Advertisement
Advertisement

Breaking News

Chandramouli Biswas

রিহ্যাবেও হল না রক্ষা, হতাশাতেই শেষ চন্দ্রমৌলি!

এই প্রথম নয়, ২৬ ডিসেম্বরও একই রকমভাবে নিজেকে শেষ করার চেষ্টা করেছিলেন। সে যাত্রায় বাবা- মা সতর্ক থাকায় দুর্ঘটনা ঘটেনি।

Here is some speculation about Fossils ex-bassist Chandramouli Biswas death
Published by: Arpan Das
  • Posted:January 15, 2025 9:09 am
  • Updated:January 15, 2025 9:12 am  

স্টাফ রিপোর্টার: একদিকে প্রিয় ব্যান্ডের সঙ্গে ‘স্বেচ্ছা বিচ্ছেদ’, অন্যদিকে নতুন ব্যান্ডের শো না পাওয়া। ক্রমশ হতাশার চক্রব্যূহে ঢুকে পড়েছিলেন চন্দ্রমৌলি?

বাড়ির একমাত্র ছেলের এভাবে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়া চোখ এড়ায়নি চিকিৎসক বাবা-মায়ের। সতর্ক ছিলেন চিকিৎসক বোনও। মানসিক চিকিৎসাও হয়েছে। মুকুন্দপুরের একটি রিহ্যাব সেন্টারেও ছিলেন কিছুদিন। তাও শেষ রক্ষা হল না। ডিভোর্সের কয়েকমাস পরেই নিজেকে শেষ করে দিলেন চন্দ্রমৌলি।
মঙ্গলবার ‘সংবাদ প্রতিদিন’-এর টিম পৌঁছে গিয়েছিল চন্দ্রমৌলির ইন্ডিয়ান মিরর স্ট্রিটের বাড়িতে।

Advertisement

বাড়ির নিচতলার বাঁদিকে ডাক্তারের চেম্বার। বাইরে তিনজন ডাক্তারের নাম। প্লাবন বিশ্বাস, মণীন্দ্রলাল বিশ্বাস ও ডা. মিলনরানি বিশ্বাস। প্রথমজন চন্দ্রমৌলির বাবা, দ্বিতীয়জন দাদু। তৃতীয়জন মা। ইন্ডিয়ান মিরর স্ট্রিট একটা সময় মণি বিশ্বাসের পাড়া বলে খ্যাত ছিল। জ্যোতি বসু মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন বেশ কয়েকবার এই বাড়িতে এসেছিলেন। প্লাবনবাবু সার্জন। বয়সের কারণে এখন চেম্বার না করলেও মা নিয়মিত চেম্বারে বসছেন। সেই চেম্বারও দু’দিন হয় বন্ধ। একমাত্র ছেলে চিরতরে ছেড়ে চলে গিয়েছে। বৃদ্ধ দম্পতি সেই থেকেই পুরোপুরি গৃহবন্দি। নিচতলার ডানদিকে বিশ্বাস পরিবারের বাস। এখানেই একটি ঘরেই সিলিং ফ্যান থেকে নাইলনের দড়ির ফাঁসে নিজেকে শেষ করে দিয়েছেন ‘ফসিলস’-এর প্রাক্তন বেসিস্ট। তবে এই প্রথম নয়, ২৬ ডিসেম্বরও একই রকমভাবে নিজেকে শেষ করার চেষ্টা করেছিলেন। সে যাত্রায় বাবা-মা সতর্ক থাকায় দুর্ঘটনা ঘটেনি। বোন মহুয়া অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে এসে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান চন্দ্রমৌলিকে। ঘটনার দিন অর্থাৎ রবিবার মহুয়ার শ্বশুরবাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল সবার। বাবা-মাকে ট্যাক্সিতে তুলে দিলেও অনলাইন ক্লাসের কথা বলে চন্দ্রমৌলি বাড়িতে থেকে যান। মহুয়ার আক্ষেপ, “তখনও যদি জানতাম, ও এইরকম কিছু একটা ভাবছে। নিজেকে শেষ করে দেওয়ার…।” মহুয়ার থেকেই জানা গেল, ২০১৮ সালে ফসিলস থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরই চন্দ্রমৌলি অদৃশ্য এক খোলসের মধ্যে ঢুকে পড়েছিলেন। ওই বছর থেকেই বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা শুরু হয়। এই আইনি লড়াই পর্ব ক্ষতবিক্ষত করেছে চন্দ্রমৌলিকে। জানা গিয়েছে, দাম্পত্য সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছিল শেষটা। অভিযোগ, রিজেন্ট পার্কে যে বাড়িতে বিয়ের পর সস্ত্রীক থাকছিলেন চন্দ্রমৌলি সেখানেও তালা ঝুলিয়ে দেয় স্ত্রী। তার পরই ইন্ডিয়া মিরর স্ট্রিটে বাবা-মায়ের কাছে ফিরে আসেন চন্দ্রমৌলি।

সম্প্রতি সেই বিচ্ছেদ পর্ব শেষ হয়েছে। তখনও যদি জানা যেত, ভিতরে ভিতরে এতটা নিঃসঙ্গ হয়ে পড়েছে ৪৮ বছরের ছেলেটি! আসলে একাকিত্ব বা নিঃসঙ্গতা থেকে চন্দ্রমৌলিকে মুক্তি দিতে পারত মিউজিক, স্টেজ শো। কিন্তু, তা হয়নি। ফসিলস থেকে বেরনোর পর পরিচিত কয়েকজনকে নিয়ে ‘গোলক’ বলে একটি ব্যান্ড তৈরি করেন চন্দ্রমৌলি। ব্যান্ডের লিড ভোকালিস্ট মহুলই রবিবার ইন্ডিয়ান মিরর স্ট্রিটের বাড়িতে যান। পরে চন্দ্রমৌলিকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। মহুলের আক্ষেপ, ভীমপলাশী, চল রে চল, নীরবতা, গিরধারী, তুলতুলে খরগোশ, পাঁচটি গান তৈরি হয়ে ইউটিউবে রিলিজ হয়েছিল। চন্দ্রদা সব সময় বলত, “অন্যের গান গেয়ে লাভ নেই। সবটাই হবে ওসি অর্থাৎ ‘ওন ক্রিয়েশন’।” কিন্তু সমস্যা হল এত কম গানে, কম সময়ে স্টেজ শো পাওয়া মুশকিল। একাধিক ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থার দ্বারস্থ হয়েছিল গোলক। কিন্তু কোনও অদৃশ্য কারণে শো পাওয়া যায়নি। সংস্থার কর্ণধাররা শেষে চন্দ্রমৌলির ফোন কেটে দিতেন। এতেও হতাশা বাড়ছিল। মহুল জানালেন, ১৭ জানুয়ারি নতুন একটি মিউজিক ভিডিও প্রকাশ হওয়ার কথা। কিন্তু তার আগেই সব শেষ।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement