সন্দীপ্তা ভঞ্জ: ‘চুপকথা’র পর হইচই অরিজিন্যালসে আসছে ‘চুপকথা ২’। রাহুল বেঁচে নেই। শিবাঙ্গী নিজের মতো করেই তাঁর জীবনযুদ্ধ চালাচ্ছে। দ্বিতীয়বার আর বিয়ের পিঁড়িতে বসেনি সে। চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়া তার নেশা। পেশায় সাংবাদিক শিবাঙ্গী। ছোট্ট মিনিই তাঁর একমাত্র সম্বল। মিনি তাঁর মেয়ে। বছর পাঁচেক পরে কেমন আছে শিবাঙ্গী? গল্পের শুরুটা ঠিক এখান থেকেই। থ্রিলার সিরিজের পরিচালনায় ঋক বসু। নতুন শিবাঙ্গীর যাবতীয় আপডেট নিয়েই কথা হল অভিনেত্রী পার্নো মিত্রর সঙ্গে।
‘চুপকথা ২’-তে সাংবাদিকের চরিত্রে..
পার্নো: হ্যাঁ, ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টের চরিত্রে।
এই সিরিজে সাংবাদিক শিবাঙ্গী কতটা পরিণত?
পার্নো: অনেকটাই। আরও বেশি করে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে শিখেছে সে। পরিস্থিতি অনেকটাই পরিণত করে তুলেছে তাঁকে। আর বয়সের সঙ্গে সঙ্গে তো আমাদের সবার জীবনের অভিজ্ঞতাটাও তো বেড়ে যায়, না! শিবাঙ্গীরও ঠিক তাই। মা মারা যাওয়ার সে পর ফিরে এসেছে কলকাতায় তার পৈতৃক বাড়িতে। সংসার, সাংবাদিকতা সব একা হাতে সমান তালে সামলাতে হয় শিবাঙ্গীকে এখন।
‘চুপকথা ২’-এর গল্পে টার্নিং পয়েন্টটা কোথায়?
পার্নো: মিনি, মানে যে এখানে আমার মেয়ে, তাঁর পাঁচ বছরের জন্মদিনের পরই হঠাৎ করে একটা অঘটন ঘটে যায়। সে খবর পায় তাঁর কাছের বন্ধু ঋজু (ফারহান ইমরোজ) মারা গিয়েছে। ঋজুর নিজের অ্যাপার্টমেন্ট থেকেই পাওয়া যায় ওর মৃতদেহ। মাথার পিছনে গভীর ক্ষতর আঘাত। চেখেমুখে ভয়ের ছাপ, যেন মৃত্যুর আগেই অদ্ভূত কিছু দেখে সে ভয় পেয়েছে। ঘটনার জেরে গ্রেপ্তার হয় ঋজুর ছাত্রী নিকিতা। তবে, তার দেওয়া বয়ানে কোথাও গড়মিল মনে হয়।… ব্যস, শিবাঙ্গী নেমে পড়ে ময়দানে।
শুনেছি, সাংবাদিক শিবাঙ্গীকেই নাকি একসময়ে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার চ্যালেঞ্জ নিতে হয়?
পার্নো: অনেকটা সেরকমই। ঋজুর মার্ডার কেস সামলানোর সময়ে শিবাঙ্গীর বেশ কিছু ঘনিষ্ঠ লোকের মৃত্যু ঘটে রহস্যজনকভাবে। কেসের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে জড়িয়ে যায় সে। এক ইনভেস্টিগেটিভ অফিসার শিবাঙ্গীকেই খুনি বলে সন্দেহ করা শুরু করে। শিবাঙ্গীর চ্যালেঞ্জটা ঠিক এখানেই। সে কী করে খুঁজে বের করবে এসবের নেপথ্যে কার হাত রয়েছে…। এরজন্য দেখতে হবে ‘চুপকথা ২’।
রিয়েল লাইফেও পার্নো কী শিবাঙ্গীর মতো এরকমই চ্যালেঞ্জিং?
