সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কবীর সুমন বনাম দেব-অনিকেত বিতর্কে টলিপাড়া এখনও সরগরম। দিন দুয়েক আগেই পরিচালক প্রতীম ডি গুপ্তর নতুন ফেসবুক পোস্ট সে বিতর্ককে আরও খানিক উসকে দিয়েছিল। তাতে সায় দিয়েছিলেন আরেক পরিচালক অঞ্জন দত্তও। একের পর এক পরিচালক যখন ময়দানে নেমেছেন নিজস্ব শিল্পীসত্তার চিরকূট নিয়ে, তখন এই তালিকায় শামিল হলেন পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়ও।
সোমবারই নিজের ফেসবুকে বছর কয়েক পুরনো মেল-এর বেশ কটা স্ক্রিনশট শেয়ার করেন সৃজিত। মেল-এর তারিখ ১৫ অক্টোবর, ২০০৮। ‘বাইশে শ্রাবণ’ মুক্তির বছর তিনেক আগের কথা। ‘বিপ্লবদা’ বলে কারও উদ্দেশে করা সেই মেল। কিন্তু প্রায় দশ বছর পর সেই মেল-এর স্ক্রিনশট দেওয়ার কী অর্থ? কারণটা, প্রতীমের সেই দিনকার ফেসবুক পোস্ট। যেখানে ছিল তাঁর আক্ষেপের সুর। নাম না করেও পরোক্ষভাবে কারও প্রতি অভিমান-অভিযোগের কথা। প্রসঙ্গত, বছর দশেক আগে প্রতীম একইভাবে ‘বাইশে শ্রাবণ’-এর ভাবনা চুরির তোপ দেগেছিলেন সৃজিতের দিকে। সেই বিষয়টা যেন এর মাঝে ফের পুনরুত্থাপন না হয়, তা খোলসা করার জন্যই হয়তো ছবি মুক্তির এত বছর পরে সৃজিতের এই ফেসবুক পোস্ট।
[আরও পড়ুন: ভাবনা চুরির অভিযোগে ফেসবুকে সরব প্রতিম, নাম না করে তোপ কৌশিককে]
‘বাইশে শ্রাবণ’ ছবি মুক্তির আগেও যে সৃজিত এই একই ভাবনা নিয়ে ছোটপর্দায় একটা থ্রিলার টেলিফিল্ম করবেন বলে ভেবেছিলেন, সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে সৃজিতের সাম্প্রতিক ফেসবুক পোস্ট। ইন্ডাস্ট্রির কারও সঙ্গে তখন তাঁর আলাপ ছিল না। কারণ, কাজের সূত্রে সৃজিত তখন থাকতেন বেঙ্গালুরুতে। পোস্টে একথাও জানিয়েছেন তিনি। অতএব, তিনি যে প্রতীমের ভাবনা চুরি করে ‘বাইশে শ্রাবণ’ করেননি, তা জনসমক্ষে প্রমাণ করতেই এই পোস্ট শেয়ার করেছেন সৃজিত।
সৃজিতের এই পোস্ট প্রসঙ্গে প্রতীমকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি জানান, “অনেকেই নিজের চিত্রনাট্য কিংবা কাহিনি চুরির কথা আমার কাছে এসে বলেন। আমার সঙ্গে যা যা আজ অবধি ঘটেছে, এগুলো ওরা জানে বলেই হয়তো আমার সঙ্গে শেয়ার করেন। ওদের সমস্যার কোনও সমাধান আমার কাছে নেই। কিন্তু, আমি মনে করি সময় থাকতে এগুলোর প্রতিবাদ করা উচিত। নাহলে পরবর্তীতে কখনও আমারও মনে হতে পারে, কেন যথাযথ সময়ে এগুলোর প্রতিবাদ করলাম না! তাই যা ঘটছে, তা সামনে রেখে প্রতিবাদ কর। এটাই আমার পয়েন্ট! আর এই উপদেশটা আমাকে দিয়েছেন পরিচালক অনুরাগ কাশ্যপ খোদ।”
অন্যদিকে সৃজিত জানিয়েছেন, “তিন বছর আগেই প্রতীমকে এই মেলটা আমি ফরোয়ার্ড করেছিলাম। ২০১১-তে ওর আর আমার মধ্যে ‘বাইশে শ্রাবণ’ নিয়ে সমস্যা হয়েছিল। পরে, মৈনাকের মধ্যস্থতায় প্রতীম আর আমি একসঙ্গে বসে এটা নিয়ে আলোচনা করি। ওকে মেলগুলো দেখাই। সমস্যাটা তখনই মিটে গিয়েছিল। আমাদের একসঙ্গে বসে আলোচনার পরিকল্পনাটা আসলে কিন্তু মৈনাকের ছিল। আর সোমবার সেই মেল-এর স্ক্রিনশটই আমি শেয়ার করেছি।”
প্রসঙ্গত, ‘জ্যেষ্ঠপুত্র’ ঘোষণার পরই প্রতীম একাধিকবার দাবি তুলেছিলেন এই চিত্রনাট্য তাঁর এবং ঋতুপর্ণ ঘোষের মস্তিষ্কপ্রসূত ‘অন্য নায়ক’-এর ভাবনা সঙ্গে হুবহু মিলে গিয়েছে। পরে জেনেছিলেন, ঋতুপর্ণ ঘোষের ভাই ইন্দ্রনীল তাঁর সঙ্গে আলোচনা না করেই এ ছবি করার অনুমতি দিয়েছিলেন কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়কে।
[আরও পড়ুন: কঠিন বাস্তবের প্রতিচ্ছবি রূপোলি পর্দায়, জুটি বাঁধলেন সোহম-তনুশ্রী]
প্রতীম এও বলেন, “সৃজিত আর তাঁর ঝামেলা অনেকদিন আগেই মিটে গিয়েছে। সম্প্রতি, ‘জ্যেষ্ঠপুত্র’ প্রসঙ্গে সেই বছর আটেক আগের কথা আবার ফিরে আসে। সৃজিতদা আমার ফেসবুকেও নেই। তাই জানি না পোস্টে কী লিখেছেন। তবে, ‘জ্যেষ্ঠপুত্র’ প্রসঙ্গে বলব, এর সঙ্গে ঋতুদা যদি জড়িয়ে না থাকতেন তাহলে আমি কোনও কাথাই বাড়াতাম না!”
তবে, এত বিতর্কের মাঝেও আশার কথা সৃজিত মুখোপাধ্যায় এবং প্রতীম ‘আহারে মন’-এর পর ফের একসঙ্গে কাজ করছেন প্রতীমের পরবর্তী ছবি ‘ইঙ্ক’-এ। আর হ্যাঁ, সরাসরি তিনি সৃজিতকে ক্লিনচিট দিয়েছেন!
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.