Advertisement
Advertisement

Breaking News

Paoli Dam

কাবেরীর চরিত্র করতে গিয়ে ‘ধৈর্য বেড়ে গিয়েছে’ পাওলির, কেন? জানালেন বিস্তারিত

সমাজের ভারসাম্য নিয়েও কথা বললেন অভিনেত্রী।

Actress Paoli Dam about Hoichoi Original web series Kaberi
Published by: Suparna Majumder
  • Posted:October 7, 2024 2:00 pm
  • Updated:October 7, 2024 8:04 pm  

পুজোর মুখেই হইচই প্ল্যাটফর্মে আসছে ‘কাবেরী’। কেমন এই চরিত্র? তা ক্যামেরার সামনে ফুটিয়ে তুলতে গিয়ে কেন তাঁর ধৈর্য বেড়ে গিয়েছে? শম্পালী মৌলিককে বিস্তারিত জানালেন পাওলি দাম

এবারের পুজোর পরিকল্পনা কী?
কোনও বছরই আমার পুজোর তেমন প্ল‌্যান থাকে না। প্ল‌্যান মাফিক কিছু চলে না। তাই আগে থেকে কিছু প্ল‌্যান করি না। এ বছরেও তাই।

Advertisement

অদ্ভুত সময়ের মধ‌্য দিয়ে যাচ্ছি আমরা। এই সময়ে মা দুর্গার কাছে চাহিদা কী?
আমি আলাদা করে কিছু চাই না। সামগ্রিকভাবে চাই সবার ভালো হোক, সবাই ভালো থাকুক। যেটা আমি ৩৬৫ দিনই চাই। আলাদা করে পুজোর সময় বলে নয়। এই সবাই ভালো থাকার মধ‌্যে আমিও তো ইনক্লুডেড। একটু আগে মেডিটেশন করতে করতেও সকলের জন‌্য পজিটিভিটি আর ভালোর প্রার্থনা করছিলাম।

Kaberi-Paoli-1

পুজোর মুখেই হইচই-এর সঙ্গে আপনার প্রথম সিরিজ ‘কাবেরী’ আসছে। ৮ তারিখ থেকে স্ট্রিম করবে। নারীশক্তির গল্প এবং যার প্রধান মুখ আপনি, কেমন অনুভূতি?
একটা নতুন কাজ এলে শিল্পীর যে ভালোলাগা থাকে, সেইটা কাজ করছে। বহু বছর ধরেই হইচই-এর সঙ্গে কাজ করার পরিকল্পনা চলছিল। ইনফ‌্যাক্ট, অ‌্যাক্রোপলিসের সানিও এর আগে যোগাযোগ করেছিল, তখন হয়ে ওঠেনি। ও-ই আমাকে প্রথম কল করেছিল এই বিষয়টা নিয়ে। আগে হয়নি, এবারে হল। শৌভিকের (কুণ্ডু) কাজ খুব ভালো লাগে। ‘নাটকের মতো’, যেখানে আমি অভিনয় করেছিলাম, সেটার ট্রেলার বা টিজার ও এডিট-ও করেছিল সেই সময়। ওর সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলে খুব ভালো লেগেছিল। আর উৎসব মুখোপাধ‌্যায় স্ক্রিপ্টটা লিখেছে, যাকে আমি বহু বছর ধরে চিনি। ফলে খুব কমফর্টেবল পরিবেশ ছিল। যদিও প্রথমবার আমরা একসঙ্গে কাজ করলাম।

গার্হস্থ‌্য হিংসা এই সিরিজের ফোকাস। যা নিয়ে বছরের পর কথা হয়ে চলেছে, অথচ বাস্তব ছবিতে কোনও বদল আসে না।
ঠিকই বলেছ। গার্হস্থ‌্য হিংসার ভিক্টিম, এমন চরিত্র আমি আগে কখনও করিনি। আগে ভিক্টিম প্লে করলেও। যেমন, ‘বুলবুল’-এর ‘বিনোদিনী’, যে পেট্রিয়ার্কির ভিক্টিম। বা ‘হেট স্টোরি’-র ‘কাব‌্য’, সে এক অর্থে ভালোবাসার ভিক্টিম। আমরা প্রত‌্যেকেই জীবনের কোনও না কোনও সময়ে পুরুষতান্ত্রিকতার শিকার হয়েছি, যে ফিল্ডেই কাজ করি না কেন। কিন্তু ডোমেস্টিক ভায়োলেন্সের শিকার এমন চরিত্র, আমি করিনি আগে। ‘কাবেরী’ চরিত্রটা নিয়ে প্রাথমিকভাবে একটা স্ট্রাগল হয়েছিল আমার। একটু ভয় ছিল। সাধারণত, আমি প্রতিবাদী শক্তিশালী চরিত্র করি, এটা তার থেকে আলাদা। ভিক্টিমাইজড হচ্ছে সে, খুব সাটল চরিত্র। কাবেরী ভীতু, নিজের কথা বলতে পারে না। নিজের কোনও স্বর নেই তার। ওইটা নিয়ে চিন্তা ছিল। ভীষণ সহ‌্যশক্তি তার। এই মানুষটাই দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে ঘুরে দাঁড়ায়। নিজের জন‌্য না পারলেও ছাত্রীর জন‌্য ঘুরে দাঁড়ায়। ‘কালী’-র মতো নয় ‘কাবেরী’, সে ভীষণ হিউম‌্যান। সাংঘাতিক ধৈর্য তার। যেটা করতে গিয়ে আমারও ধৈর্য বেড়ে গিয়েছে।