পার্নো: অনেকটাই। দু’জনেই নিজের কাজের প্রতি নিষ্ঠাবান। আমি আমার কাজটাকে খুব ভালবাসি। ঠিকঠাক আউটকামের জন্য সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করি। শিবাঙ্গী এবং পার্নোর জীবনের ক্রাইসিসটা আলাদা। তবে মিল বলতে, দুজনেই স্ট্রং উইমেন। বাস্তববুদ্ধি সম্পন্ন। কঠিন পরিস্থিতিতে নিজেকে সামলাতে জানে।
সাংবাদিকতার সঙ্গে সিঙ্গল মাদার…
পার্নো: হ্যাঁ। শিবাঙ্গীর পাঁচ বছরের মেয়ে। অফিসের কাজ সামলে একাই মেয়েকে বড় করে তুলছে। আগের থেকে শিবাঙ্গীর দায়িত্ব অনেক বেড়েছে। চ্যালেঞ্জিং তো বটেই! ‘চুপকথা ২’ তে এক নতুন শিবাঙ্গীকে দেখতে পাবেন দর্শকরা।
মায়ের চরিত্রে পার্নো… মা সুলভ ব্যাপারটা ফুটিতে তুলতে অসুবিধে হয়নি?
পার্নো: ছোট থেকেই তো নিজের মাকে দেখছি। আমরা রোজকার জীবন থেকেই তো শিখি। সিঙ্গেল মাদারের চরিত্রে অভিনয় করতে গিয়ে সেটাকেই কাজে লাগিয়েছি।
ওয়েব সিরিজ বাদে হাতে কোনও ছবি?
পার্নো: না, কোনও ছবি করছি না গো!
হইচইকে অনেকেই অ্যাডালটারি প্ল্যাটফর্ম বলে… সে ব্যাপারে কী মত?
পার্নো: আমার ওয়েব সিরিজে কোনও অ্যাডালটারি কন্টেন্ট নেই। রহস্য-রোমাঞ্চ এই গল্পের উপকরণ। আর এক্ষেত্রে বলব, যারা নিন্দা করছে তারাই তো দেখছে ছবিগুলো। যে যেটা দেখে সুখ পাচ্ছে! কমেডি, থ্রিলার, ভূতুড়ে হইচইয়ে সব ধরনের কনটেন্টই দেখানো হয়। ব্যোমকেশও তো দেখানো হয়। তাহলে? যেখানে সেন্সর বোর্ডের কাঁচি চালানো নিয়ে লোক এত প্রতিবাদ করল, সেখানে যখন হাতের কাছে এরকম একটা প্ল্যাটফর্ম রয়েছে, আর তাদের লাইসেন্সও রয়েছে এরকম কনটেন্ট দেখানোর, তাহলে কেন দেখাবে না!
তারকারা রাজনীতির ময়দানে নামছেন.. মিমিও আপনার মতোই সিরিয়াল থেকে শুরু করেছে, সে এখন রাজনীতির ময়দানে। আপনারও কী এরকম কোনও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা রয়েছে?
পার্নো: সিরিয়ালটা আমি মিমির অনেক আগেই শুরু করেছি। মিমি, নুসরত দু’জনকেই শুভেচ্ছা জানাব। সবাই বলে, ইয়ংরা খুব কমই রাজনীতির ময়দানে মুখ দেখায়। সেখানে ওরা দু’জন এরকম একটা ইনিশিয়েটিভ নিয়েছে। মানুষের জন্য কিছু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, খুব গর্বের ব্যাপার। ওদের সিদ্ধান্তের প্রতি আমার পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। তবে, আমি জীবনে কোনও দিনই প্ল্যান করে কিছু করিনি। আমি বিকেলে কী করব সেটা সকালে ঠিক করি। তাই আমাকে আর এসব বলে লাভ নেই !
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.