এবার মহালয়ায় দুর্গারূপে টেলিভিশনের পর্দায় দেখা যাবে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তকে। একান্ত সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রীর কথায় উঠে এল ছোটবেলার পুজোর স্মৃতি। শুনলেন শম্পালী মৌলিক।
সিঙ্গাপুরে কি ছুটি কাটাতে গিয়েছিলেন?
ঋতুপর্ণা: অ্যাকচুয়ালি বেঙ্গালুরু-তে ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে গিয়েছিলাম। তারপর কেরলে একটা শুটিং ছিল। জাস্ট দু’দিনের উইক এন্ডের জন্য সিঙ্গাপুরে গেলাম। ফিরে এসেই শুট শুরু হল। এরপর দুবাইতে শো আছে। হেকটিক চলছে খুবই।
পুজোর প্ল্যান কী?
ঋতুপর্ণা: কলকাতা, মুম্বই, দিল্লি মিলিয়ে মিশিয়ে পুজোর প্ল্যান। মুম্বইয়ে একটা পুজোর ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর আমি এবার, ওখানে যাব। আর একদিন পুজো পরিক্রমা আছে। এখানে কলকাতায় কয়েকটা অ্যাপিয়ারেন্স আছে। পুজোর পরেই ‘মহিষাসুরমর্দিনী’-র রিলিজ, রঞ্জনের (ঘোষ) পরিচালনায়। তার কিছু ক্যাম্পেনিং আছে। তাছাড়া দিল্লিতে ‘মহিষাসুরমর্দিনী’-র স্ক্রিনিংও আছে। আর চেষ্টা করব কিছুটা সময় কলকাতায় থাকার।
প্রথমবার মহালয়ায় আপনি মহিষাসুরমর্দিনীরূপে অবতীর্ণ হচ্ছেন (২৫ সেপ্টেম্বর, ভোর পাঁচটা, কালার্স বাংলা চ্যানেলে) ‘দেবী দশমহাবিদ্যা’-য়। সেটা নিয়ে কতটা ভাললাগা আছে?
ঋতুপর্ণা: (হাসি)… আই অ্যাম আ পারফরমার। নাচ নিয়ে আমি সবসময় এক্সাইটেড। সবসময় আমার কেরিয়ারে নাচের একটা আলাদা গুরুত্ব আছে। ছোটবেলায় নাচই প্যাশন ছিল। ফলে নাচ জড়িয়ে আছে, এমন কোনও কাজ এলে আমি খুব খুশি হয়ে যাই। টেলিভিশনে যখনই নাচ নিয়ে অনুষ্ঠান করেছি, সবগুলোতেই খুব ভাল প্রতিক্রিয়া পেয়েছি। ইনফ্যাক্ট, কিছুদিন আগেও ‘বেলাশুরু’-র ‘টাপা টিনি’-র জন্য সকলে যা ভালবাসা দিয়েছেন কী বলব! দর্শকের বক্তব্য যে, অভিনয়ের পাশাপাশি, নাচে তাদের মন ভরে গিয়েছে। সেই জন্যই মহালয়ার অনুষ্ঠানে মা দুর্গা রূপে হাজির হওয়ার অফার আসায় আমার খুব এক্সাইটেড লেগেছিল। খুব যত্ন নিয়ে আমরা কাজটা করেছি। দুর্গার সাজটা সম্পূর্ণ করতেই তিনঘণ্টা লাগত, চোখ, চুল, মেকআপ সব মিলিয়ে। প্রায় চার-পাঁচজন মেকআপের জন্য ছিলেন। প্রচুর হার্ড ওয়ার্ক রয়েছে এর নেপথ্যে। মায়ের দশটা রূপ দেখা যাবে ‘দেবী দশমহাবিদ্যা’য়, আমি ছাড়া টেলিভিশনের অনেক প্রতিষ্ঠিত অভিনেত্রীও রয়েছেন। আমি লিড করলেও প্রত্যেকের সুন্দর উপস্থিতি চোখে পড়বে। মেকআপ আর কস্টিউম চমৎকার হয়েছে, ভীষণ রিয়্যাল লাগছে। আশা করব সকলের ভাল লাগবে।
রিশোনা আর অঙ্কনকে এই মহালয়া দেখানোর ইচ্ছে আছে?
