সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লতাকণ্ঠী হিসেবেই সোশ্যাল মিডিয়ার ‘সুরসাম্রাজ্ঞী’ হয়েছিলেন রানাঘাটের রানু মণ্ডল। কেউ তাঁকে সাদরে অভ্যর্থনা জানিয়েছিলেন, কেউ আবার রানুকে ‘লতাকণ্ঠী’ বলায় জোর চটেছিলেন। তাঁদের মতে লতা মঙ্গেশকরের মতো এক ব্যক্তিত্বকে নাকি এতে খাটো করা হয়। কিন্তু বাস্তবের ‘সুরসম্রাজ্ঞী’ এসব নিয়ে একেবারেই ভাবিত নয়। বরং রানু মণ্ডলকে কার্যত পিঠ চাপড়ে দিয়েছেন তিনি। তবে যে শুধু দেদার প্রশংসা করেছেন, এমন নয়।
রানাঘাট স্টেশনে বসে একদিন ‘এক প্যায়ার কা নাগমা হ্যায়’ গাইছিলেন রানু মণ্ডল। রোজই গান। কিন্তু সেদিন রানুর গলা আকর্ষণ করেছিল ইঞ্জিনিয়র অতীন্দ্রকে। ভিডিও করে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন তিনি। মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যান রানু। তাঁর কণ্ঠ মোহিত করে নেটিজেনদের। সেই শুরু। তারপর রানাঘাটের রানু মণ্ডল ডাক পেয়েছেন বহু জায়গা থেকে। ‘সুপারস্টার সিঙ্গার’ কর্তৃপক্ষের ডাকে মুম্বই যান তিনি। মঞ্চে তাঁর গান মুগ্ধ করে সুরকার হিমেশ রেশমিয়াকে। সেই থেকে হিমেশের প্লেব্যাক সিঙ্গার হয়ে উঠেছেন রানাঘাটের রানু। একটার পর একটা গান রেকর্ড করে যাচ্ছেন। প্রথমে ‘তেরি মেরি কাহানি’, তারপর ‘আদত’, আর এখন ‘আশিকি মে তেরি’। সোশ্যাল মিডিয়ার ‘সুরসম্রাজ্ঞী’ ক্রমশ খ্যাতির সিঁড়ি উঠতে শুরু করে দিয়েছেন।
এমন পরিস্থিতিতে নিন্দুকরা অনেকেই বলছেন, লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে রানুর নাম জড়ানো একেবারেই উচিত নয়। লতা এশিয়ার নাইটেঙ্গল। সেই পর্যায়ে এত সহজে পৌঁছনো যায় না। তার জন্য চাই প্রচুর সাধনা। এসব নিয়েই একটি সংবাদমাধ্যম লতা মঙ্গেশকরের কাছে প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছিলেন। পরিপ্রেক্ষিতে লতা নিজের উচ্ছ্বাস ব্যক্ত করেছেন। তবে কথা বলার সময় বেশ সমঝেই উত্তর দিযেছেন লতা। বলেছেন, “যদি আমার নাম আর কাজের জন্য কারওর ভাল হয়, তাহলে আমি নিজেকে ভাগ্যবতী মনে করি।”
তিনি এও জানিয়েছেন, কারওর অনুকরণ কখনও সাফল্যের চাবিকাঠি হতে পারে না। কিশোর কুমার, মহম্মদ রফি, মুকেশ বা আশা ভোঁসলে বা তাঁর গান গাওয়া কিছুদিনের জন্য কাউকে লাইমলাইটে রাখতে পারে। কিন্তু এটা চিরকালীন নয়। অনেকেই তো তাঁর গান ভাল গায়। তার মধ্যে কতজন শেষ পর্যন্ত টিকে যেতে পারে? “আমি শুধু সুনিধি চৌহান ও শ্রেয়া ঘোষালকে চিনি”, বলেন লতা। এই প্রসঙ্গে আশা ভোঁসলেকেও টেনে আনেন তিনি। বলেন, “যদি আজ আশা নিজের স্টাইলে গান না গাইত, তবে ও চিরকাল আমার ছত্রছায়ায় থেকে যেত। স্বতন্ত্রতা মানুষের ট্যালেন্টকে কোথায় নিয়ে যেতে পারে, ও তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.