ফাইল ছবি
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতীয় সিনেমায় অনবদ্য অবদান। জাতীয় পুরস্কার, পদ্মসম্মানে ভূষিত হয়েছেন বহু আগেই। অর্ধ শতাব্দীজুড়ে ভারতীয় সিনেদুনিয়ায় রাজত্ব করছেন মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty)। এবার সেই পাঁচ দশকের ফিল্মি কেরিয়ারের জন্য ‘দাদাসাহেব ফালকে’ পাচ্ছেন মহাগুরু।
সোমবার সকালে কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের তরফে অশ্বিনী বৈষ্ণ এক্স হ্যান্ডেলে এই সুখবর শেয়ার করে লিখেছেন, “মিঠুন দা’র অসাধারণ সিনেম্যাটিক সফর সব প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা। কিংবদন্তি অভিনেতাকে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিলেকশন জুরি। ভারতীয় চলচ্চিত্রে মিঠুনজি’র অসামান্য অবদান রয়েছে।” ৮ অক্টোবর ৭০তম জাতীয় চলচ্চিত্র উৎসবের মঞ্চে মিঠুন চক্রবর্তীকে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারে পুরস্কৃত করা হবে। খবর প্রকাশ্যে আসার পরই মহাগুরুকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন কুণাল ঘোষ। তবে মনে করিয়ে দিলেন প্রণব মুখোপাধ্যায়ের কথাও। ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, “দাদাসাহেব ফালকে মিঠুন চক্রবর্তী। শিল্পী মিঠুনদাকে অভিনন্দন। শুধু অনুরোধ, দীর্ঘ উপেক্ষার পর আপনার পদ্মশ্রীর জন্য প্রয়াত প্রণব মুখোপাধ্যায়ের চিঠি ও চেষ্টার দিনগুলো এবং সেইসঙ্গে মমতাদির আপনাকে রাজ্যসভায় পাঠিয়ে স্বীকৃতিদান ভুলে যাবেন না।”
সম্প্রতি কলকাতায় এসেছিলেন তাঁর পুজো রিলিজ ‘শাস্ত্রী’র প্রচারে। বয়স সত্তর পেরোলেও কাজের প্রতি আজও একইরকমভাবে নিষ্ঠাবাণ তিনি। হাতের হাড় ভেঙে ছয় টুকরো হয়েছে গত মাসে। সেই শরীরেই প্রচারের কাজে এসেছেন কলকাতায়। ফিল্মি কেরিয়ারের শুরুটা করেছিলেন ১৯৭৬ সালে। বাঙালি পরিচালক মৃণাল সেনের হাত ধরে ‘মৃগয়া’ ছবির সুবাদে অভিনয় জীবনে অভিষেক ঘটে মিঠুন চক্রবর্তীর। তবে হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে বেজায় বেগ পেতে হয়েছিল অভিনেতাকে। মিঠুনের চেহারা, এমনকী গায়ের রং নিয়েও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বলিউডের ছবি নির্মাতারা। কাজ চাইতে গেলেই সপাটে মিঠুনের মুখের ওপর দরজা বন্ধ করে দিয়েছিলেন অনেকে। বলেছিলেন, “আয়নায় নিজের মুখ দেখেছো? কোনও দিক থেকে হিরোসুলভ ব্যাপার আছে তোমার চেহারায়?” কিন্তু দমে যাননি। জেদের বশেই দর্শকদের কাছে প্রিয় ‘ডিস্কো ডান্সার’ হয়ে উঠেছিলেন। তবে শুরুর দিনগুলো নেহাত সোজা ছিল না।
মিঠুনের তখন স্ট্রাগলিং পিরিয়ড। বেশিরভাগ দিনই পকেট গড়ের মাঠ থাকত। দু-বেলা পেট ভরার জন্য দু’ মুঠো ভাতও জুটত না ঠিক করে। সেইসময়ে একটু খাবারের আশায় হাইপ্রোফাইল পার্টিগুলোতে নাচতেন মিঠুন। নিজেই অশ্রুসজল চোখে সেসব অতীত কথা জানিয়েছিলেন একবার এক রিয়ালিটি শোয়ে। বলেছিলেন, “আমি ভেবেছিলাম কেউ আমাকে হিরো হিসেবে সিনেমায় সুযোগ করে দেবে না। তাই নাচের দিকে ঝুঁকে যাই। বিশেষ করে ডান্স, ভিলেন হিসেবে নিজেকে প্রদর্শিত করতাম তখন। একটু পয়সা বাঁচানোর জন্য কাজের জায়গায় পায়ে হেঁটে যেতাম। বড় বড় পার্টিতে নাচতাম, যাতে একটু খেতে পাই।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.