সুকুমার সরকার, ঢাকা: ইচ্ছাকৃতভাবে তাঁকে বাংলাদেশের বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের উপনির্বাচনে হারানো হয়েছে। এমনই অভিযোগ হিরো আলমের (Hero Alom)। এর বিরুদ্ধে একদিকে যেমন তিনি আদলতে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন, অন্যদিকে ভোটারদের সান্ত্বনা দিতে নির্বাচনী এলাকায়ও গিয়েছেন। আলমের দাবি, মাত্র ৮৩৪ ভোটে মহাজোটের প্রার্থী এ কে এম রেজাউল করিম তানসেনের কাছে তাঁর হেরে যাওয়া কিছুতেই ভোটাররা মেনে নিতে পারছেন না। অনেকেই তাঁর কাছে এসে কান্নাকাটি করছেন।
সদ্য অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদের উপনির্বাচনে প্রার্থী হন আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম। তাতেই শাসকদল আওয়ামি লিগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় মহাজোটের প্রার্থী একেএম রেজাউল করিম তানসেনের কাছে মাত্র ৮৩৪ ভোটের ব্যবধানে হেরে যান তিনি। বেসরকারিভাবে ঘোষিত ফল অনুযায়ী, কাহালু ও নন্দীগ্রাম উপজেলার ১১২টি কেন্দ্রে মোট বৈধ ভোট পড়েছে ৭৮ হাজার ৫২৪টি। এর মধ্যে ২০ হাজার ৪০৫ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে জয়ী হয়েছেন তানসেন। আর হিরো আলম পেয়েছেন ১৯ হাজার ৫৭১ ভোট।
ভোটের ফলাফল ঘোষণার পরই তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন হিরো আলম। গণভোটের দাবি জানান তিনি। আদলতে যাওয়ার হুঁশিয়ারিও দেন। বাংলাদেশে সপ্তাহিক ছুটির প্রথমদিন শুক্রবার সকালে বগুড়া সদরের এরুলিয়ায় তিনি ভোটারদের সঙ্গে দেখা করেন। এরপর কাহালু উপজেলায় জনসংযোগ করেন। ভোটের ফল দেখে হিরো আলম বলেন, “এমপি হলে তাকে স্যার বলতে হবে- তাই পদস্থ সরকারি আধিকারিকরা আমাকে ভোটে কারচুপি করে হারিয়ে দিয়েছে। প্রহসনের এ নির্বাচনের ফল পালটানো কোনওভাবেই মেনে নিতে পারছেন না ভোটাররা। তারা নির্বাচন কমিশনের এ নাটকে ক্ষুব্ধ ও বিস্মিত। অনেকেই কান্নাকাটি করছেন। তাদের সান্ত্বনা দিতেই আজ নির্বাচনী এলাকায় এসেছি।” নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত ফল প্রত্যাখ্যান করে হিরো আলমকে ‘জনতার এমপি’ ঘোষণা দেন তাঁর অনুরাগীরা। সমর্থকদের দাবি, হিরো আলম নির্বাচনে হারেননি, ফল পালটে তাকে হারানো হয়েছে। এ জন্য ফল বাতিলের দাবি জানানো হয়েছে।
এদিকে ফল পাল্টানোর অভিযোগের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে খোঁজ নিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। বৃহস্পতিবার সিইসি টেলিফোনে রিটার্নিং কর্মকর্তা, জেলা জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান জানিয়েছেন, বগুড়া-৪ আসনে উপনির্বাচনে ১০ কেন্দ্রে ফল পালটানোর অভিযোগ তুলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলম গণমাধ্যমে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা নজরে আসার পর সিইসি ফোন করে বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই নির্দেশ পাওয়ার পর নন্দীগ্রাম উপজেলার সবকটি ভোটকেন্দ্রে ইভিএম মেশিনে প্রাপ্ত ফল ফের যাচাই করা হয়েছে। ঘোষিত ফলের সঙ্গে ইভিএম মেশিনে পড়া ভোটের হিসাব শতভাগ নির্ভুল আছে। কেন্দ্রভিত্তিক ফল নির্বাচন কমিশনেও পাঠানো হয়েছে।
মাহমুদ হাসান বলেন, “অভিযোগ তো করলেই হবে না, তা প্রমাণ থাকতে হবে। তাঁর কাছে কী প্রমাণ আছে? আদালতে কেউ রিট করতেই পারেন, তবে তা প্রমাণ করতে হবে। দুই আসনে একতারা প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন। একটিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও সদরে তো জামানত হারালেন।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.