‘হাসি-কান্না হিরা-পান্না’য় শেষ হচ্ছে আরও একটা বছর। বিগত হতে চলা ২০২৪ সালে শিরোনামে কখনও উঠে এসেছে বেদনাদায়ক ঘটনা কখনও বা সুখস্মৃতি। সাতপাকে বাঁধা পড়েছেন অনেকেই। কারা কারা জীবনের নতুন ইনিংস শুরু করলেন, চলুন তা ফিরে দেখা যাক।
অনন্ত-রাধিকা
কলেজ জীবন থেকে প্রেম। পরিণতি হল চলতি বছর। একেবারে বিগ ফ্যাট ওয়েডিং বলতে যা বোঝায় আর কী! প্রাক বিবাহ অনুষ্ঠানের পর গত ১২ জুলাই সাতপাকে বাঁধা পড়েন দুজনে। আম্বানিপুত্রের বিয়েতে বসেছিল চাঁদের হাট। আমন্ত্রিতদের তালিকায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যেমন ছিলেন, তেমনই ছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। বলিউডের তারকারাও বিয়ে উপস্থিত ছিলেন। আবার সাধুসন্তরাও নবদম্পতিকে আশীর্বাদ করেন।
কাঞ্চন-শ্রীময়ী
পিঙ্কির সঙ্গে কাঞ্চন মল্লিকের তাল কেটেছিল আগেই। মনের শূন্যস্থান দখল করেছিলেন শ্রীময়ী। ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রেমদিবসে আইনি বিয়ে সেরে ফেলেন দুজনে। ১৭ ফেব্রুয়ারি শুভদৃষ্টি, মালাবদল, সিঁদুরদান। সাতপাকে বাঁধা পড়ে দুটি মন। বিয়ের পর থেকে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন তাঁরা। টলিউড লাভ বার্ডসের হানিমুন, সংসার নিয়ে শুরু হয় জোর চর্চা। তারই মাঝে সকলকে অবাক করে বিয়ের সাড়ে আট মাসের মাথায় দ্বিতীয়বার বাবা হন কাঞ্চন। শ্রীময়ীর কোল আলো করে আসে কন্যাসন্তান। আপাতত মেয়েকে নিয়ে সময় কাটছে কাঞ্চন-শ্রীময়ীর।
সোনাক্ষী সিনহা-জাহির ইকবাল
লোকসভা নির্বাচনে জয়ের পর শত্রুঘ্ন সিনহার বাড়িতে বাজে সানাই। জীবনের নতুন ইনিংস শুরু করেন সোনাক্ষী সিনহা। জাহির ইকবালের সঙ্গে কাগুজে বিয়ে সারেন তিনি। চেনা পরিচিত ফ্যাশনের ছক ভেঙে দুধসাদা পোশাকে সেজে ওঠেন বলি কাপল। সোনাক্ষী-জাহিরের বিয়ের খবর প্রকাশ্যে আসতেই শোনা গিয়েছিল শত্রুঘ্ন নাকি এই বিষয়ে বিন্দুবিসর্গ কিছুই জানেন না! তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছিল, এই প্রজন্মের সন্তান কারও অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন মনে করে না। ওরা শুধু নিজেদের সিদ্ধান্ত জানায়। জামাইকে ‘গুড বয়’ সার্টিফিকেট দিয়ে গুঞ্জনে জল ঢালেন শত্রুঘ্ন।
সোহিনী-শোভন
কলকাতা থেকে দূরে বাওয়ালি ফার্মহাউসে সেজে উঠেছিল বিবাহবাসর। সুরেলা সন্ধ্যায় কাছের বন্ধু, আত্মীয়দের উপস্থিতিতে গত ১৫ জুলাই জীবনের নতুন ইনিংস শুরু করেন সোহিনী ও শোভন। বিয়ের বছরখানেক আগে বর্ষায় যিশু সেনগুপ্ত রবীন্দ্রসন্ধ্যার আয়োজন করেন। সেখানেই আলাপ হয় দুজনের। তারপর মন বিনিময়। সিঁদুরদান, মালাবদলের জুটি বাঁধেন গায়ক ও অভিনেত্রী।
অনুপম-প্রস্মিতা
২০১৫ সালে পিয়া চক্রবর্তীকে বিয়ে করেছিলেন অনুপম রায়। ৬ বছরের মাথায় বিচ্ছেদের ঘোষণা। এর পর ২০২৩ সালে নভেম্বরে টলিউডের মোস্ট এলিজেবল ব্যাচেলর পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে অনুপমের প্রাক্তন পিয়া বিয়ে সারেন। গত ২ মার্চ, রেজিস্ট্রি বিয়ে সারেন প্রস্মিতার সঙ্গে সাতপাকে বাঁধা পড়েন অনুপম ও প্রস্মিতা। গানের দুনিয়ার দুই মানুষের মন দেওয়া নেওয়া যে কবে হল, নিজেদের তা মনে করতে পারেন না।
অদিতি রাও হায়দারি-সিদ্ধার্থ
মার্চেই হয়ে গিয়েছিল আংটি বদল। গত ১৬ সেপ্টেম্বর দক্ষিণী রীতি মেনে বিয়ে করেন অদিতি-সিদ্ধার্থ। দুজনেরই দ্বিতীয় বিয়ে এটি। ২০১২ সালে সত্যদীপ মিশ্রার সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছিলেন অদিতি। অন্যদিকে ২০০৩ সালে অভিনেত্রী মেঘনাকে বিয়ে করেন সিদ্ধার্থ। কিন্তু সে সম্পর্ক বেশিদিন টেকেনি। ২০০৯ সালে ভেঙে যায় সেই বিয়ে। তার পর থেকেই অদিতি রাও হায়দারির সঙ্গে প্রেমের শুরু সিদ্ধার্থর। এমনকী, গুঞ্জনকে পাত্তা না দিয়ে একসঙ্গে সোশাল মিডিয়ায় ছবিও পোস্ট করেন সিদ্ধার্থ। তবে অদিতির সঙ্গে প্রেম নিয়ে কখনও মুখ খোলেননি তিনি।
নাগা চৈতন্য-শোভিতা ধুলিপালা
তেলুগু রীতিনীতি মেনে গত ৪ ডিসেম্বর বিয়ে সারেন নাগা চৈতন্য ও শোভিতা ধুলিপালা। দুজনের পোশাকে ছিল দক্ষিণী ঐতিহ্যের ছোঁয়াও। বিয়ের পোশাক হিসেবে নাগা বেছে নিয়েছিলেন ঘিয়ে রঙের পাঞ্জাবি, সাদা ধুতি এবং লাল পাড়ের সাদা ওড়না। অন্য দিকে, শোভিতা পরেছিলেন সোনালি রঙের কাঞ্জিভরম শাড়ি। সঙ্গে মাথায় চওড়া সোনার মাথাপট্টি, হাতে সোনার চুড়ি, বালা এবং গলায় ভারী সোনার গয়না। জনপ্রিয় অন্নপূর্ণা স্টুডিওতে বসে বিয়ের আসর।
পুলকিত-কৃতী
গত জানুয়ারি মাসে আচমকাই বাগদান সেরে ফেলেছিলেন পুলকিত সম্রাট ও কৃতী খরবন্দা। তার ঠিক মাসদুয়েক পর গত ১৫ মার্চ, একেবারে ঘনিষ্ঠ আত্মীয়-স্বজনদের সাক্ষী রেখেই সাতপাকে বাঁধা পড়েন তাঁরা। গুঁরগাওয়ের এক বিলাসবহুল হোটেলে বসেছিল পুলকিত-কৃতীর বিয়ের আসর। ফুলেল সাজে সেজে উঠেছিল ছাদনাতলা। এই বিশেষ দিনের জন্য কনে কৃতী বেছে নিয়েছেন গোলাপি লেহেঙ্গা। আর বর পুলকিতকে দেখা গেল কনট্রাস্ট পেস্তা রঙের পাঞ্জাবিতে।
রাকুলপ্রীত-জ্যাকি ভাগনানি
তিন বছরের প্রেমের শুভ পরিণয়। ২১ ফেব্রুয়ারি গোয়ায় তারকাখচিত অনুষ্ঠানে বলিউড প্রযোজক তথা অভিনেতা জ্যাকি ভাগনানিকে বিয়ে করেন রাকুলপ্রীত সিং। তরুণ তাহিলিয়ানির ডিজাইন করা গোলাপি পোশাকে বিয়ের দিন সেজেছিলেন অভিনেত্রী। প্রযোজক-অভিনেত্রীর বিয়ে যখন, তখন ফিল্মি কেত তো থাকবেই। রাকুলপ্রীত-জ্যাকির ক্ষেত্রেও তার অন্যথা হল না। বন্ধু-পরিবারকে সাক্ষী রেখে পড়ন্ত বিকেলের নরম রোদে এক হয় চারহাত।
রূপাঞ্জনা-রাতুল
পরনে লাল বেনারসি। গলায় গোলাপ ফুলের মালা। অন্যদিকে ধুতি-চাদরে বর বেশে রাতুল। শুভদৃষ্টিতে রূপাঞ্জনা একেবারে লাজুক কনে। গোধূলি লগ্নে পান সরিয়ে রাতুলকে দেখতেই রূপাঞ্জনার জীবনে নতুন রূপকথার শুরু। যে পান সরিয়ে রাতুলকে তিনি দেখলেন, অভিনবত্ব ছিল সেই পানেও। পান পাতায় আঁকা সঙ্গে লেখা শুভবিবাহ। ঠিক এভাবেই গত ১৯ এপ্রিল কলকাতার পাঁচতারা হোটেলে বিয়ে সারেন রূপাঞ্জনা ও রাতুল। তার আগে ফেব্রুয়ারি দার্জিলিংয়ে বাগদান সারেন দুজনে।
আদৃত-কৌশাম্বি
‘মিঠাই’ সিরিয়ালের সেটে মন দেওয়া নেওয়া। রিল লাইফে দিদি ও ভাই ছিলেন দুজনে। রিয়েল লাইফে বদলে গেল সম্পর্ক। ভাইবোন থেকে দম্পতি দুজনে। অগ্নিসাক্ষী রেখে বাংলা টেলিভিশনের ‘উচ্ছেবাবু’র সঙ্গে চারহাত এক হয় কৌশাম্বি চক্রবর্তীর।
রূপসা-সায়নদীপ
শারদোৎসবের আবহেই মনের মানুষ সায়নদীপ সরকারকে নিয়ে ছাদনাতলায় বসেছিলেন রূপসা চট্টোপাধ্যায়। অক্টোবরের ৩ তারিখ, গোধূলি লগ্নে অগ্নিসাক্ষী রেখে সারাজীবন একসঙ্গে পথ চলার অঙ্গীকার করেন তাঁরা। বিয়ের মাস ঘুরতেই সুখবর শোনান রূপসা। মাতৃত্বের লাবণ্যে পরিপূর্ণ রূপসা আপাতত সন্তানের অপেক্ষায় দিন কাটাচ্ছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.