সুপর্ণা মজুমদার: দিব্যাঙ্গ তিনি। বিশেষভাবে সক্ষম। কিন্তু ছোটবেলা থেকেই আলাদা কিছু করার তাগিদ ছিল। সেই তাগিদেই কখনও সাইকেল নিয়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন পাহাড়ের চূড়ায়, কখনও আবার বন্যাদুর্গতদের বাঁচাতে নেমে পড়েন ঘোলা জলে। হুগলির সেই দামাল ছেলে উজ্জ্বল ঘোষ দেবের ‘বাঘা যতীন’ (Bagha Jatin) সিনেমায় অভিনয় করছে বিপ্লবী চারুচন্দ্র বসুর ভূমিকায়।
জন্ম থেকেই চারুচন্দ্র বসুর ডান হাত ছিল অসাড়। কিন্তু সাহসের কমতি তাঁর ছিল না। স্বাধীনতার যুদ্ধে দুঃসাহসিক লড়াইয়ের পর আপন করে নিয়েছিলেন ফাঁসির দড়ি। ঘটনাচক্রে উজ্জ্বলেরও ডানহাত দুর্বল। আর এটাই তাঁর আশীর্বাদ হয়ে ওঠে। এই দিব্যাঙ্গর জন্যই দেবের ‘বাঘা যতীন’ (Bagha Jatin) সিনেমার অঙ্গ হয়ে ওঠে হুগলির পুরশুরা এলাকার রসুলপুর গ্রামের ছেলে।
কীভাবে যোগাযোগ হল? প্রশ্নের উত্তরে নবাগত অভিনেতা জানান, পেশায় সাইকেল রাইডার তিনি। লাদাখেও গিয়েছিলেন। পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষারও বার্তা দেন। বিভিন্ন জায়গায় সাইকেলে করে বীজ নিয়ে গিয়ে বপন করেন। সাইকেলের সূত্রেই ‘বাঘা যতীন’ টিমের শ্রেয়ার সঙ্গে দেখা আলাপ হয় উজ্জ্বলের। শ্রেয়াই তাঁকে অডিশন দিতে বলেন।
সুপারস্টার দেবকে প্রথমবার সামনাসামনি দেখার অনুভূতি কেমন ছিল? উজ্জ্বলের উত্তর, “যখন সামনে দেখে ওনাকে দেখি ভাষা হারিয়ে ফেলেছিলাম। ওনার মতো মানুষকে খুব কাছ থেকে দেখা! আমি বলেছি দাদা এই জায়গাটা আমার প্রথম আমার একটু নার্ভাস লাগছে। তখন হাত-পাও কাঁপছিল। দেবদা তখন যেভাবে আমাকে সাপোর্ট করেছে মানে দেবদা বা অরুণদা, আরও অনেকেই ছিল। পাশে থেকে সবাই সাপোর্ট করেছে। সেটা আমাকে অনেক এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে।”
সিভিক ভলান্টিয়ারেরও কাজ করেছেন উজ্জ্বল। কিন্তু আপার লেভেলের পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পাননি। সুযোগ পেলে ‘জেনারেল’ ক্যাটাগোরির প্রতিযোগীদেরও পিছনে ফেলে দেবেন, এমনই আত্মবিশ্বাস হুগলির যুবকের। অভিনয়ের সুযোগ যখন যেমন পাবেন করবেন। কিন্তু সরকারি চাকরির আশায় দিন গুনছেন তিনি। তাতে যদি সংসারের একটু সুরাহা হয়। বাকিটা ঈশ্বরের উপরই ছেড়ে দিচ্ছেন উজ্জ্বল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.