আকাশ মিশ্র: নাহ, এই মেয়েকে আটকানো যাবে না। কারও বারণ শুনবে না। কোনও বাধা মানবে না। বড্ড জেদ, বড্ড সাহস! তবে অধৈর্য নয়। সঠিক প্ল্যানিংয়ে একের পর এক ব্রহ্মাস্ত্র! ভাসান বালা পরিচালিত ‘জিগরা’ ছবির গল্পের আসল প্যাঁচই হল ডাকাবুকো এক মেয়ে সত্য়া ওরফে আলিয়া। যার একটাই উদ্দেশ্য, যে কোনও পরিস্থিতিতে ভাইয়ের পাশে দাঁড়ানো, ভাইকে সেফগার্ড। তা স্কুলের গণ্ডি হোক কিংবা ভাই যখন বিদেশের মাটিতে মাদক মামলায় জড়িয়ে পড়ে, তখনও সত্যার একটাই লক্ষ্য, ভাইকে বাঁচাতে হবে। আর সেই কারণেই একশোবার না ভেবে টুক করে বিমানযাত্রা, বিদেশের আইন ভাঙা, আগুনে ঝাঁপ, জেলের অন্দর! কোনও কিছুতেই দমে যায় না সত্যা। কারণ, তাঁর রাতজাগা চোখে শুধুই ভাইয়ের মুখ!
এমনই এক লড়াকু প্লটে আলিয়া একেবারে অবতার বদলে মারকুটে। ‘রকি রানি কি প্রেম কাহানি’র রোমান্টিকতাকে ঝেরে ফেলে, আলিয়া অন্যরূপে। তবে সেই রূপে ‘গলি বয়েজ’-এর ঝলক থাকলেও, তা খুবই অল্প। ‘জিগরা’ আসলে আলিয়ার ডাকাবুকো অবতারের ছবি। ‘জিগরা’ আসলে আলিয়ার নিজেকে ফের প্রমাণ করার ছবি। ‘জিগরা’ আসলে এমন ছবি, যেখানে আলিয়া ছাড়া হয়তো আর কাউকে ভাবাই যায় না। আর তাই ভাসান বালা ও দেবাশিস ইরেনবামের চিত্রনাট্যকে ছাপিয়ে যান আলিয়াই।
‘জিগরা’র গল্পে নতুন তেমন কোনও মোচড় নেই। যদি ১৯৯৩ সালে মুক্তি পাওয়া সঞ্জয় দত্ত ও শ্রীদেবীর ‘গুমরাহ’ ছবিটা দেখে থাকেন, তাহলে মোটামুটি সেই প্লটেই গল্প এগোয়। তবে ‘জিগরা’, গল্প দেখার ছবি নয়। বরং মুগ্ধ হয়ে দেখতে হয় আলিয়ার দুরন্ত অভিনয়। প্রত্যেকটি ফ্রেমেই আলিয়া অসাধারণ। অ্যাকশন অবতারে এটাই যে তাঁর প্রথম অবতরণ তা কিন্তু বোঝাই যায়নি। তবে এখানে বলা ভালো, নতুন হলেও, এই ছবিতে আলিয়ার সঠিক সংগত বেদাঙ্গ রায়না।
শেষমেশ বলা যায়, ‘জিগরা’র চিত্রনাট্য দুর্বল হলেও, আলিয়া একাই এই ছবিকে কাঁধে নিয়ে এগিয়েছেন। প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত ‘জিগরা’ আলিয়া একেবারেই মুগ্ধ করে রাখবে। ছবির প্রথমভাগ একটু শ্লথ হলেও, দ্বিতীয়ভাগ টানটান। আর ক্লাইম্যাক্সে যে চমকটি রয়েছে, তা বেশ ভালো। তাই বলা যায়, ‘জিগরা’ দেখুন শুধুই আলিয়ার জন্য।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.