সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হেতাল পারেখ ধর্ষণ ও হত্যা মামলা। বহুল চর্চিত ও বিতর্কিত। ধারে ভারে, মামলার গতিপ্রকৃতিতে এবং বিতর্কেও। অভিযুক্ত নিরাপত্তারক্ষী ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের ফাঁসি কিছু প্রশ্ন তুলে দিয়েছিল। যা আজও অমীমাংসিত। পরবর্তীকালে তা নিয়ে লেখালেখিও হয়েছে বিস্তর। তবে সম্প্রতি গোটা শহরে সাড়া ফেলে দিয়েছে অরিন্দম শীলের ছবি ‘ধনঞ্জয়’। কল্পনাশ্রিত বলে স্বীকারোক্তি দেওয়া থাকলেও এ ছবি ধনঞ্জয়ের ঘটনারই পুনর্নির্মাণ, তা বুঝতে অসুবিধা হয় না। পরিচালক তা গোপনও করেননি। বিভিন্ন সাক্ষাকারে এই ঘটনার কিছু ব্যাপারে নিয়ে তাঁর অসন্তোষের কারণ ব্যক্ত করেছেন. ফলত কিছু প্রশ্নও ফের উঠেছে। কলকাতা পুলিশের তদন্তে অসঙ্গতি নিয়ে যে সম্ভাবনা উসকে দেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে পুলিশের কাছে জবাব চেয়েছেন অনেকেই। তাতে কী জবাব কলকাতা পুলিশের?
[ ‘ধনঞ্জয়’ সেলুলয়েডে এল, কাজের কাজ কিছু হল কি? ]
সম্প্রতি এ নিয়ে মুখ খুলেছে কলকাতা পুলিশ। নিজেদের ফেসবুক পেজে এ ব্যাপারে জানানো হয়েছে তাদের মত। ইতিমধ্যেই জনপ্রিয় হয়েছে কলকাতা পুলিশের এই পেজ। রহস্য রবিবার-এর তদন্তের কিনারা মন কেড়েছে শহরবাসীর। তদুপরি ঝরঝরে ভাষা ও সাহিত্যরস টেনেছে বাড়তি মুগ্ধতা। যে পুলিশকে নিয়ে শহরবাসীর নানা অভিযোগ, সেই পুলিশের পেজ যেন অনেক অভাব-অভিযোগ মিটিয়ে দিচ্ছে। কলকাতা পুলিশের প্রতি আস্থা ফেরাচ্ছে। ফেরাচ্ছে ভাবমূর্তি। এই পেজেই এবার জবাব দেওয়া হল সমস্ত প্রশ্নের।
ছবিতে যেভাবে তদন্তপ্রক্রিয়া দেখানো হয়েছে, তাতে তদন্তে অসঙ্গতি নিয়ে প্রশ্ন ওঠাই স্বাভাবিক। পরিচালক হয়তো সেই বিকল্প সম্ভাবনার দরজাগুলিই খুলে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এ নিয়ে যাবতীয় অভিযোগের জবাবে পুলিশ জানিয়েছে, যেহেতু ছবির গোড়াতেই পরিষ্কার করে দেওয়া হয়েছে যে এ ছবি কল্পনা আধারিত, তাই কোনওরকম সংঘাতে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। পুলিশের বক্তব্য, ‘আমরা কল্পনার সঙ্গে সংঘাতে যাব না। যেতাম, যদি বিকল্প তত্ত্বটি নিছক সম্ভাবনা হিসেবে তুলে না ধরে কোনও প্রচারমাধ্যমে পেশ করা হতো ধ্রুবসত্যের দাবিতে। যেতাম, যদি আদালত নির্দেশ দিত তথাকথিত অসঙ্গতিগুলির কাটাছেঁড়ার। বস্তুত, দেশের সর্বোচ্চ আদালত সহ তিনটি আদালত যখন পুলিশের পেশ করা সমস্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ দীর্ঘদিন ধরে বিচার করে সিদ্ধান্তে এসেছেন চরম শাস্তিদানের এবং মাননীয় রাষ্ট্রপতিও যখন সহমত হয়েছেন মৃত্যুদণ্ডেই , সেই সব নথিবদ্ধ সাক্ষ্যপ্রমাণ নিয়ে প্রকাশ্য চাপানউতোর সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে আদালত-অবমাননারই নামান্তর। আইনরক্ষক হিসেবে সে রাস্তায় পদার্পণ শুধু অনৈতিকই নয়, অন্যায্যও বটে। কল্পনা কল্পনায় থাকুক, বাস্তব বাস্তবে।’
কল্পনা ও বাস্তবের বৃত্তগুলি আলাদা, নিশ্চিতই। তবু তাদের দেখা হলে কোথাও একটি ধূসর অংশ জেগে ওঠে। সম্ভাবনার। সেখানেই থেকে গেল অরিন্দমের ধনঞ্জয়। হয়তো ছবির সাফল্য সেখানেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.