সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পল্লবী দে’র মৃত্যু কাণ্ডে (Pallavi Dey Death Case) জটিলতা ক্রমশ বাড়ছে। অভিনেত্রীর পরিচারিকার বয়ান অনুযায়ী, পল্লবীর অনুপস্থিতিতে তাঁর ফ্ল্যাটে আসতেন অভিযুক্ত ঐন্দ্রিলা মুখোপাধ্যায়। বান্ধবীর প্রেমিক সাগ্নিকের সঙ্গে সময় কাটাতেন।
জানা গিয়েছে, অভিনেত্রী পল্লবী দে’র গড়ফার ফ্ল্যাটে এক পরিচারিকা ছিলেন। নাম সালেমা সর্দার। ক্যানিংয়ের তালদির বাসিন্দা তিনি। ঘটনার পরই তাঁকে তলব করেছিল পুলিশ। অনুমান করা হয়েছিল, পল্লবী মৃত্যু রহস্যের সমাধান সূত্র মিলতে পারে সালেমার কাছে। বুধবার সকালে গড়ফা থানায় হাজিরা দেন ওই পরিচারিকা। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, সালেমা এদিন জানিয়েছেন পল্লবীর অনুপস্থিতিতে তাঁর ফ্ল্যাটে যেতেন সাগ্নিক। ইদের দিনও গিয়েছিলেন। ওইদিন পল্লবীর কাজ থেকে ফিরতেও রাত হয়। ফলে দীর্ঘক্ষণ একসঙ্গে ছিলেন সাগ্নিক ও ঐন্দ্রিলা। যা মোটেও ভাল লাগেনি সালেমার। এই বক্তব্যেই স্পষ্ট যে ঐন্দ্রিলার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল সাগ্নিকের। হয়তো সম্পর্কেও জড়িয়েছিলেন। এদিকে ঘটনার দিন সকালে পল্লবীর (Pallavi Dey) সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছিল সালেমার। খানিকটা কথা কাটাকাটিও হয়েছিল। ফলে আত্মহত্যার কোনও পরিকল্পনা ছিল না বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। আচমকা কোনওরকম পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার জেরেই হয়তো এই ঘটনা। যদিও পরিবারের এখনও দাবি, খুন করা হয়েছে পল্লবীকে।
সূত্রের খবর, গত রবিবার হাওড়ার রামরাজাতলায় পল্লবী দে’র দিদিমার বাৎসরিক কাজ ছিল। এতে প্রথমে পল্লবী যেতে না চাইলেও পরে মা সঙ্গীতা দে’কে জানান, রাতে সাগ্নিককে নিয়ে যাবেন। মাকে পল্লবী বলেন, বাৎসরিক কাজে তাঁর সুবিধার জন্য বাড়ির পরিচারিকাকে হাওড়ায় পাঠিয়ে দেবেন। শনিবার মায়ের সঙ্গে কথোপকথনের পর ওই পরিচারিকাকে ফোন করে পল্লবী সরাসরি হাওড়ায় মায়ের কাছে চলে যেতে বলেন। রবিবার সকালে পল্লবীর ফোনে পরিচারিকার ফোন আসে। পরিচারিকা জানান, তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাই হাওড়ায় যেতে পারবেন না। এতেই মেজাজ হারান পল্লবী। ফোনেই কিছুক্ষণ বকাবকি করেন ওই মহিলাকে। এই চেঁচামেচিতে ঘুম ভেঙে যায় লিভ ইন পার্টনার সাগ্নিকের। তিনি পল্লবীকে এভাবে পরিচারিকার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতে বারণ করেন। পল্লবী পালটা জবাব দেন। দু’জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এরপর চিৎকার চেঁচামেচি।
ফের মেজাজ হারিয়ে পল্লবী সাগ্নিকের (Pallavi Dey-Sagnik Chakraborty) পুরনো কিছু সম্পর্কের কথা তুলে ধরেন। সাগ্নিকও পালটা জবাব দিয়ে তুলে ধরেন পল্লবীর সম্পর্কের কথা। তুমুল বাদানুবাদের মধ্যে সাগ্নিক পাশের ঘরে চলে যান। এর পরই উদ্ধার হয় ঝুলন্ত দেহ। দরজা ভেঙে সাগ্নিক, সঙ্গে বাড়ির কেয়ারটেকার ও একজন মিস্ত্রি পল্লবীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। সাগ্নিক পল্লবীর বাড়িতে কখন খবর দিয়েছিলেন, সেই তথ্যও জানার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.