নন্দিতা রায়, যোধপুর: বরের ঘোড়া বারাদরী লনের মণ্ডপে পৌঁছে গেলেও বরযাত্রীদের নাচ আর থামছিল না। ভারতীয় সনাতনি পাঞ্জাবি, তার উপরে ডিজাইনার জ্যাকেট, সিল্কের পাজামা পরে নিকের তিন ভাই ও আমেরিকান-ব্রিটিশ বন্ধুরা নাচতে নাচতে পুরো উমেদ ভবনে চক্কর মেরেই চললেন। নিক-প্রিয়াঙ্কার চার হাত এক হওয়ার অনুষ্ঠান সত্যি ‘#বিগফ্যাটবলিউডওয়েডিং’ ছিল। বিয়ের আগে মঞ্চে দাপিয়ে নাচলেন প্রিয়াঙ্কা-পরিণীতি চোপড়া, নিক ও তাঁর বিখ্যাত গায়ক জোনাস ভাইরা। নাচলেন কনের মা মধু চোপড়া ও মুকেশ আম্বানি কন্যা ঈশা। দর্শকাসনের প্রথম সারিতে বসে বলিউড, হলিউডের নাচ-গান উপভোগ করলেন সস্ত্রীক মুকেশ। প্রায় ভোরের আলো ফুটতে তবে থামলেন নিক-প্রিয়াঙ্কা। সূর্যোদয়ের রাঙা আলো প্রাক্তন বিশ্বসুন্দরীর মুখে পড়তেই হাঁটু গেড়ে বসে ফের একবার আগামী জীবনে একসঙ্গে পথ চলার অঙ্গীকার করলেন নিক।
[বাল্যবিধবার লড়াই এবার পর্দায়, আসছে সমরেশ মজুমদারের ‘সাতকাহন’]
রবিবার বরযাত্রীদের স্বাগত জানান প্রিয়াঙ্কার মা মধু চোপড়া। তাঁদের উপর পুষ্পবৃষ্টি করেন প্রিয়াঙ্কার তুতো বোন পরিণীতি। মেহরানগড় দুর্গের ব্যাকড্রপে চল্লিশ ফুট উঁচু মণ্ডপে সন্ধের পর থেকেই বিয়ের অনুষ্ঠান পর্ব শুরু হয়ে গিয়েছিল। লাল গোলাপ দিয়ে সাজানো মণ্ডপে ভারতীয় সাজ ও গহনায় সলজ্জ কনে প্রিয়াঙ্কা। রাজস্থানের পালি জেলার বিখ্যাত পণ্ডিত চন্দ্রশেখর শর্মার ১১ জনের পুরোহিতের দল বৈদিক মন্ত্রোচারণের মধ্য দিয়ে হিন্দু পাঞ্জাবি রীতিতে সাতপাক ঘুরে রাত এগারোটা নাগাদ নিক-প্রিয়াঙ্কার বিয়ে সম্পন্ন হয়। বরযাত্রীদের সুবিধার জন্য একজন দোভাষী পুরোহিতও রাখা হয়েছিল। বিয়ের পর রাতেই মেয়ে বিদায়ের চল পাঞ্জাবিদের মধ্যে। সেই নিয়মেই ‘বিদাই’ পর্ব সম্পন্ন হয়। এখানেও পুরোনো ভারতীয় রীতি পালকিতে কনে প্রিয়াঙ্কা মণ্ডপ থেকে হোটেলের দিকে রওনা হন। পালকিতে বসে নববধূর মতোই লজ্জায় রাঙা হয়ে যান ‘দেশি গার্ল’।
[পর্দায় ফের জীবন্ত ‘সিংঘম’, ট্রেলারে মন কাড়লেন ‘সিম্বা’ রণবীর]
বলিউড নায়িকা পরিণীতি ‘জিজু’ নিকের জুতো লুকিয়ে রাখেন এবং তা ফেরত দেওয়ার জন্য পাঁচ লক্ষ ডলার দাবি করেন বলে শোনা গিয়েছে। সাত পাকের আগে প্রিয়াঙ্কাকে প্রায় কোলে তুলে নিয়ে ‘বর বড় না কি কনে বড়’ রেওয়াজও করেন দুই মার্কিন বন্ধু। অতিথিদের ‘রিটার্ন গিফট’ হিসাবে এনপি মনোগ্রাম করা লক্ষ্মী ও গণেশের রুপোর কয়েন দেওয়া হয়েছে। সোমবারই বিশেষ চাটার্ড বিমানে দিল্লি পৌঁছে গিয়েছেন প্রিয়াঙ্কা ও নিক। এদিন সকাল থেকেই উমেদ ভবন ছেড়ে চলে যেতে শুরু করেন অতিথিরা। হাই প্রোফাইল এই বিয়ে নিয়ে যোধপুরের মানুষের মধ্যে আগ্রহ রয়েছে। এই আগ্রহকে ভোটের ময়দানে ব্যবহার করতে চাইছে রাজস্থান পুলিশও। নবদম্পতিকে শুভেচ্ছা জানিয়ে নিজেদের টুইটারে তাঁরা লেখেন, ‘নিক যেমন সময়মত এসে দুলহন প্রিয়াঙ্কাকে নিয়ে যাচ্ছেন একইভাবে আগামী সাত তারিখে সময়মত নিজেদের ভোট দিয়ে আসবেন’৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.