সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ১১ সেপ্টেম্বর, ঠিক এই দিনেই শিকাগো শহরে বিশ্বের বিবেক জাগরণ ঘটিয়েছিলেন এক বাঙালি। তিনি স্বামী বিবেকানন্দ। তার ১৩১ বছর বাদে আর জি কর কাণ্ডে যখন বিবেক দংশনে ‘ক্ষতবিক্ষত’ সেই জাতিই, তখন সিমলা স্ট্রিট থেকে বিবেক জাগরণ যাত্রায় প্রতিবাদী মিছিলে শামিল হলেন মিঠুন চক্রবর্তী। ভাঙা হাতে প্লাস্টার। তবুও দমে যাননি। পথে নেমেছেন মহাগুরু।
আর জি কর হাসপাতালে তরুণী ডাক্তারের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কড়া প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty) বলেছিলেন, “বাঙালি হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার ক্ষমতা হারাচ্ছি।” কিন্তু বিগত একমাসে ন্যায়বিচারের দাবিতে বাংলার প্রতিবাদী সত্ত্বা দেখে মিঠুনের যেন স্বপ্নপূরণ ঘটে। তাই তো সেপ্টেম্বর মাসের পয়লা সপ্তাহে শহরে পা দিয়েই মহাগুরু বলেন, “এই বাংলাই দেখতে চেয়েছিলাম।” এবার পথে নামলেন মিঠুন চক্রবর্তী। বুধবার বিকাল ৪টে নাগাদ হেদুয়ায় স্বামীজির পৈতৃক বাসস্থান থেকে মিছিল শুরু হয়। শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ে নেতাজি সুভাষচন্দ্রের মূর্তির পাদদেশে পৌঁছে শেষ হচ্ছে তাঁদের কর্মসূচি। এই মিছিলে মিঠুন চক্রবর্তীকে থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য স্মৃতিকুমার সরকার। তাঁর ডাকেই এদিন বিকেলে বিবেক জাগরণ যাত্রায় অভয়ার ন্যায়বিচার চেয়ে পা মেলালেন মহাগুরু।
জল্পনা ছিল, আগে থেকেই যে এই প্রতিবাদী মিছিলে হয়তো শামিল হবেন তিনি। দিন কয়েক আগেই অসুস্থ শরীরে, ভাঙা হাত নিয়ে কলকাতায় এসেছেন তিনি ‘শাস্ত্রী’ ছবির প্রচারের জন্য। পেশার প্রতি কর্তব্যের পাশাপাশি প্রতিবাদেও শামিল হলেন মিঠুন। তবে সিনেমার প্রচারে যাতে রাজনৈতিক রং না লাগে, সেই জন্য তখন আর জি কর নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে আপত্তি জানিয়ে বলেন, “এখন বললে বলবে বিজেপির লোক বলছে। তাই কিছু বলব না।”
আর জি কর কাণ্ডে বাংলার শিল্পীমহলের প্রতিবাদ (RG Kar Protest) নিয়ে নেটপাড়ার একাংশ যখন নিত্যদিন কটাক্ষ করে যাচ্ছে, তখন নিন্দুক, সমালোচকদের কাঁচকলা দেখিয়ে বারবার সিনেমাপাড়ার সদস্যরা সাধারণ মানুষের ভিড়ে মিশে গিয়ে কলকাতার রাজপথে নেমে তিলোত্তমার বিচার চাইছেন। চোখে আঙুল দিয়ে নিন্দুকদের দেখিয়ে দিচ্ছেন, তাঁরা দমে যাওয়ার পাত্রপাত্রী নন! প্রতিটি প্রতিবাদী মিছিলে সমবেতস্বরে একটা ধ্বনি- ‘জাস্টিস ফর আর জি কর।’ বাংলার আট থেকে আশির চোখে প্রতিবাদী আগুন দেখে খুশি মিঠুন চক্রবর্তী। মহাগুরু বলেছিলেন, “এই বাংলাটাকেই আমি দেখতে চেয়েছিলাম, এখন দেখতে পাচ্ছি, খুব আনন্দ হচ্ছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.