সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘আর জি কর বা ঝাড়গ্রাম, বিচার পাক সব প্রাণ’- এই স্লোগানেই ঝাড়গ্রামের হাতি হত্যাকাণ্ডে রবিবার যাদবপুরে গর্জে উঠেছিলেন টলিউডের পশুপ্রেমী সেলেব থেকে সাধারণ মানুষেরা। সেই প্রতিবাদী মিছিলে হাজির ছিলেন তথাগত মুখোপাধ্যায়, শ্রীলেখা মিত্র, দেবলীনা দত্তরা। তাঁরা প্রথমদিন থেকেই ঘটনার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন।
এদিন যাদবপুরে মিছিল এবং বিক্ষোভ অবস্থানে বিচার চেয়ে বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার পদত্যাগ দাবি করেন সকলে। কারণ, এই মর্মান্তিক ঘটনা বনমন্ত্রীর নিজস্ব এলাকাতেই ঘটেছে। একদিকে আর জি কর হাসপাতালের ঘটনা নিয়ে তোলপাড় গোটা দেশ, অন্যদিকে ঝাড়গ্রামের নৃশংস হাতিমৃত্যুর ঘটনাতেও মন কাঁদছে সভ্য নাগরিকদের। উল্লেখ্য, এই হাতিটি গর্ভবতী ছিল। স্থানীয় হুলা পার্টির হাতেই এমন মর্মান্তিক পরিণতি ঘটে তার। যে ঘটনার বিরুদ্ধে সোশাল মিডিয়ায় প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছিলেন তথাগত, মিমি চক্রবর্তী, শ্রীলেখা, বিবৃতি, দেবলীনা-সহ আরও অনেকেই। এবার পথে নেমে বিক্ষোভ প্রদর্শন করলেন তাঁরা। তথাগত জানিয়েছেন, এই ঘটনায় আপাতত হুলা পার্টির দু জন গ্রেপ্তার। বন্যপ্রাণী সুরক্ষা আইনের ভিত্তিতে বনমন্ত্রী আর স্থানীয় ডি এফের বিরুদ্ধেও মামলা করার দাবি তোলা হয়েছে। তবে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করে বনদপ্তরের নিষিদ্ধ হুলা পার্টি ডাকার জন্য ইতিমধ্যেই জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিচালক তথা অভিনেতা।
রবিবার প্রতিবাদী মিছিলে যাঁরা উপস্থিত ছিলেন তাঁদের সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে তথাগতর মন্তব্য, “এতদিন ধরে আমরা যারা শুধুমাত্র শহরের প্রাণীদের জন্য লড়াই করছি, তাদের জন্য এটা নতুন লড়াইয়ের শুরুমাত্র। এখনও অনেকটা লড়াই বাকি। অনেকগুলো অসহায় মৃত্যু প্রতিরোধ বাকি। অজস্র অপরাধীর সাজা বাকি। ক্ষমতার মুখোশ খুলে নেওয়া বাকি।” শ্রীলেখা মিত্রও ‘অনাচারের’ অভিযোগ তুলে বনমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছেন।
জানা গিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রাম শহরে ঢুকে পড়ে পাঁচ হাতির এক দল। হাতির হামলায় এক ব্যক্তির মৃত্যুও হয়। বিষয়টি সামাল দিতে হুলা পার্টির ডাক পড়ে। অভিযোগ, হুলা পার্টির সদস্যদের জ্বলন্ত রডের আঘাতে এক হাতি গুরুতর জখম হয়। পরে তার মৃত্যু হয়। তার প্রতিবাদে তথাগত লেখেন, “হাতিটা আগুনে পুড়ে যন্ত্রণা পেতে পেতে মৃত্যুবরণ করেছে। আপনারা বুঝতে পারছেন যন্ত্রণাটা! তার সাথে একটি শিশু হাতি ছিল, সে আগুন দেখে আর হাতিটির ছটফটানি আর চিৎকার শুনে লুকিয়ে যায় ভয়ে। হাতিটি জ্বলতে থাকে। ঈশ্বর আমি আর নিতে পারছি না!” ‘X’ হ্যান্ডেলে গাছপালার মধ্যে পড়ে থাকা হাতির ছবি শেয়ার করে মিমি চক্রবর্তী লেখেন, “নির্লজ্জ! হুলা পার্টির একটি দল তাকে আগুনে পোড়া মাশাল এবং ধারালো লোহার রড দিয়ে মেরে হত্যা করেছে। এর দায় কে নেবে? মানুষ হিসেবে এবং সমাজ হিসেবে আমরা ব্যর্থ। আর কত?” ঘটনায় চূড়ান্ত হতাশ শ্রীলেখা মিত্র। ফেসবুকে একটি পোস্ট শেয়ার করে তিনি লেখেন, “আমরা বোধহয় সত্যিই ধ্বংসের পথে এগোচ্ছি। আর এসব দেখতে পারি না। এত হিংসা, এত আক্রমণ এই অবলাদের প্রতি…তার পর আপনারা মানুষকে মনোহর বলবেন? মনোহর তো মানুষের অনেক উর্ধ্বে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.