সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কলকাতা ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের (কেআইআইএফ) প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরছেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়? বেশ কয়েকদিন ধরেই টলিপাড়ার অন্দরে শোনা যাচ্ছে এমন গুঞ্জন। সম্প্রতি ইডির দপ্তর থেকে ডাক পড়েছিল তাঁর। শোনা যাচ্ছে, তিনি নাকি মুকুল রায়ের হাত ধরে গেরুয়া শিবিরেও নাম লেখাবেন! কেননা সম্প্রতি তাঁর বাবা বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়ও বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। উপরন্তু টলিপাড়ায় বইছে পরিবর্তনের হাওয়া। সবমিলিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। এপ্রসঙ্গে কী বলছেন টলিউড ইন্ডাস্ট্রির ‘মহাতারকা’ প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়?
“বিমানে সফরসঙ্গী হিসেবে কেউ থাকলে, তার সঙ্গে কথা বলা মানেই তো এই নয় যে আমি কোনও রাজনৈতিক দলে নাম লেখাচ্ছি!”
গতবছরই আনুষ্ঠানিকভাবে কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছিল প্রসেনজিতের হাতে। এছাড়া বিগত ১০ বছর ধরে চলচ্চিত্র উৎসবের কমিটির সদস্য হওয়ার সুবাদে নিয়মিত মিটিংয়ে উপস্থিতও থেকেছেন অভিনেতা। কিন্তু ইদানিং কমিটির কোনও মিটিংয়ে তাঁকে দেখা যাচ্ছে না। এপ্রসঙ্গে প্রসেনজিতের বক্তব্য, কাজ নিয়ে ব্যস্ততার দরুন মিটিংয়েই উপস্থিত থাকতে পারছেন না। নিজস্ব প্রযোজনা সংস্থার ব্যানারেও একগুচ্ছ নতুন কাজ নিয়ে তিনি ব্যস্ত। এছাড়াও প্রসেনজিৎ এবং অর্পিতা তাঁদের একমাত্র সন্তান মিশুককে বিদেশে পড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ভিসার যাবতীয় কাজ এখনও চলছে। কারণ, এমাস অর্থাৎ আগস্টের শেষেই মিশুক ভরতি হবে। সেসব নিয়েই এখন যারপরনাই ব্যস্ত তিনি। যারজন্য অন্যান্য সব কাজের শিডিউলও পরিবর্তন করতে হচ্ছে তাঁকে। এসবের মাঝে মিটিংয়ে উপস্থিত থাকা প্রায় অসম্ভবপর হয়ে উঠেছে।
সম্প্রতি অরূপ এবং স্বরূপ বিশ্বাস একটি বৈঠকে আর্টিস্ট ফোরামকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। তবে ফোরাম বৈঠকের আমন্ত্রণ নাকচ করে দেয়। যেই সংগঠনের মাথা কিনা প্রসেনজিৎ। এছাড়া দিন কয়েক আগে দিল্লি যাওয়ার সময় বিমানে মুকুলের সঙ্গে কথা হয়েছে তাঁর। জল্পনা সেই থেকেই তুঙ্গে। এক্ষেত্রে অভিনেতা জানান, দু’জনেই বিজনেস ক্লাসে যাচ্ছিলেন। আর তাছাড়া সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গেই সদ্ভাব বজায় রেখে চলেন তিনি। “বিমানে সফরসঙ্গী হিসেবে কেউ থাকলে, তার সঙ্গে কথা বলা মানেই তো এই নয় যে আমি কোনও রাজনৈতিক দলে নাম লেখাচ্ছি!” এমনটাই মত অভিনেতার।
“তবে হ্যাঁ, আমাকে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরাতে হয়, তাহলে সম্মানের সঙ্গে সরানো হোক।”
ইন্ডাস্ট্রির হাল ধরতে এবার জিৎ, দেব, সোহম সবাই সমানভাবে এগিয়ে আসুক চান প্রসেনজিৎ। এপ্রসঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “মিথ্যে বলব না, জিৎ নিজে থেকে অর্থনৈতিক সাহায্য করেছে ইন্ডাস্ট্রির অনেককে। দেব যদিও একটু লজ্জা পায়। আর সোহম তো এই ইন্ডাস্ট্রিতেই বড় হল। আমি ওদের সঙ্গে রয়েছি, থাকবও। তবে ওদের এগিয়ে আসতে হবে। কারণ আর্টিস্ট ফোরামকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমি একটা নতুন দল গড়তে চাই।”
আর কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের চেয়ারম্যান পদে কি তিনি সত্যিই থাকছেন না? এপ্রসঙ্গে তাঁর সাফ উত্তর, “কলকাতা ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল থেকে আমায় কেউ আলাদা করতে পারবে না। আমি ১০ বছর ধরে কমিটির সদস্য ছিলাম। বস্তুত, আমিই সাজেস্ট করেছিলাম যে কেআইআইএফ-এর ২৫তম বর্ষে গৌতমদা (ঘোষ), বাবুদার (সন্দীপ রায়) মতো ইন্ডাস্ট্রির অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা মুখ হোন। যা দরকার আমি সব কাজে সাহায্য করব। তবে হ্যাঁ, আমাকে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরাতে হয়, তাহলে সম্মানের সঙ্গে সরানো হোক।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.