সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যদিও দলের পক্ষ থেকে কোনওরকম হুইপ জারি হয়নি, তবুও তৃণমূল সুপ্রিমো তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফে নির্দেশ ছিল, চলতি শীতকালীন অধিবেশনে লোকসভা এবং রাজ্যসভার সব সাংসদদের উপস্থিত থাকতে হবে। অধিবেশন কক্ষে সরব হতে হবে, লড়তে হবে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে। কিন্তু সোমবার লোকসভায় ভোটাভুটির সময়ে হাজির ছিলেন না তৃণমূলের ৬ সাংসদ। তাঁদের মধ্যে ছিলেন তারকা সাংসদ দেব-মিমিও। আর সাংসদদের এই অনুপস্থিতি নিয়েই সরগরম হয়েছে রাজনৈতিক মহল। কঠোর সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়েছে। দেব-মিমির হয়ে সেই সমালোচনার জবাব দিলেন সতীর্থ আরও এক সাংসদ নুসরত জাহান।
সোমবার মধ্যরাতে লোকসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশের ভোটগ্রহণের সময় তৃণমূলের মোট ৬ জন অনুপস্থিত ছিলেন- মিমি চক্রবর্তী, দীপক (দেব) অধিকারী, শিশির অধিকারী, চৌধুরী মোহন জাটুয়া, দিব্যেন্দু অধিকারী এবং খালিলুর রহমান। দুপুরে যখন লোকসভায় বিল পেশ হয় সেসময় অধিবেশন কক্ষে দেখা যায়নি নুসরত জাহান এবং সাজদা আহমেদকেও।
দলনেত্রীর কড়া নির্দেশ সত্ত্বেও কেন ৬ জন তৃণমূল সাংসদ অনুপস্থিত? সেই প্রশ্ন তুলেই সরগরম হয়েছিল রাজনৈতিক মহল। এমনকী, ঘাটালের সাংসদ দীপক অধিকারী এবং যাদবপুরের সাংসদ মিমি চক্রবর্তীকেও তুলোধোনা করতে ছাড়েননি রাজনৈতিক মহলের একাংশ। তবে বাকি ৪ জনের জন্য হাল ধরতে ময়দানে মুখ খুলেছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ তথা সর্বভারতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েন। তাঁর কথায়, ‘‘প্রত্যেকের নিজস্ব কারণ রয়েছে। এই বিষয়ে দলীয় অনুশাসন না মানার মতো কোনও ব্যাপার তো নেই!’’ ডেরেক জানান, খলিলুর রহমানের নিকটাত্মীয় বিয়োগ হওয়ায় তাঁর আসা সম্ভব হয়নি। শিশির অধিকারী এবং দিব্যেন্দু অধিকারী রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত, তাঁরা আসবেন না, তা আগে থেকেই স্থির ছিল। চৌধুরী মোহনের বয়স ৮৪। শরীর সুস্থ নয়। অতঃপর তাঁকে মধ্যরাত পর্যন্ত বসিয়ে রাখা হয়নি। সাজদা আহমেদের উড়ান বিলম্বিত থাকার কারণে দুপুরে পৌঁছতে না পারলেও রাতে এসে ভোটটা দিয়েছেন। তবে তারকা সাংসদ দেব এবং মিমি চক্রবর্তীকে নিয়ে কোনওরকম মন্তব্য করেননি ডেরেক। বরং তাঁদের হয়ে এগিয়ে এসেছেন বসিরহাটের সাংসদ নুসরত জাহান।
নাগরিকত্ব বিল নিয়ে আলোচনাকালীন অধিবেশন কক্ষ থেকে নুসরত বেরিয়ে গেলেও রাতে এসে ভোট দিয়েছেন। পাশাপাশি দেব-মিমির অনুপস্থিত থাকার কারণ নিয়ে সমালোচনা হলে টুইটে কড়া জবাব দিয়েছেন নুসরত। তাঁর কথায়, ‘‘আমার এই দুই সতীর্থ, মিমি এবং দেবের পক্ষ থেকে জানাতে চাই যে তাঁরা শ্যুটিং এ ব্যস্ত রয়েছেন। এটাও আমাদের ‘বাড়তি দায়িত্ব’-এর মধ্যে পড়ে। এবং খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সেটে তিনশোরও বেশি মানুষ থাকেন।’’ একেবারে স্পষ্ট ভাষায় বলেন, ‘‘কেন মানুষ শুধু নেতিবাচক কথা বলে? যদি মানুষ নিজের চরকায় তেল দেয়, তাহলে হয়তো এই পৃথিবীটা বসবাসের পক্ষে অনেক কম বিরক্তিকর হয়।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.