেটেছে ট্রোলার ভূত। আর তাই ভূতচতুর্দশীর প্রাক্কালে প্রেরণার একটাই প্রার্থনা, দূরে থাক ট্রোলার ভূত!
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.