ইন্দ্রনীল শুক্লা : বইমেলার পর এবার কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসব (KIFF 2024) থেকেও ব্রাত্য বাংলাদেশ! ওপার বাংলার পালাবদল এবং সে দেশে হিন্দু নীপিড়নের কারণে বাংলাদেশ নিয়ে যেভাবে উত্তাল হয়েছে বিশ্ব রাজনীতি, সেই পরিস্থিতিতে কলকাতা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে বাংলাদেশের ছবি ঠাঁই না পাওয়ার ঘটনা নজর কেড়েছে সিনেপ্রেমীদের। প্রতিবারই নিয়ম করে ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের নানান বিভাগে বাংলাদেশের ছবির জনপ্রিয়তা নজরে পড়ে। বাংলাদেশের পরিচালক, অভিনেতা-অভিনেত্রীদের আনাগোনাও নন্দন চত্বরে দেখা যায়। এই ফেস্টিভ্যালেই জয়া আহসান, চঞ্চল চৌধুরী, মুশারফ করিমদের মতো পদ্মাপারের দক্ষ শিল্পীদের নিয়ে উন্মাদনা দেখা গিয়েছে। কিন্তু এবার যে চিত্রটা অন্যরকম হতে চলেছে তা বেশ স্পষ্ট। বাংলাদেশের অশান্ত পরিস্থিতির জন্যই কি ওপার বাংলার ছবি জায়গা পেল না ফেস্টিভ্যালে? এই বিষয়ে অবশ্য মুখ খুলতে চাননি কেউই।
তবে শুধুই ফেস্টিভ্যালে বাংলাদেশ ব্রাত্য থাকার ঘটনা নয়। এবার যেন বাংলার এই জনপ্রিয় চলচ্চিত্র উৎসব আগের তুলনায় অনেকটাই জৌলুসহীন। যার আঁচ পাওয়া গেল শুক্রবারের সাংবাদিক বৈঠকেই। যেখানে প্রতিবার উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে জাঁকজমকের একটা ঝলক দেওয়া হয় এই বৈঠকে। তবে এবার মেজাজ ছিল একেবারেই ভিন্ন। শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করেই বৈঠক শেষ হল। এমনকী, প্রতিবারের মতো টলিউডের পরিচিত মুখের আনাগোনাও ছিল না। সূত্রের খবর, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও তেমন কোনও চমক থাকছে না এবছর। নামমাত্র অনুষ্ঠানেই নাকি শুরু হবে KIFF। নেপথ্যে কি শহরে একের পর এক ঘটনার ঘনঘটা?
গত কয়েকমাসে এশহর দেখেছে অভয়ার প্রতিবাদ। দেখেছে রাতদখল। আর জি কর কাণ্ডে গোটা শহরের গর্জে ওঠা। রাস্তায় বসে জুনিয়ার চিকিৎসকদের অনশনের ছবি এখনও স্পষ্ট শহরবাসীর চোখে। অনেকের মতে, হয়তো তিলোত্তমার প্রতিবাদের ঝড়ের প্রভাব ৩০তম ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে পড়েছে। তবে এখানেই শেষ নয়, গত কয়েক মাসে শাসক দলের সঙ্গে বার বার টলিপাড়ার সংঘাত বেঁধেছে। এমনকী, পরিচালক রাহুল মুখোপাধ্যায়ের ছবি ঘিরে টলিপাড়ার ফেডারেশন বনাম পরিচালকদের বিরোধ নবান্ন পর্যন্ত পৌঁছেছিল। গুঞ্জনে রয়েছে, টলিউডের একাংশ এই বিরোধের কারণেই ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল নিয়ে খুব একটা ভাবিত নন। এসব ঘটনার ফলেই কি এবার খানিক ম্লান কলকাতা ফিল্ম উৎসব? এর উত্তর অবশ্য অধরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.