নির্মল ধর, মিগুয়েল দ্য আলেন্দে: ক্যাথলিক ধর্মটা মেক্সিকানদের রক্তে। যিশুখ্রিস্টে ভক্তি এদের প্রতিটি পা ফেলায়। না, সেই জন্য এরা কখনও উদগ্র ফ্যানাটিক নয়। এদের আবার সন্ত ভজনের অন্ত নেই। গির্জা এদের কাছে জীবনের পবিত্রতম স্থান। সেটা মেক্সিকো শহরেই দেখেছিলাম দু’দিন আগে। আজও দেখলাম গুয়ানাহুয়াতো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের মূল অনুষ্ঠান বসল শহরের সবচেয়ে বড় গির্জা ইগলাসিয়াসের চত্বরে, ভিতরে নয়।
[আরও পড়ুন: বিয়ের পর প্রথম ছবির কাজ সাংসদ নুসরত জাহানের, আগস্টে শুরু শুটিং]
মনে পড়ছে, ক’বছর আগে আর্মেনিয়াতে দেখেছিলাম ফিল্ম উৎসব শুরুর আগে গির্জার প্রধান পাদ্রির কাছ থেকে উৎসব পরিচালককে আশীর্বাদ নিতে। তবে না, এখানে তেমনটি হয়নি। চত্বরটির নাম জার্দিন প্রিন্সিপাল। এখানেই শহরের সাংস্কৃতিক সচিব, প্রবীণ জাতীয় অভিনেতা হোসে কার্লোস রুইকে আলোকোজ্জ্বল অভ্যর্থনা দিয়ে শুরু হল ২২তম গুয়ানাহুয়াতো উৎসব। এবারের উৎসবের প্রধান আকর্ষণ আমেরিকান পরিচালক গুস্তভন সন্ত এবং অভিনেতা নিকোলাস পেজের উপস্থিতি। তবে সবাই মুখিয়ে আছেন এ বছরের অস্কার জয়ী অভিনেত্রী ‘রোমা’ ছবির মেক্সিকান নায়িকা ইয়ালিৎজা আপ্রাচিওকে দেখার জন্য। ২১ জুলাই উৎসবের আরেকটি কেন্দ্র অ্যাঞ্জেলা পেরলাতা থিয়েটারে তিনি দর্শকের মুখোমুখি হবেন ঘণ্টাখানেকের জন্য। এই মুহূর্তে আপ্রিচিওই যেন মেক্সিকান সিনেমার ‘মুখ’। আন্তর্জাতিক ফিল্ম ও প্রতিযোগিতার পাশাপাশি মেক্সিকান সিনেমার প্রতিযোগিতাও চলছে।
[আরও পড়ুন: ইডির দপ্তরে তারকাদের বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে: মমতা]
এবারের উৎসবের ফোকাস কান্ট্রি ফিলিপিন্স, দুটি দেশের বড় যোগসূত্র হল একসময় দুটি দেশই ছিল স্প্যানিশ কলোনি। সিনেমার পাশাপাশি গান এবং খাবার-দাবারের প্রদর্শনী এসেছে ফিলিপিন্স থেকে। একটি সন্ধ্যা বরাদ্দ আছে গানের জন্যও। আসলে সন্ধ্যায় গির্জা চত্বরে বসে বুঝতে পারছিলাম, এই ফিল্ম উৎসব শুধু ফিল্মের জন্য নয়। শহরের মানুষদের কাছে এক মেলার মতো। আলেন্দে শহরে সিনেমা কমপ্লেক্স মাত্র একটি। সুতরাং এই উৎসবই যেন এক সামাজিক মেলা! নাচ-গান-খাওয়া আর ছোট-বড় সব্বার উপস্থিতিতে এক সন্ধ্যা কাটানোর উত্তেজনা। শহরের অধিকাংশ গলিতে এখন গাড়ি চলাচল বন্ধ, বিশেষ করে উৎসব এলাকায়। এই মিগুয়েল দ্য আলেন্দে শহরে উৎসব চলবে ২৩ তারিখ পর্যন্ত। চব্বিশ থেকে ষাট মাইল দূরের শহর গুয়ানাহুয়াতোয়। সমাপ্তি ওখানেই। মাত্র একজন মহিলার নেতৃত্বে এই উৎসব হয়ে চলেছে বাইশ বছর ধরে। চিন-জাপান-কোরিয়া এবং আমেরিকা তো বটেই, সব্বাইকে হাজির করেছেন তিনি। গত বছরই মেক্সিকান সিনেমাথেকের ব্যবস্থায় সত্যজিৎ রায় রেট্রোস্পেকটিভ হয়েছিল। উৎসবের এক কর্মী বললেন, সত্যজিতের ছবি আর রবীন্দ্রনাথ পড়ে আমি কলকাতার ভক্ত হয়েছি। এবার ভারত গেলে আমার প্রথম গন্তব্য কলকাতা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.