সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘পাঠান’ (Pathaan) জ্বরে কাবু গোটা দেশ। প্রথম দিনেই পঞ্চাশ কোটির ব্যবসা করবে শাহরুখের (Shahrukh Khan) কামব্যাক ছবি, এমনই আশা বিভিন্ন মহলে। কিন্তু ‘পাঠান’ নিয়ে বলিউডের দাদাগিরিতে আপত্তি রয়েছে পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের (Kaushik Ganguly)। তাঁর অভিযোগ, মুম্বইয়ের ডিস্ট্রিবিউটররা হুলিয়া জারি করে সিনেমা হলের সমস্ত শোয়ের দখল নিচ্ছে। আর তার পরিণাম ভুগতে হচ্ছে বাংলা সিনেমাকে।
গত শুক্রবার সিনেমা হলে মুক্তি পেয়েছে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় পরিচালিত-অভিনীত ‘কাবেরী অন্তর্ধান’। ছবিতে মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়। ফেসবুক লাইভে কৌশিক জানান, সিনেমা কর্মী হিসেবে ‘পাঠান’ ও শাহরুখ খানের সাফল্য তিনি কামনা করেছেন। ভোর পাঁচটায় ‘পাঠান’-এর শো দিলেও হাউসফুল হবে। কিন্তু মুম্বইয়ের ডিস্ট্রিবিউটররা শর্ত দিয়েছেন, ‘পাঠান’ সিনেমা নিতে গেলে সমস্ত শোয়ের জন্য নিতে হবে, অন্য কোনও সিনেমাকে শো দেওয়া যাবে না। এতেই ক্ষিপ্ত কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়।
কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় জানান, ‘পাঠান’-এর মতো বড় সিনেমাকে ছেড়ে দেওয়া বাংলার ডিস্ট্রিবিউটর বা হল মালিকদের পক্ষে সম্ভব নয়। তবুও কিছু হলের মালিক প্রতিবাদ জানিয়ে ‘পাঠান’ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁদের ধন্যবাদ জানান পরিচালক। ‘পাঠান’-এর মতো সিনেমা সারা দেশে ১০ হাজারের মতো সিনেমা হল পেতে পারে। কিন্তু বাংলা সিনেমা মোটে ৪০ থেকে ৫০টি হল পায়। তাও যদি দখল হয়ে যায় বাংলা পরিচালক-প্রযোজকরা কি রেঙ্গুন বা বেজিংয়ে দিয়ে সিনেমা দেখাবে? প্রশ্ন তোলেন কৌশিক।
পরিচালক জানান, এমনটা মহারাষ্ট্র বা দাক্ষিণাত্যে হয় না। শুধুমাত্র বাংলা সহনশীল বলেই সম্ভব। “সহনশীলতা নিয়ে বাঙালির গর্ব। কিন্তু এটা দুর্বলতা হতে পারে না। সহনশীলতা আতঙ্কের মতো হয়ে যাচ্ছে। পাঁচ-সাত দিনের জন্য বাংলা ছবির অবস্থা খারাপ হবে। একটু সতর্ক থাকবেন। ফিক্স টাইম থাকছে না। খুব ছোট হল বরাদ্দ। নিজের রাজ্যেও যশরাজ এটা করতে পারবে না। সারা বছর কষ্ট করতে পারলে একটা দিন পারব না! আপনারা দেখলে বাংলা ছবি থাকবে”, বলেন কৌশিক।
একটা সপ্তাহ আগ্রহী দর্শকদের ধৈর্য ধরতে বলেন কৌশিক। পরিচালক জানান, বলিউডের একটা ঘাগরা-চোলির দামে এখানকার তিনটে সিনেমা হয়ে যায়। বাংলায় ১ থেকে ২ কোটি টাকায় সিনেমা তৈরি হয়ে যায়। এর থেকে বেশি টাকা ওখানকার ক্যামেরাম্যান পান।
পরিচালক জানান, প্রশাসন হয়তো ব্যবস্থা নেবে। কমিটি নয়, ব্যবস্থা প্রয়োজন। এগুলো ঠিক করে করতে পারলে ভদ্রভাবে বাংলা ছবি চালানো যায়। “দ্রুত পাঠান দেখে নিন, তারপর যে বাংলা ছবি ভাল লাগে তা দেখুন। ঘরই না পাওয়া যায় মানুষকে ঘুরে বেড়াতে হয়। আমরা কিন্তু রাস্তায় এসে দাঁড়িয়েছি আজ। পলিসি থাকা দরকার। কেউ হয়তো শুনবেন। আমার সরকারের উপর পূর্ণ আস্থা আছে।”
ফেসবুক ভিডিওয় কৌশিকের এই বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়েছেন অভিনেতা সাহেব ভট্টাচার্য। ক্যাপশনে অভিনেতা লিখেছেন, “বাংলায় বলিউডের দাদাগিরি বিরুদ্ধে আমি রুখে দাঁড়াবার অঙ্গীকার নিলাম। বাংলার মাটিতে বাংলা ছবিকে আটকানো যাবে না। এটা আমাদের অস্তিত্বের লড়াই।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.