সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিকিনি পরার শাস্তি চাকরি থেকে বরখাস্ত? সেন্ট জেভিয়ার্সের ইংরেজি অধ্যাপিকাকে বরখাস্তের ঘটনা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় তুমুল আলোচনা। সেন্ট জেভিয়ার্সের এমন পদক্ষেপের নিন্দা করে মুখ খুলেছেন, সেলিব্রিটিরাও। তবে সোজাসুজি না বলে, ব্যঙ্গের ছলে জেভিয়ার্সের ঘটনার তীব্র নিন্দা করলেন জনপ্রিয় সঞ্চালক ও অভিনেতা মীর আফসার আলি। ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখলেন, যখন কলেজে পড়তাম অনেকে আমার ইংলিশ শুনে বলতেন, ‘জেভিয়ার্স রাইট? আমি বলতাম, না বে…উমেশ চন্দ্র’।
প্রসঙ্গত, শুধুমাত্র বিকিনি পরে ছবি পোস্ট করার অভিযোগে চাকরি থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য করা হয়েছিল অধ্যাপিকাকে। শুধু তাই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘মুখ পোড়ানো’ হয়েছে বলে তাঁর কাছ থেকে ৯৯ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ হিসাবে দাবি করা হয়েছিল বলেও জানিয়েছেন ওই অধ্যাপিকা। সমস্ত ঘটনা নিয়ে এবার আইনি লড়াই শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। কলকাতা হাইকোর্টে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে মামলা দায়ের করবেন বলে জানিয়েছেন অধ্যাপিকা।
জানা গিয়েছে, ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে এক পড়ুয়া ওই অধ্যাপিকার ছবি দেখেছিল। তারপরেই পড়ুয়ার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে তলব করা হয় অধ্যাপিকাকে। কেন বিকিনি পরে ছবি পোস্ট করেছেন তিনি, সেই প্রশ্নের জবাবদিহি করতে হয়। প্রসঙ্গত, সেন্ট জেভিয়ার্স ইউনিভার্সিটিতে যোগ দেওয়ার আগে ওই ছবিগুলি ইনস্টা স্টোরিতে দিয়েছিলেন, যা মাত্র ২৪ ঘণ্টার জন্য দেখা যায়। তাছাড়াও তাঁর ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট ‘প্রাইভেট’ করা রয়েছে অর্থাৎ যে কেউ চাইলেই তাঁর ছবি দেখতে পারেন না।
সমস্ত কথা বিশ্ববিদ্যালয় (St. Xaviers University) কর্তৃপক্ষকে জানালেও তাঁর কথা শুনতে রাজি ছিল না কেউই। অধ্যাপিকাকে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা হয়, সেই সঙ্গে চাকরিতে ইস্তফা দিতে বাধ্য করা হয়। অক্টোবর মাসে চাকরি ছেড়ে দেন ওই অধ্যাপিকা। প্রসঙ্গত, তিনি নিজেও সেন্ট জেভিয়ার্সের প্রাক্তনী। তিনি জানিয়েছেন, চলতি বছরের মার্চ মাসে ফের বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে তাঁকে নোটিস পাঠানো হয়। সেখানে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের অবমাননা করার ক্ষতিপূরণ হিসাবে তাঁকে ৯৯ কোটি টাকা জরিমানা দিতে হবে।
ওই অধ্যাপিকা (St. Xaviers Professor) জানিয়েছেন, বারবার পুলিশের দ্বারস্থ হয়েও কোনও ফল হয়নি। শেষ পর্যন্ত ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। গোটা ঘটনায় তাঁর পরিবার খুবই ভেঙে পড়েছে বলে জানিয়েছেন অধ্যাপিকা। এমনকি মামলা লড়ার খরচ জোগাড় করতেও অন্যদের কাছে হাত পাততে হচ্ছে তাঁকে। চাকরি চলে যাওয়ার পরে বাড়ির খরচ চালাতে হিমসিম খাচ্ছেন তিনি। অসুস্থ বাবা-মায়ের চিকিৎসাও থমকে রয়েছে। অধ্যাপিকা মূলত বাবার কথাতেই সেন্ট জেভিয়ার্সে চাকরি নিয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছে। গোটা ঘটনার পরে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন তরুণী অধ্যাপিকার বাবাও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.