ঋতুপর্ণা: ইনফ্যাক্ট, শুটিংয়ের সময় ওরা দু’জনেই সেটে এসেছিল। সেই সময় ওদের ছুটি ছিল, ফলে ওদের অনেকটাই দেখা (হাসি)। যখন শুটিং করেছিলাম, আমার বেশ জ্বর ছিল। ভাইরাল ফিভারে কাবু হয়েও মহালয়ার সুযোগটা আমি হাতছাড়া করতে চাইনি। সেই সময় আবার ‘দত্তা’-র শুটিং চলছিল, নির্মলদার (চক্রবর্তী) ছবি। চাপ থাকলেও ‘দেবী দশমহাবিদ্যা’ করার জন্য মন টেনেছিল খুব। ‘দত্তা’র কথা বললেই মনে পড়ে প্রদীপদার (মুখোপাধ্যায়) কথা। ওঁর জন্মদিন আমরা সেলিব্রেট করেছিলাম সেটে। ওঁর সঙ্গে আমার তিনটে ছবি, ‘দ্য পার্সেল’, ‘ছুটি’ আর ‘দত্তা’। কত বড়মাপের অভিনেতা আর ভাল মানুষ ছিলেন, খুব মনে পড়ে।
এখনও এই পরিমাণ মাল্টিটাস্কিং-এর এনার্জি কোথা থেকে পান?
ঋতুপর্ণা: (হাসি)… এটাই আমি। কোনও কাজই হেলাফেলা করে করতে পারি না। কালার্স বাংলা খুব সুন্দরভাবে পুরোটা করেছে। কনসেপ্ট ভাল লেগেছে। ডিরেক্টর শুভেন্দু চক্রবর্তীর ভাবনাটা সুন্দর। ওদের পুরো টিমটাই খুব ভাল।
আপনার ছোটবেলার মহালয়া কেমন ছিল?
ঋতুপর্ণা: ভোরবেলায় রেডিওর কাছে গিয়ে বসে পড়তাম। আমার ঠাকুরমা ভোর চারটের সময় মহালয়ার জন্য রেডিও চালিয়ে দিতেন। আমাদের জন্য ওই ছোটবেলায় ঘুমচোখে মহালয়া শোনা বিরাট ব্যাপার ছিল, ওটা কোনও কিছু দিয়েই রিপ্লেস করা যাবে না। বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের ওই দরাজ গলা শুনে, মনে হত মা এবারে সত্যিই আসছেন। আমাদের পুজো তখনই শুরু হত।
এত ট্র্যাভেল করছেন চারদিকে পুজোর কেনাকাটা করার সময় পেলেন?
ঋতুপর্ণা: আগামী দুটো ছবি রিলিজ, প্রোমোশনের চাপ সব মিলিয়ে সত্যিই বড্ড ব্যস্ততা চলছে। ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ আসবে অক্টোবরের শেষদিকে। এই ছবিতে আমি ছাড়া পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় রয়েছে। আর ‘আকরিক’ যেটায় আমার সঙ্গে ভিক্টর বন্দ্যোপাধ্যায় রয়েছেন, সেটাও মুক্তি পাবে। আর ‘মায়াকুমারী’ সম্ভবত শীতে মুক্তি। এর মধ্যেই পুজোর উপহার আসা শুরু হয়েছে। মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীও একটা খুব সুন্দর শাড়ি পাঠিয়েছেন, আমি খুব খুশি। নিজে গিয়ে কেনাকাটার অবকাশ এবারে এখনও পাইনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.