সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উৎসবের মরশুমে মরাত্মক আতঙ্ক মুম্বইয়ে। গুলি করে খুন মুম্বইয়ের দাপুটে কংগ্রেস নেতা বাবা সিদ্দিকি। যার জেরে তোলপাড় বলিউড় ইন্ডাস্ট্রিতেও। আর সেই সিদ্দিকি মার্ডার মামলার সঙ্গেই ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গেল সলমন খানের নাম। কারণ ভাইজানঘনিষ্ঠ ছিলেন সিদ্দিকি। কে বা কারা খুন করল? সেই প্রশ্নে যখন জেরবার মুম্বই প্রশাসন, তখন সোশাল মিডিয়া পোস্টে খুনের দায়স্বীকার করল লরেন্স বিষ্ণোই (Lawrence Bishnoi) গ্যাং। শুধু তাই নয়। তাদের দাবি, ‘সলমন খানের (Salman Khan) সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার জেরেই খুন হতে হল বাবা সিদ্দিকিকে (Baba Siddique)।’ যে পোস্টের সত্যতা খতিয়ে দেখছে আপাতত মুম্বই পুলিশ।
ঠিক কী লেখা ছিল ওই পোস্টে? লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাংয়ের পোস্টে উল্লেখ করা, “ওম জয় শ্রীরাম, জয় ভারত। আমি জীবনের মর্ম বুঝি, সম্পদ ও দেহকে ধূলো বলে মনে করি। তাই বন্ধুত্বের কর্তব্যকে সম্মান জানিয়ে যা ঠিক তাই করেছি। সলমান খান, আমরা এই যুদ্ধ চাইনি কিন্তু আপনার জন্য আমাদের ভাইকে প্রাণ হারাতে হয়েছে। আজ বাবা সিদ্দিকের ভদ্রতা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এক সময়ে তিনি মহারাষ্ট্র কন্ট্রোল অফ অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যাক্ট-এর অধীনে ছিলেন দাউদের সঙ্গে। কারণ। বলিউড, রাজনীতি এবং দাউদের সঙ্গে মিলে সম্পত্তি বাড়ানোর যোগসূত্রই তার মৃত্যুর জন্য দায়ী। এবং অনুজ থাপনের সাথে তার যোগসূত্র ছিল। কারও সঙ্গে আমাদের ব্যক্তিগত শত্রুতা নেই। তবে কেউ যদি সলমান খান বা দাউদ গ্যাংকে সাহায্য করে, তাহলে তাকে প্রস্তুত থাকতে হবে। কেউ যদি আমাদের কোনও ভাইকে খুন করে, আমরা জবাব দেবই। আমরা কখনোই প্রথমে আক্রমণের পথে হাঁটিনি। জয় শ্রী রাম, জয় ভারত, শহিদদের প্রণাম।” অতঃপর বিষ্ণোই গ্যাংয়ের তরফে যে আবারও সলমন খানকেই হুমকি বার্তা দেওয়া হয়েছে, তা বলাই বাহুল্য।
সেই কৃষ্ণসার হরিণ হত্যামামলা থেকেই সলমনের সঙ্গে বিষ্ণোই গ্যাংয়ের শত্রুতার সূত্রপাত। দীর্ঘকাল ধরে তাদের তরফে ভাইজানকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। চলতি বছরেও ভাইজানের বাড়ির সামনে গোলাগুলি করে তাদের দুষ্কৃতিরা। তারপর থেকে সলমন খানের নিরাপত্তা আরও বাড়িয়ে দেয় মুম্বই পুলিশ প্রশাসন। এদিকে বাবা সিদ্দিকির খুনের পর সলমনের উদ্দেশে করা বিষ্ণোই গ্যায়ের হুমকি বার্তার পর ভাইজানের নিরাপত্তা আরও একধাপ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এদিন ‘বিগ বস ১৮’-র শুটিং বাতিল করে সিদ্দিকির বাড়িতে ছুটে গিয়েছিলেন সলমন। বলিউড সুপারস্টারের গ্যালাক্সির বাইরেও নিরাপত্তা আরও জোরদার হয়েছে।
শনিবার রাতে পূর্ব বান্দ্রায় দশেরার বাজি ফাটাচ্ছিলেন বাবা সিদ্দিকি। সিদ্দিকির ছেলে জিশান সিদ্দিকি বিধায়ক। তাঁর দপ্তরের সামনেই ছিলেন বর্ষীয়ান নেতা। আচমকাই সেখানে হাজির হয় তিন দুষ্কৃতী। তারা লাগাতার গুলি চালাতে থাকে। মোট তিন রাউন্ড গুলি চলে। অন্তত ছটি গুলি ফুঁড়ে দেয় বাবার শরীর। ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন তিনি। দুজন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হলেও তৃতীয় অভিযুক্ত পালিয়ে যায়। এর পর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় রক্তস্নাত বাবা সিদ্দিকির। পুলিশ সূত্রে খবর, বাবা সিদ্দিকিকে খুনের প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল মাসখানেক আগেই। গত ২৫-৩০ দিন ধরে রেইকি করে তারা। শেষপর্যন্ত, শনিবার রাতে গুলি করে খুন করে বাবা সিদ্দিকিকে। প্রাক্তন মন্ত্রী তথা এনসিপি-র দাপুটে নেতার এমন মর্মান্তিক পরিণতির পর মায়ানগরী বেশ থমথমে। এই সিদ্দিকির জন্যই একসময়ে শাহরুখ-সলমনের দ্বন্দ্ব মিটেছিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.