অঙ্কুশ হাজরা (Ankush Hazra) ওয়েব ডেবিউ। Zee5 ওয়েব প্ল্যাটফর্মের ‘শিকারপুর’ (Shikarpur) সিরিজে গোয়েন্দা ‘কেষ্ট’ হয়ে তিনি আসছেন আগামী ৬ জানুয়ারি। তার আগে সংবাদ প্রতিদিনের প্রতিনিধি বিদিশা চট্টোপাধ্যায়ের মুখোমুখি অভিনেতা।
অবশেষে আপনার ওয়েব ডেবিউ হতে চলেছে। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়েই কি এই সিদ্ধান্ত?
আমি অনেক আগেই করতে চেয়েছিলাম। যদিও OTT আর ফিল্মের অভিনয়কে আলাদা করে দেখি না কিন্তু এটা তো ঠিকই, অনেক এক্সাইটিং কাজ হচ্ছে OTT-তে। আর যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ভাল কনটেন্ট নিয়ে কাজ করতে চাই। কিন্তু সত্যি বলতে কী, কেউ ভাবেনি আমি OTT-তে কাজ করতে আগ্রহী হব। তাই সেভাবে কেউ অ্যাপ্রোচই করেনি এর আগে। বলা যেতে পারে, এটাই প্রথম ফুল ফ্লেজেড ওয়েব সিরিজ যেটা আমাকে অফার করা হয়েছে।
বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে গোয়েন্দার ছড়াছড়ি। একদিকে সাহিত্য নির্ভর গোয়েন্দা এবং রয়েছে ‘গোরা’, ‘সোনাদা’, ‘শবর’ কিংবা ‘একেনবাবু’। কী মনে হয়, ‘শিকারপুর’-এর ‘কেষ্ট’-র সঙ্গে তুলনা হবে?
আমি প্রথম থেকেই চেয়েছিলাম যে ‘কেষ্ট’ অন্য কারও মতো যেন না হয়। ‘একেনবাবু’ যেমন গোয়েন্দার জগতে একটা রিফ্রেশমেন্ট এনেছে। গোয়েন্দা মানেই একটা নির্দিষ্ট উচ্চতার হবে, গুরুগম্ভীর ব্যাপার থাকবে– এই স্টিরিওটাইপ ভাঙতে চেয়েছিলাম। আমি গোয়েন্দা চরিত্রে অভিনয় করার আগে শর্ত দিয়েছিলাম যে, একটা বিনোদনমূলক ফ্যাক্টর থাকতে হবে যাতে দর্শক উপভোগ করতে পারে। আর এটাও বলেছিলাম, ‘কেষ্ট’র চরিত্রটা আমি করার পর আর যেন কেউ করতে না পারে এমনভাবে চরিত্রায়ণ করতে হবে। যেমন ‘জটায়ু’ বা ‘একেনবাবু’ দুম করে যে কেউ করতে পারবে না।
কেষ্টর চরিত্রটা আর পাঁচটা গোয়েন্দার মতো নয়। খানিকটা পাশের বাড়ির ছেলে, জীবনে কিছুই অর্জন করেনি, বিয়েবাড়িতে ছবি তোলে কিন্তু নিজেকে সেরা ভাবে আর স্বপ্ন দ্যাখে বড় গোয়েন্দা হওয়ার। তার হবু শ্বশুর দীনদয়ালবাবুর (কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়) মতো বড় গোয়েন্দা হতে চায়, যে এখন রিটায়ার করেছে। তবে এমন পাতি গোয়েন্দার কাছে কেস কেন এল সেটাই দেখার। অনেক কমিক এলিমেন্ট আছে। তাছাড়া যেহেতু নর্থ বেঙ্গল শুট, কলকাতা নয়, একটা অন্য ফ্লেভার যোগ হয়েছে।
আপনার অনস্ক্রিন প্রিয় গোয়েন্দা কে?
সত্যি কথা বলতে কি, আমি অনির্বাণ চক্রবর্তীকে নিয়ে ইমোশনালি বায়াসড। ‘একেনবাবু’ আমার সবচেয়ে প্রিয়।
নির্ঝর মিত্র নতুন পরিচালক। কীভাবে আপনাকে কনভিন্স করলেন ‘শিকারপুর’-এর জন্য?
নির্ঝর আমাকে যখন ওভারঅল কনসেপ্ট শোনায় তখন আমি ওকে বলেছিলাম যে তুমি আমাকে একটা করে এপিসোড শোনাও। যদি পরের এপিসোড শোনার জন্য আমি নিজে থেকে তোমাকে বারবার যোগাযোগ করি তাহলে বুঝবে আমি করছি।
‘কেষ্ট’ চরিত্রে অভিনয় করার চ্যালেঞ্জ?
আমার মাথায় ছিল যে কেষ্ট এমন হবে যাকে দেখে অঙ্কুশকে দর্শকের মনে পড়বে না। আর দর্শক এমনভাবে কানেক্ট করে যেন ‘কেষ্ট’ স্ক্রিনে এলেই তাঁদের মুখে হাসি ফোটে।
কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা কেমন?
কৌশিকদার পরিচালনায় না হলেও সহ-অভিনেতা হিসাবে এই নিয়ে দু’টো কাজ হয়ে গেল। ‘উত্তরণ’ আর ‘শিকারপুর’। আর দুই ক্ষেত্রেই কৌশিকদার সঙ্গে অনেকটা স্ক্রিন শেয়ার করেছি। এটা করে আমার স্কুলিংটা অনেক স্ট্রং হয়ে গেল।
‘সাজঘর’-এর মতো পিরিয়ড ছবিতে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?
আমি এখানে থিয়েটার অভিনেতা, যে ভায়োলিন বাজায়। খুব বেশি বলতে পারব না এই ছবিটা নিয়ে। শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা দারুণ। এই সময়ে দাঁড়িয়ে ‘সাজঘর’ ২০২৩-এর দ্য মোস্ট বিগ বাজেট ছবি হতে চলেছে। আই অ্যাম অলসো হ্যাপি ফর ঐন্দ্রিলা যে কেরিয়ারের শুরুতে এই ধরনের একটা ছবি করছে। বুম্বাদার সঙ্গে কাজ করাটাও দারুণ ব্যাপার। ‘জুলফিকার’-এ সেভাবে স্ক্রিন স্পেস শেয়ার করার সুযোগ হয়নি।
২০২৩-এ অভিনেতা, প্রযোজক এবং ব্যক্তি অঙ্কুশের প্ল্যান কী?
প্রযোজক হিসাবে দু’টো ছবি ঘোষণা করব, ‘মির্জা’কে অন ফ্লোর আনব। অভিনেতা হিসাবেও বিভিন্ন ধরনের ছবিতে কাজ করতে চাই। এবং বিশেষ করে সিঙ্গল স্ক্রিনে দর্শকের ফুটফল বাড়ানোর জন্য প্রযোজক ও অভিনেতা হিসাবে সর্বতোভাবে চেষ্টা করব। আর ব্যক্তিগত প্ল্যান মানে তো বিয়ে! হয়তো ২০২৩-এর শেষে হতে পারে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.