সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বড়সড় রদবদল যোধপুর সেশন কোর্টে। সলমনকে ৫ বছরের সাজা শুনিয়েছেন যে বিচারক, সেই দেব কুমার খাতরি-সহ মোট ৮৭ জন জুডিশিয়াল অফিসারকে বদলির নির্দেশ দিল রাজস্থান হাই কোর্ট। শুক্রবার সলমনের জামিনের আবেদন শোনার কথা ছিল বিচারক রবীন্দ্র কুমার জোশীর। কিন্তু রাজস্থান হাই কোর্টের নির্দেশে তাঁকেও অন্যত্র বদলি করে দেওয়া হল। ফলে আজ সলমন জামিন নাও পেতে পারেন। শুক্রবারের রাতটাও জেলেই কেটেছে সলমনের। আজ সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ তাঁর জামিনের শুনানি হওয়ার কথা। সকাল ৮টা নাগাদ বাড়িতে তাঁর মা’কে ফোন করার অনুমতি দেওয়া হয় সলমনকে।
বিচারক জোশীকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে রাজস্থানের সিরোহতে। তাঁর জায়গায় আসবেন ভিলওয়ারার সেশন বিচারক চন্দ্র কুমার সোঙ্গারা। বিচারপতি খাতরির জায়গায় আসছেন সমরেন্দ্র সিং শিকারওয়ার। তিনি এর আগে উদয়পুরের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন। বিচারক খাতরিই সলমনকে কৃষ্ণসার হরিণ শিকার মামলায় বৃহস্পতিবার দোষী সাব্যস্ত করে তাঁকে ৫ বছরের কারাবাসের সাজা শোনান। সঙ্গে দশ হাজার টাকা জরিমানা। শুক্রবার সল্লুভাইয়ের জামিনের আবেদনের শুনানি পর্ব মিটলেও থমকে থাকে রায়দান। আজ শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু আদালতে এত বড় রদবদলের পর সেই শুনানি আদৌ হবে কি না, সে বিষয়ে কেউ কেউ সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।
On account of administrative exigencies, 87 District judges transferred in #Rajasthan. Ravindra Kumar Joshi, District and sessions judge of Jodhpur, who was scheduled to hear Salman Khan’s bail plea in black buck poaching case today, also transferred
— ANI (@ANI) April 6, 2018
শুক্রবার সলমনের আইনজীবী হস্তিমল সারস্বত ৫১ পাতার আরজি নিয়ে হাজির হন আদালতে। সারস্বত বলেন, “অন্য কেউ হলে পরদিনই জামিন পেয়ে যেতেন। কিন্তু সলমন বড় স্টার। এবং একজন ভাল মানুষ। তাই ওঁর সঙ্গে এটা হচ্ছে।” সলমনের কৌঁসুলি মহেশ গোরা বলেন, তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়েছে সলমনের হয়ে যাতে তিনি না লড়েন। বৃহস্পতিবার রাতে টাইগারকে খেতে দেওয়া হয়েছিল ছোলার ডাল, বাঁধাকপির তরকারি আর রুটি কিন্তু সলমন তা ছুঁয়েও দেখেননি। শোয়ার জন্য চারটি কম্বল দেওয়া হয় তাঁকে। কিন্তু রাতে মেঝেতে শুয়েছেন বলিউডের ভাইজান। বলা যায়, সারা রাত জেগেই ছিলেন ভাইজান। প্রথম দিকে নাকি তাঁর রক্তচাপ বেড়ে গিয়েছিল, পরে অবশ্য তা স্বাভাবিক হয়। এই দু’দিন যোধপুর জেলে সলমন খানের প্রতিবেশী ধর্ষণের দায়ে ৫ বছরের সাজাপ্রাপ্ত স্বঘোষিত ধর্মগুরু আসারাম বাপু।
সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার সন্ধেবেলা যোধপুর সেন্ট্রাল জেলে মেডিক্যাল পরীক্ষা অবধি সব ঠিক ছিল। তার পর থেকে নাকি মনখারাপ নায়কের। সল্লুভাইয়ের একেবারের না-পসন্দ জেলের ডাল-রুটি। ভাইজানের জন্য বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর বডিগার্ড শেরা খাবার কিনে এনেছিলেন। কিন্তু জেলে বাইরের খাবার ঢোকানো যাবে না। তাই সল্লুভাই বৃহস্পতিবার রাতে অভুক্তই থেকে যান। শুক্রবার সকালে জলখাবারে ছিল খিচুড়ি। জেলের দেওয়া এই খাবার নাকি ছুঁয়েও দেখেননি ‘ভাইজান’। সলমনের এক শুভাকাঙ্ক্ষী জানাচ্ছেন, “ভাইজানের যে জেল হবে সেটা একেবারে কারও মনে আসেনি। তাই মন খারাপ হবেই।” সলমনের জন্য গতকাল থেকেই যোধপুরে রয়েছে খান পরিবার। সাজা শোনার পর থেকে বোন অর্পিতার কান্না যেন থামতেই চাইছে না। এই অবস্থায় প্রীতি জিন্টা ভাইজানের সঙ্গে দেখা করতে পৌঁছে যান।
পরিচালক সুভাষ ঘাই, অভিনেত্রী-সাংসদ জয়া বচ্চন থেকে অভিনেতা বরুণ ধাওয়ান। সকলেই সল্লুভাইয়ের জন্য চিন্তায় রয়েছেন। টুইটারে সলমনকে সমর্থনও জানিয়ে যাচ্ছেন। কৃষ্ণসার হরিণ শিকার মামলায় বেকসুর খালাস পেয়েছেন নীলম। তাঁর স্বামী সমীর সোনি জানিয়েছেন, “একটা মিশ্র অনুভূতি হচ্ছে। একদিকে আমরা খুশি, নীলম চিন্তামুক্ত হয়েছেন। কিন্তু সলমনের এটা কী হল? স্টারডমের খেসারত দিতে হল বলেই মনে হচ্ছে।” শুক্রবার করিনা কাপুর-ও ইনস্টাগ্রামে সলমনের সঙ্গে ছবি পোস্ট করেছেন। জয়া বচ্চন বলেছেন, “নিরীহ প্রাণকে হত্যা করলে আইন ছাড়বে না। কিন্তু সলমন একজন ভাল মানুষ। সলমনকে মানসিকভাবে শক্তিশালী থাকতে হবে।” বরুণ ধাওয়ান লিখেছেন, “ভাইজান শক্তিশালী। আমার বিশ্বাস, এই ঘটনা আরও শক্তিশালী করবে সলমনকে।” অমিতাভ বচ্চন, শাহরুখ খান, আমির খানের তরফ থেকে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.