স্টাফ রিপোর্টার: ভয়ংকর মাথা গরম তাঁর। পান থেকে চুন খসলেই ছুঁড়ে মারতেন জলের গ্লাস। চড় থাপ্পড় দিয়ে দিতেন কথায় কথায়। সাগ্নিক চক্রবর্তীর এই বদমেজাজি স্বভাবের জন্য তাঁর সঙ্গে বড় একটা কথা বলতেন না তাঁর বাড়ির লোকেরাও। কিন্তু ছেলে বিয়ে করে পল্লবীর সঙ্গে থাকুক, সেটাই চেয়েছিলেন বাবা-মাও। কিন্তু তা না হয়নি। তার কারণ কী সাগ্নিকের আগের বিয়ে? শোনা যাচ্ছে, সাগ্নিক দাবি করতেন, ডিভোর্সের মামলা চলছে। খুব দ্রুতই তিনি তা পেয়ে যাবেন। এই মুহূর্তে ওই ম্যারেজ রেজিস্ট্রি সার্টিফিকেটই খুঁজছে পুলিশ।
হাওড়ার (Howrah) জগাছা থানা এলাকার বিবেকভিল এলাকার বাসিন্দা বছর ছাব্বিশের সাগ্নিক, বিগত কয়েক বছর ধরে প্রেমিকা পল্লবী দে’র (Pallavi Dey) সঙ্গে দক্ষিণ শহরতলির গড়ফার ফ্ল্যাটেই লিভ ইন করতেন। এই ‘লিভ ইন’ এ মত ছিল না সাগ্নিকের মা-বাবার। তাঁরা বলেছিলেন, এভাবে না থেকে বিয়ে করে নিতে। মা সন্ধ্যা চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ওরা এখনকার দিনের ছেলে। ওদের বয়সে অনেকেই লিভ টুগেদার করে। কিন্তু আমি চেয়েছিলাম ছেলে বিয়ে করেই থাকুক। কেন হয়নি সে বিয়ে? কোনও নিগুঢ় কারণ ছিল? সাগ্নিকের বন্ধুদের কথায়, সরকারিভাবে আগের বিয়ে হয়তো ভাঙেনি এখনও। যে কারণে পল্লবীকে বিয়ে করতে পারছিলেন না সাগ্নিক। বছর দুয়েক আগে সুকন্যা নামের একটি মেয়ের সঙ্গে রেজিস্ট্রি হয়েছিল সাগ্নিকের। তাতে নাকি সাক্ষী হিসাবে সই ছিল পল্লবীরও।
রবিবার সকালে আত্মহত্যা করেছেন সাগ্নিকের প্রেমিকা তথা উঠতি অভিনেত্রী পল্লবী দে। সে সময় বাড়িতেই ছিলেন সাগ্নিক। চোখের সামনে প্রেমিকা গলায় বিছানার চাদর পেঁচিয়ে আত্মহত্যা। কেন বাঁধা দিলেন না সাগ্নিক? এমন প্রশ্ন ঘিরেই দানা বাঁধছে হরেক রহস্য। সে রহস্য আরও ঘনিভূত হচ্ছে সাগ্নিক নিজেকে সামাজিক মাধ্যম থেকে সড়িয়ে নেওয়ায়। প্রেমিকার মৃত্যুর পরেই নিজের ফেসবুক প্রোফাইল মুছে ফেলেছেন সাগ্নিক। লক করে দিয়েছেন ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইল।
তবে তার মধ্যেই জ্বলজ্বল করছে সাগ্নিক চক্রবর্তীর ইনস্টাগ্রাস স্টেটাস। যেখানে লেখা, “যা নিয়ে স্বপ্ন দেখি তার সবকিছুই আমি পাওয়ার যোগ্য।” সাগ্নিক চক্রবর্তীর এই স্টেটাসই বলে দিচ্ছে কতটা উচ্চাকাঙ্খী তিনি। ছাব্বিশ বছরের যুবকের উপার্জন কিভাবে হতো? সঠিকভাবে জানেন না তাঁর মা-বাবাই। নিজেকে সিনে ব্লগার বলে পরিচয় দিতেন সাগ্নিক। কিন্তু সেখান থেকে কত আয় হত? সূত্রের খবর, পুলিশের কাছে তা নিয়ে পরিস্কারভাবে কিছু বলতে পারছেন না কেউ। তাঁর আয়ের সঙ্গে জীবন যাত্রার বিস্তর ফারাক ছিল। প্রেমিককে নিয়ে প্রায়ই যেতেন পাঁচতারা রেস্তোরায়। তবে কি প্রেমিকার টাকাতেই চলতো ফূর্তি? উইকেন্ডে মোচ্ছব? প্রেমিকার অ্যাকাউন্ট থেকে তাঁর অ্যাকাউন্টে টাকা স্থানান্তর হওয়ার হাতে গরম প্রমাণও যে এসেছে সামনে। আর এ রহস্য আরও ঘনিভূত হচ্ছে সাগ্নিক চক্রবর্তী মুখে কুলুপ আঁটায়।
ইতিমধ্যেই পল্লবীর বান্ধবী অভিনেত্রী প্রত্যুষা পাল জানিয়েছেন, “প্রিয় বন্ধুর মৃত্যুতে আমি বিধ্বস্ত। পরে অনেক কিছু বলবো।” কী বলবে পল্লবীর বন্ধুরা? পল্লবীর আত্মীয়রা বলছেন, মাত্র পঁচিশ বছরের অভিনেত্রীর জীবন বইয়ের এমন কোনও পাতা নিশ্চই আছে, যাতে আলো পড়লে সমস্যায় পড়তে পারেন সাগ্নিক-সহ অনেকেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.