উলটোদিকে সৌরভ চক্রবর্তীর সঙ্গে আপনার একটা দ্বৈরথ রয়েছে…
খুব ভালো লেগেছে ওর সঙ্গে কাজ করে। সৌরভ পরিচালনা বেশি করে। ওর পরিচালনার কিছু কাজ দেখলাম পরে, খুবই ভালো। এটা তো টিমওয়ার্ক, পরিচালকের সঙ্গে যেমন টিউনিং দরকার, তেমন সহ-অভিনেতার সঙ্গেও। শৌভিক, সৌরভ দুজনের সঙ্গেই আমার প্রথম কাজ, কিন্তু টিউনিংটা হয়েছে। বিয়াস-এর সঙ্গেও প্রথম কাজ। ডিওপি অনিমেষ ঘড়ুই-এর সঙ্গেও প্রথম, তবে সবার সঙ্গেই টিউনিং ভালো হয়েছিল। যার আউটকাম এই সিরিজ।

Paoli-Saurav

এমন সময়ে এই সিরিজ আসছে, যখন এক নির্যাতিতার ন‌্যায় বিচারের দাবিতে উত্তাল শহর। এই বিষয়টা আপনাকে কতটা বিচলিত করেছে?
ভীষণ, ভীষণ। পৃথিবীর যেকোনও প্রান্তের, যেকোনও নারী-ই এরকম ঘটনায় বিচলিত হবেই। বিশেষ করে আমরা যারা এই শহরে জন্মেছি, বড় হয়েছি, এটা তো আমাদের ভালোবাসার শহর, এই শহর তো আমাকে শিক্ষা-চেতনা দিয়েছে, ফলে ভীষণ মনখারাপ চলছে। শহরের এই বিষণ্ণতা একেবারে কাম‌্য নয়। যখন সিরিজের কাজটা করেছিলাম, তখন এই পরিস্থিতি ছিল না। ‘কাবেরী’ও নারীশক্তির গল্প বলে। দর্শক সিরিজ দেখে যদি নিজের সঙ্গে মিল পান, আমাদের ভালো লাগবে। আমি একজন শিল্পী, কাজের মাধ‌্যমেই মনের ভাব প্রকাশ করতে চাই বা চরিত্রের মাধ‌্যমে বার্তা দিতে চাই।

‘কাবেরী’ চরিত্রটি ডোমেস্টিক ভায়োলেন্সের বিরুদ্ধে, পুরুষতান্ত্রিকতার বিরুদ্ধে ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়ায় সিরিজে। কানেক্ট করতে পেরেছিলেন?
শুরুতে কানেক্ট করতে পারিনি। আমার প্রতিবাদের ভাষা আলাদা হতে পারে, কিন্তু প্রতিবাদ করতে এতটা সময় নিয়ে নেব! এইখানে কাবেরীর সঙ্গে মেলাতে সময় লেগেছিল। মনে হচ্ছিল, ও কেন দ্রুত হিট করছে না! কাবেরী প্রতিক্রিয়া দেয় অনেক সহ‌্য করার পর। তাই আমার বারবার মনে প্রশ্ন জাগছিল। আরেকটা কথা বলব, পুরুষতান্ত্রিক সমাজকে নতুন করে চিনেছি এই কাজটা করতে গিয়ে। পুরুষের ওপরেও কিছু দায়ভার চাপিয়ে দিই আমরা। যেমন ‘কাবেরী’র স্বামীর ওপরেও চাপ রয়েছে। স্ত্রীর সঙ্গে তার খারাপ ব‌্যবহারের নেপথ‌্যে সমাজের চাপও আছে। তবে এই কারণে সে অন‌্য একজনকে হেনস্তা করতে পারে না। বলব সমাজের ব‌্যালান্সটা খুব জরুরি।

সাম্প্রতিক সময়ে টলিউডে নারীর হেনস্তার বেশ কয়েকটা খবর নজরে এসেছে। আপনি নিজেও “উইমেন’স ফোরাম ফর স্ক্রিন ওয়ার্কার্স প্লাস’-এর সঙ্গে যুক্ত। প্রতিষ্ঠিত, সিনিয়র শিল্পী হিসাবে কী বলবেন?
একটা জিনিস খুব মনে হয়, আমাদের আর্ট ফর্ম খুব একটা স্ট্রাকচার্ড ফরম‌্যাটের নয়। সেই ফরম‌্যাট না থাকায়, কাজের জায়গায় টিউনিং দরকার। যেটা আগেও বললাম। পরিচালক-অ‌্যাক্টরদের, ডিওপি-অ‌্যাক্টরদের এবং অবশ‌্যই অ‌্যাক্টদের নিজের মধ‌্যে টিউনিং দরকার। অর্থাৎ আস্থা, ভরসা, বিশ্বাসের জায়গা থাকা দরকার। না হলে কাজটাই হবে না। যদি কেউ সারাক্ষণ ভয়ে ভয়ে থাকে, পারফরম‌্যান্সটা উঁচুতে তুলতেই পারবে না।

এই প্রসঙ্গে ইন্টিমেসি কোঅর্ডিনেটরের প্রসঙ্গ বারবার উঠে আসছে। আপনি কি মনে করেন প্রয়োজন?
দেখো, হলে মন্দ হয় না। যদি ডান্সের জন‌্য কোরিওগ্রাফার থাকে, ফাইটের জন‌্য অ‌্যাকশন মাস্টার থাকে, সেক্ষেত্রে ইন্টিমেসি কোঅর্ডিনেটর হতেই পারে। সেক্ষেত্রে যদি কার্যক্ষেত্রে সুবিধা হয়, থাকতেই পারে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement