সন্দীপ্তা ভঞ্জ: ১৪৪ বছরের মহাযোগ শেষ হতে চলেছে শিবরাত্রির পুণ্যতিথিতে। আর সেই দিনই মহাকুম্ভের (Maha Kumbha 2025) সমাপ্তি। তার প্রাক্কালেই স্বামী কাঞ্চন মল্লিককে নিয়ে প্রয়াগরাজে পৌঁছে গিয়েছেন শ্রীময়ী চট্টরাজ। ঝটিকা সফর। তাই সঙ্গে মেয়ে কৃষভি নেই। সে কলকাতায় দিদার তত্ত্বাবধানে। শুক্রবার রাত দেড়টায় বারাণসি পৌঁছেছেন কাঞ্চন-শ্রীময়ী (Kanchan Mullick, Sreemoyee Chattoraj)। সেখান থেকে জানালেন, “ভায়া মির্জাপুর হয়ে সেখান থেকে প্রয়াগরাজে পৌঁছতে শনিবার সকাল গড়িয়ে যায়।” সকাল ন’টা নাগাদ ত্রিবেণী সঙ্গমে আস্থার ডুব দিলেন টলিউডের তারকাদম্পতি। মহাকুম্ভ সফরের অভিজ্ঞতা কেমন? ফেরার পথে সংবাদ প্রতিদিন ডট ইন-কে জানালেন শ্রীময়ী চট্টরাজ।
বিধায়ক কাঞ্চনপত্নীর মন্তব্য, “মহিলাদের শৌচালয় নেই। চোখের সামনে দেখছি কেউ অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাচ্ছেন।” সোশাল মিডিয়ায় মহাকুম্ভের মেলা থেকে বেশ কিছু ছবি শেয়ার করেছেন শ্রীময়ী। আচমকাই যাওয়ার প্ল্যান হল? অভিনেত্রী জানালেন, “কাঞ্চন আসতে চায়নি। ওঁর কথায়, ‘সব গঙ্গাই তো এক।’ আমিই জোর করে নিয়ে এলাম। তবে হুজুগে এসে দেখলাম, একেবারে ফেঁসে গিয়েছি। চূড়ান্ত অব্যবস্থা এখানে। নেটে তারকাদের স্নানের ছবিগুলো দেখে ঝকঝকে ব্যবস্থা ভাবলে ঠকতে হবে! ত্রিবেণী সঙ্গমে ভিআইপি জোনেই আস্থার ড়ুব দিয়েছি আমরা। শুধু স্নানটুকু শান্তিতে করতে পেরেছি। সঙ্গমের খুব সুন্দর পরিবেশ। পোশাক বদলানোর জন্য জায়গা পেয়েছি। তবে তার আগে-পরের অবস্থা অবর্ণনীয়!”
শ্রীময়ীর আক্ষেপ, “মহিলাদের শৌচালয় পর্যন্ত নেই। রাস্তাঘাটে যে যার মতো পারছে গাড়ি চালাচ্ছে। কেউ বাইক চালাতে গিয়ে পড়ে যাচ্ছে। তাকে তোলার মতো কেউ নেই পর্যন্ত। মহাকুম্ভে ঢুকেই চোখের সামনে দেখলাম মানুষ অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছেন। তড়িঘড়ি প্রাথমিক চিকিৎসা যে করবে, সেই ব্যবস্থাটুকু নেই। স্নান সেরে ফেরার পথে আমারও চোখ ঝাপসা হয়ে গিয়েছিল। চোখেমুখে জল দিয়ে একটু শান্তি পাই। কাঞ্চনের এক বন্ধু আমাদের সঙ্গে এসেছেন, তিনি রীতিমতো অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। আর কী মারাত্মক যানজট! আমাদের যিনি গাইড ছিলেন, স্থানীয় মানুষ হওয়া সত্ত্বেও সিভিক ভলান্টিয়ার বা পুলিশদের যা ব্যবহার দেখলাম, তা ভাষায় বর্ণনা করার মতো নয়। আমাদেরও তো তারকেশ্বরে উৎসব হয়। তবে কলেবরে ছোট হলেও ব্যবস্থাপনা তুলনামূলক ভালো। প্রায় ৭-৮ ঘণ্টা শৌচালয়ে যেতে পারিনি। কোনও বায়ো টয়লেট নেই এখানে। মহিলা হিসেবে আমার সত্যিই খুব অসুবিধে হয়েছে। রাস্তায় অজ্ঞান হয়ে গেলে জলের বোতল কেনার ব্যবস্থাও নেই। পুলিশ বলছে, ‘আগে বেড়িয়ে…।’ গোটা রাস্তায় পাণীয় জলের ব্যবস্থা দেখলাম না। সবাই তো ভিআইপি নয়। একজন সাধারণ মানুষ হিসেবেই বললাম। এটা প্রশাসনের ব্যর্থতা। এত কোটি কোটি মানুষ পুণ্যার্থে যোগ দিচ্ছেন যখন, তখন ব্যবস্থাপনায় আরও নজর দিলে ভালো হত।” শনিবার রাতেই কলকাতার উদ্দেশে রওনা হচ্ছেন কাঞ্চন-শ্রীময়ী।
প্রসঙ্গত, চলতি মহাকুম্ভে যোগ দিয়েছিলেন টলিপাড়ার অনেক তারকাই। সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় মহাকুম্ভে যোগ দিয়ে যোগী প্রশাসনের প্রশংসা করেছিলেন। এরপর অপরাজিতা আঢ্য, শ্রীমা ভট্টাচার্য, সুদীপ্তা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে দেবলীনা কুমারের মতো টলিউডের একাধিক তারকা ত্রিবেণী সঙ্গমে আস্থার ডুব দেন। পরিচালক অরিন্দম শীলও স্ত্রী শুক্লার সঙ্গে পৌঁছে গিয়েছিলেন প্রয়াগরাজে। শশব্যস্ত শিডিউলের মাঝে সময় বের করে মহাকুম্ভে পৌঁছে গেলেন কাঞ্চন-শ্রীময়ীও। প্রসঙ্গত, আমজনতার পাশাপাশি প্রয়াগরাজে ভিড় জমাতে শুরু করেছেন সেলেবরাও। ১৩ জানুয়ারি শুরু হওয়া মহাকুম্ভ (Maha Kumbh 2025) জমে উঠেছিল ভক্ত ও সন্তদের উপস্থিতিতে। ৪৫ দিন ব্যাপী এই অনুষ্ঠানে বিদেশীরাও পূণ্যস্নানের জন্য ভিড় জমিয়েছেন প্রয়াগরাজে। এবার মহাকুম্ভের প্রায় অন্তিম লগ্নে যোগ দিলেন কাঞ্চন মল্লিক, শ্রীময়ী চট্টরাজ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.