জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: অরুণিতা কাঞ্জিলালের পর এবার দেবস্মিতা রায়। জাতীয় স্তরের জনপ্রিয়তম রিয়্যালিটি শো ইন্ডিয়ান আইডল ১৩-এ প্রথম রানার আপ হয়েছেন বনগাঁ শহরের কোড়ার বাগানের বাসিন্দা দেবস্মিতা রায়। এর আগে ইন্ডিয়ান আইডল সিজন ১২-এ প্রথম রানার আপ হয়েছিলেন বনগাঁ শহরের পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা অরুণিতা কাঞ্জিলাল। একই রিয়্যালিটি শোয়ের পরপর দুই সিজনে বনগাঁর মেয়েদের এই সাফল্যে খুশি বনগাঁর বাসিন্দারা।
ইন্ডিয়ান আইডলে সাফল্যের পর বুধবার বাড়ি ফিরেছেন দেবস্মিতা। তারপর থেকেই অভিনন্দনের বন্যায় ভেসে যাচ্ছেন তিনি। পরিচিত-অপরিচিত লোকজন তাঁর বাড়িতে গিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে আসছেন। তাঁদের জন্য করা হয়েছে মিষ্টিমুখের ব্যবস্থা। গোটা পাড়ায় কার্যত সাজ-সাজ রব।
ছোট থেকেই সাংগীতিক পরিমণ্ডলে বড় হয়েছেন দেবস্মিতা। তাঁর বাবা দেবু রায় পেশায় সংগীতের শিক্ষক। তাঁর কাছেই দেবস্মিতার সংগীতের হাতেখড়ি। মা মিতা রায় গৃহবধূ। মেয়ের অভাবনীয় সাফল্যে গর্বিত বাবা-মা। দেবুবাবু জানালেন, ‘‘খুব ছোটবেলা থেকেই মেয়ে গান করত। ওর প্রতিভা দেখেই ওকে সংগীতশিল্পী করার চেষ্টা করেছিলাম। আজ মেয়ের সাফল্যের পর মনে হচ্ছে আমার সেই চেষ্টা সফল।’’ মেয়ে আগামিদিনে প্লেব্যাক সিঙ্গার হিসাবে দেশ-বিদেশের মানুষকে ভাল ভাল গান শোনাক, চান তিনি। মেয়ের সাফল্যে উচ্ছ্বসিত মা মিতাদেবী জানান, ‘‘মেয়ে প্রায় এক বছর ঠিকমতো বাড়িতে ছিল না। এতদিন ঠিকঠাক রান্নাবান্না হয়নি বাড়িতে। বুধবার ও বাড়িতে ফিরেছে। বিরিয়ানি খেতে খুব পছন্দ করে। আজ ওর ভাললাগার রান্নাগুলো করার চেষ্টা করব।’’
সাফল্যের পর কী প্রতিক্রিয়া দেবস্মিতার? জানালেন প্লেব্যাক সিঙ্গার হওয়ার সুপ্ত ইচ্ছার কথা। তাঁর কথায়, ‘‘ভবিষ্যতে প্লেব্যাক সিঙ্গার হতে চাই। সংগীত নিয়েই থাকব। মানুষকে ভাল ভাল গান শোনানোর ইচ্ছা আছে। আমি পুরোপুরি বনগাঁর মেয়ে। বনগাঁ কুমুদিনী স্কুল থেকে পড়াশোনা করেছি। কলকাতা সরোজিনী নায়ডু কলেজে পড়াশোনা করেছি। ইচ্ছা আছে ভবিষ্যতে বনগাঁর ছেলেমেয়েদের জন্য একটি গানের স্কুল করার।’’
দেবস্মিতার প্রিয় শিল্পীদের তালিকায় রয়েছেন লতা মঙ্গেশকর, আশা ভোঁসলে এবং শ্রেয়া ঘোষাল। পুরুষদের মধ্যে তাঁর প্রিয় সনু নিগম এবং অরিজিৎ সিং। ইন্ডিয়ান আইডলের জার্নি প্রসঙ্গে দেবস্মিতা জানান, ‘‘প্রথমে দমদমে অডিশন দিয়েছিলাম। মোট ৬টি অডিশন পেরিয়ে তারপর মূল অডিশনে পৌঁছই। তবে প্রথমে হিন্দিতে ঠিকমতো কথা বলতে পারতাম না। ভাবতাম মুম্বইতে গিয়ে কী করব। কিন্তু কয়েকদিন থাকার পর এখন হিন্দিতে স্বাভাবিক কথাবার্তা বলতে পারি। ইন্ডিয়ান আইডলের সেটে সকলেই খুব আন্তরিক, সকলেরই ভালবাসা পেয়েছি। এভাবেই আগামিদিনে এগিয়ে যেতে চাই।’’ ঘরের মেয়ের অভাবনীয় সাফল্যের উচ্ছ্বসিত বনগাঁবাসীও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.