সন্দীপ্তা ভঞ্জ: ১৪ বছর। রামের বনবাসকাল। আর ঠিক এতটা সময়ই লেগে গেল উইন্ডোজ-এর ঘরের ছেলের ঘরে ফিরতে। ২০১২ সালে ‘অ্যাক্সিডেন্ট’ ছবির চোদ্দো বছর পর আবারও শিবু-নন্দিতার সঙ্গে কাজ করলেন কাঞ্চন মল্লিক।
জনতা এক্সপ্রেস-এর সেই জনার্দন এখন আমজনতার কাজে রাজনীতির ময়দানেও বেশ ব্যস্ত। বিধায়কের দায়িত্ব সামাল দিতে হয়। তার পাশাপাশি শুটিংও থাকে। কাঞ্চন বলছেন, “ক্যামেরার সামনে কিংবা নেপথ্যে, রাজনীতির ময়দানে দুটোই আমার কাছে জনসেবা।” এবার ‘রক্তবীজ’ ছবিতে বিধায়কমশাইকে দেখা যাবে পুলিশ অফিসারের চরিত্রে।
নিজের চরিত্র সম্পর্কে খুব বেশি ভাঙতে চাইলেন না কাঞ্চন মল্লিক। তবে জানালেন, “আইসির ভূমিকায় থাকছি। এখানে দর্শকরা একটু অন্যরকমভাবে পাবেন আমাকে।” বন্ধু শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে ফের নতুন ছবি করতে এতটা সময় লেগে গেল? সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল-এর প্রশ্নের মুখে কাঞ্চন বললেন, “১৪ বছর কোনও এক অজ্ঞাত কারণে একসঙ্গে কাজ করা হয়নি। শিবুরা নেয়নি। বা হয়ে ওঠেনি।” রসিকতা করেই অভিনেতা জানালেন, “শিবুর সঙ্গে অনেক মান-অভিমানের পালা চলেছে। ও না ডাকলে আমি যাব না। বা তোর যদি মনে হয় প্রয়োজনে আমাকে কাস্ট করবি। আমি কেন বলব!…. কে প্রথম অ্যাপ্রোচ করবে? এরকম আর কী!”
তবে ‘রক্তবীজ’-এর জন্য পরিচালক শিবপ্রসাদের কাছ থেকেই ফোনটা পেয়েছিলেন কাঞ্চন মল্লিক। সোজা তারকা বিধায়ককে জিজ্ঞেস করেন- “তুই করবি?” কাঞ্চল বললেন- “না করিনি। আসলে ওই একটা পুরনো প্রেমের ব্যাপার থাকে তো! নন্দিতাদিই আমার চরিত্রটা ঠিক করেছিল। শিবুর সঙ্গে আমার মান-অভিমান হলেও দিদির সঙ্গে কখনও হয়নি। কারণ উনি আমার কাছে মাতৃসম।”
১৪ বছর পর শিবু-নন্দিতার সঙ্গে কাজ। ‘রক্তবীজ’-এর ক্ষেত্রে নতুন কোনও অভিজ্ঞতা হল? কাঞ্চনের কথায়, ”চরিত্রটা শোনার পর মনে হয়েছিল, এখানে আমার অভিনয় সত্ত্বাটা কাজে লাগাতে পারব। শিবু আমার হাতে বলটা তুলে দিয়ে অপশন দিয়েছিল- তুই বুমরা হবি না চাহাল হবি দেখে নে…! রক্তবীজ-এর সেটে শুটিংয়ের ফাঁকে আবারও পুরনো বন্ধুত্বের সেই আমেজটা ফিরে পেয়েছিলাম। শিবুর সঙ্গে আমার তালমেলটা আসলে খুব ভাল। শট দেওয়ার ফাঁকে ওঁর কাছ থেকেইনস্ট্যান্ট জরুরি ইনপুটগুলো পাই, সেটা আমার ভাল লাগার জায়গা।”
শিবু-নন্দিতার হাত ধরেই বাংলা টেলিভিশনে পথচলা শুরু করেছিলেন কাঞ্চন। সেই স্মৃতি রোমন্থন করে অভিনেতার মন্তব্য, “গর্ব করে বলতে পারি, বাংলা টেলিভিশনের প্রথম রোড গেম শো ‘জনতা এক্সপ্রেস’। যার জনক নন্দিতা রায়, শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। আমি তখন সামান্য থিয়েটার কর্মী। ওরা জোর করেই একপ্রকার আমাকে জনতা এক্সপ্রেস-এর সঞ্চালক করেন। তখন থেকেই শিবু, নন্দিতাদির সঙ্গে সুসসম্পর্ক। তাই ‘রক্তবীজ’ ছবিতে অভিনয় করা আমার ক্ষেত্রে ঘরের ছেলে ঘরে ফেরা বলা যেতেই পারে।”
গল্পের শেষপাতে কাঞ্চন মল্লিকের বিশেষ উল্লেখ- “আর হ্যাঁ, ওদের সেটে খাওয়াটা দারুণ! ডাল-পোস্ত, কখনও বড়ি দিয়ে তরকারি কিংবা মাছ হবে, একেবারে জম্পেশ আয়োজন যাকে বলে। শিবু যেমন খাদ্যরসিক, আমিও তাই।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.