আকাশ মিশ্র: আমাদের দেশ লোককথায় সমৃদ্ধ। আর এই লোককথা অনায়েসে সিনেমার চিত্রনাট্যে জায়গা করে নিতে পারে, তা সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত ‘মুঞ্জা’ দেখলেই বোঝা যায়। খুবই প্রচলিত এক গল্পকে ঠিকঠাক নির্মাণ করে পরিচালক আদিত্য কিন্তু এই বিষয়টিকেই ফোকাসে নিয়ে আসলেন, আর তাই তো স্ত্রী, ভেদিয়া ছবির পর ‘মুঞ্জা’ বলিউডের হরর কমেডি জ্যঁকে সমৃদ্ধ করতে পারে। হ্য়াঁ, ‘মুঞ্জা’ এমনই ছবি।
লোককথার উপর নির্ভর করে এদেশে একটা বিশ্বাস খুবই প্রচলিত। যে পৈতে হওয়ার পর ১০ দিনের মাথায় কোনও ব্রাহ্মণ ছেলে মারা গেলে সে মুঞ্জা বা বাংলা ভাষায় ব্রহ্মদৈত্যতে পরিণত হয়। বিশ্বাসে রয়েছে ব্রহ্মদৈত্য সাধারণত তেঁতুল গাছেই থাকে। সেই গাছের তলায় বসে মদ খেলে, নোংরা ফেললে বা ঢিল ছুঁড়লে ব্রহ্মদৈত্য সারা জীবন সেই মানুষটির পিছু নেয়। ‘মুঞ্জা’ এরকমই এক গল্পকে সামনে নিয়ে এসেছে।
‘মুঞ্জা’ আসলে একটা প্রেম, বিরহ ও বদলার গল্প। যেখানে গোটিয়া নামক এক বালক মুণ্ডনের ঠিক পরের দিনই ঘটনাচক্রে বৈহ্মদৈত্য হয়ে যায়। তার পর বহু বছর পর বদলা এবং তাঁর পুরনো প্রেম ফিরে পাওয়ার চেষ্টা। মাঝখানে রয়েছে বিট্টু নামের এক যুবক। ‘মুঞ্জা’ ছবি খুব সুন্দর ভাবেই কমেডি ও হরর বিষয়টিকে একসঙ্গে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে। বেশ কিছু দৃশ্য একদিকে যেমন ভয় পাওয়াবে। তেমনি, বহু দৃশ্য়েই হাসি পাবে। এই ছবির সবচেয়ে শক্তপোক্ত দিকই হল সিনেম্যাটোগ্রাফি ও গ্রাফিক্স। বলা ভালো পুরো ছবিটাই দাঁড়িয়ে রয়েছে গ্রাফিক্সের উপর। আলো আঁধারিতে ‘মুঞ্জা’র আগমণ রীতিমতো গা ছমছমে। তবে অভিনয়ের দিক থেকে মোনা সিং নজর কাড়ে। বিট্টু চরিত্রে নতুন অভিনেতা অভয় ভার্মা অতটা সাবলীল না হলেও, তাঁকে দেখতে পর্দায় খারাপ লাগে না।
তবে ‘মুঞ্জা’র বেশ কিছু ভালো দিক থাকলেও, মন্দ দিকও রয়েছে। ছবিটির সম্পাদনা বেশ দুর্বল। প্রচুর এমন দৃশ্য রয়েছে, যা কিনা না থাকলেও চলত। ছবির দৈর্ঘ্য অত্যন্ত ছোট হলে হয়তো জমজমাট হতে পারত। সব মিলিয়ে বলা ভালো এই ছবি দেখতে হলে ওটিটি মুক্তির জন্য অপেক্ষা করুন। হলে না গেলেও চলবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.