সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শুটিং নেই, চারপাশে ‘লাইট, সাউন্ড, ক্যামেরা, অ্যাকশন’ বলে সেই চেনা পরিচিত হাঁকডাকগুলোও নেই। স্টুডিওপাড়ার অলিগলিতে এখন আর ওই দোতলা, বিশাল ভ্যানিটি ভ্যানগুলো এসে দাঁড়ায় না। কোনও সেলিব্রিটি ঢোকার বা বেরনোর পথে এখন আর কোনও শোরগোল হয় না। পাপারাৎজিদেরও দেখা মেলে না আর। আর হবেও বা কী করে! করোনা আবহে দেশজুড়ে লকডাউন চলছে যে! কিন্তু এই কঠিন সময় শেষে আবার যখন স্বাভাবিকতা ফিরবে টিনসেল টাউনে, আবার যখন ফিরবে রোজকার ব্যস্ততা, আবার হবে শুটিং, তখনও কী পরিস্থিতি সেই আগের মতো হতে পারবে? দেশের অর্থনীতির যে টালমাটাল দশা, তাতে কী আবার বা আরও স্পষ্ট করে বলতে গেলে, এত দ্রুত সম্ভব হবে সেই বিগ বাজেটের সিনেমা ফের তৈরি করা? সেই নয়নাভিরাম সেটের পিছনে গাদা গাদা টাকা খরচ করা, তারকা অভিনেতা-অভিনেত্রীদের পারিশ্রমিক বাবদ কোটি কোটি টাকার দেওয়া, লকডাউন-উত্তর আর্থিক বিপর্যয় সামলে ওঠা কি সত্যিই সম্ভব হবে? উত্তরটা বোধ হয় ‘না’। অন্তত তেমনটাই মনে করছেন বলিউডের বিখ্যাত ট্রেড অ্যানালিস্ট-এক্সপার্ট তরণ আদর্শ, কোমল নাহাতা এবং চলচ্চিত্র পরিবেশক অক্ষয় রাঠি।
খ্যাতনামা সিনে বাণিজ্য বিশ্লেষকদের প্রত্যেকেই একটা বিষয়ে একমত। আর তা হল, বড় তারকাদের আর আগের মতো বিশাল পারিশ্রমিক দেওয়া যাবে না। তারকাদের পারিশ্রমিকে কাটছাঁট করাটা অনিবার্য। ইন্ডাস্ট্রি সূত্রের খবর, বরুণ ধাওয়ান, রণবীর সিংয়ের মতো অভিনেতারা ছবিপিছু অন্তত ২৫ থেকে ৩০ কোটি টাকা পারিশ্রমিক নেন। আর অভিনেত্রীদের মধ্যে আলিয়া ভাট, দীপিকা পাড়ুকোনরা নেন ৫ থেকে ১২ কোটি টাকা। কিন্তু লকডাউন পরবর্তী সময়ে আর্থিক ধাক্কা সামলে ওঠার জন্য এই প্রথম সারির তারকাদের বিপুল পারিশ্রমিকে কোপ পড়াটা অবধারিত।
তরণ আদর্শের মতে, “পে-কাট তো করতেই হবে। কারণ, ছবি বানানোটা মিলিত উদ্যোগ। কোনও প্রকল্পে নামলে খরচের হিসাব করেই সকলে নামেন। আর এখন যখন অর্থনীতির এই অবস্থা, তখন প্রযোজকদের অবস্থাও তারকাদের বুঝতে হবে।” আবার কোমল নাহাতার কথায়, “পারিশ্রমিকে কাটছাঁট করা ছাড়া আর তো কোনও বিকল্প নেই। কারণ তা না হলে ছবি তো মুক্তি পাবেই না। সিনে-ব্যবসা আরও লাটে উঠবে।”
অন্যদিকে অক্ষয় রাঠি বলছেন, “তারকারা যদি চান, বিনোদন জগতের চাকা চলতে থাকুক, তাহলে এটা করতেই হবে। অনেক ছবি এখনও মুক্তির আলো দেখেনি। অনেকের অনেক টাকাই আটকে রয়েছে। আমার মতে, কয়েক বছর লেগে যাবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে। তাই অভিনেতারা যদি চান, এই অবস্থাতেও নতুন ছবি প্রেক্ষাগৃহগুলিতে মুক্তি পাক, তাহলে এটুকু তাঁদের করতেই হবে।” পাশাপাশি রাঠির যুক্তি, “দেখনদারির যুগ এখন শেষ। পরিস্থিতি বুঝে এগোতে হবে। তারকাদের হেয়ারড্রেসার, ড্রাইভার, মেকআপ ম্যান, বয়-সহ অনেক রকম খরচ প্রযোজকদের সামলাতে হয়। এর সঙ্গে যুক্ত হয় তারকাদের পাহাড়প্রমাণ ফি। কাজেই বর্তমান পরিস্থিতে বিচার করে অভিনেতা-অভিনেত্রীদের অন্তত নিজে থেকেই পারিশ্রমিক কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.