সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বেসরকারি সংস্থার বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপনে ‘জনপ্রতিনিধি’ পরিচয় ব্যবহার করে বড়সড় প্রশ্নের মুখে পড়েছেন যাদবপুরের তৃণমূল সাংসদ মিমি চক্রবর্তী। এবার সেই বিতর্কে নিয়েই মুখ খুলেছেন রাজ্যের বিরোধী দলের নেতা-মন্ত্রীরা। গেরুয়া শিবিরের বাবুল সুপ্রিয়, লকেট চট্টোপাধ্যায়, সায়ন্তন বসু থেকে সিপিএমের সুজন চক্রবর্তী, একযোগে সবাই বিরোধীতা করেছেন মিমি চক্রবর্তীর।
“একটি বাণিজ্যিক সংস্থার স্বার্থে সাংসদ মিমি চক্রবর্তী তাঁর জনপ্রতিনিধি পরিচয় ব্যবহার করতে পারেন না”, এমনটাই শোনা যাচ্ছে অন্যান্য দলের সাংসদ তথা সদস্যদের কাছ থেকে। উপরন্তু এই ঘটনাকে নজিরবিহীন বলেও দাবি করছেন, রাজনৈতিক মহলের একাংশ। অতঃপর জোর সমালোচনার মুখে পড়েছেন যাদবপুরের তৃণমূল সাংসদ। যার দরুণ, লোকসভার স্পিকার কিংবা এথিক্স কমিটির কাছেও অভিযোগ জমা পড়লে মিমি চক্রবর্তীকে জবাবদিহি করতে হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। এর মাঝেই বাবুল-লকেট-সুজনরা মন্তব্য করলেন।
তারকা থেকে রাজনীতির ময়দানে আগত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় মিমি চক্রবর্তীর এই কার্মকাণ্ডের কড়া সমালোচনা করে মুখ খুলেছেন। স্বাভাবিকবশতই বিরোধী দলের সাংসদকে কটাক্ষ করতে পিছপা হননি তিনি। আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়র কথায়, ‘‘এভাবে বিজ্ঞাপন করা একেবারেই অনুচিত কাজ। মিমির উচিত এখনই এই ভুল শুধরে নেওয়া।’’ অন্যদিকে, রাজ্যের গেরুয়া শিবিরের আরেক তারকা সাংসদ যিনি কিনা গতবছর সোকসভায় হুগলি আসন থেকে বিপুল ভোটে জিতেছেন, সেই অভিনেত্রী-সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ও সরব হয়েছেন বিজ্ঞাপন বিতর্ক নিয়ে। তবে লকেট কিন্তু সোজাসুজি আক্রমণের পথে হাঁটেননি। বরং এপ্রসঙ্গে একটু নরমই মনে হল তাঁকে। লকেটের কথায়, ‘‘মিমি নিশ্চয়ই সাংসদদের বিধিনিষেধ নিয়ে আইন সম্পর্কে ভালভাবে অবগত নন। না জেনেই করেছেন।” কিন্তু একজন সাংসদ হিসেবে মিমির আইনটা জেনে রাখা উচিত ছিল বলেও মন্তব্য করেন হুগলির সাংসদ। তিনি এও জানান যে, এর আগে অন্য কোনও তারকা-সাংসদকে ‘জনপ্রতিনিধি’ পরিচয়ে বিজ্ঞাপনে কাজ করতে দেখেননি তিনি।
‘‘একজন সাংসদ কীভাবে এই ধরনের কাজ করেন! নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হয়ে সেই পরিচয় ব্যবহার করে যে অর্থ উপার্জন তিনি করতে পারেন না, তা কি জানা নেই মিমি চক্রবর্তীর জানা নেই? প্রশ্ন তুলেছেন বঙ্গ বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু। পাশাপাশি তাঁর মন্তব্যে তিনি এও যোগ করেন যে, “বুঝে দেখুন, তৃণমূল থেকে কাদের সংসদে পাঠানো হয়েছে।” শমীক ভট্টাচার্য়ের কথায়, “রাজনীতি বোঝার আগে কাউকে সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত করলে, এরকমই হবে!”
সিপিএমের সুজন চক্রবর্তী অবশ্য মিমিকে নয়, বরং দলের উদ্দেশে মন্তব্য করেছেন। বলেছেন, “ওর বয়স কম, অনভিজ্ঞ। ফলে মিমিকে নিয়ে বলা সাজে না। নিশ্চয়ই এই কাজের আগে দলের অনুমতি নিয়েছেন। দলের উচিত ওর ভুল শুধরে দেওয়া।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.