সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পরনে সাদা পাঞ্জাবি। গায়ে জড়ানো শাল। হেয়ার স্টাইলেও খানিক সেকেলে ভাব। ভারতীয় ফুটবলের জনক নগেন্দ্রপ্রসাদ সর্বাধিকারীর ভূমিকায় ধরা দিয়ে প্রথম ঝলকেই গোল হাঁকালেন ‘গোলন্দাজ’ অভিনেতা দেব। আজ থেকে শুরু শুটিং। বুধবার বাণতলাতে ‘গোলন্দাজ’ টিম নিয়ে হাজির হলেন ‘ক্যাপ্টেন অফ দ্য শিপ’ পরিচালক ধ্রব বন্দ্যোপাধ্যায়।
মাত্র ১০ বছর বয়সে ময়দানে গোরা সৈন্যদের ফুটবল খেলা দেখে আকৃষ্ট হয়েছিলেন এই বাঙালি। নগেন্দ্রপ্রসাদ আদতে জমিদার বাড়ির ছেলে। দেবের মেক-আপও সেই জমিদারী বাঙালিয়ানা ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে। রেফারেন্স হিসেবে ধ্রুবর কাছে যদিও নগেন্দ্রপ্রসাদের কম বয়সের একটা ছবি রয়েছে, তবে পিরিয়ডিক ড্রামায় সেরকম চেহারা-লুক জীবন্ত করে তোলা চারটিখানি কথা নয়!
ধ্রুব অবশ্য দেবকে কাস্ট করার সময়েই জানিয়েছিলেন যে তাঁর চেহারা গড়নের সঙ্গে অদ্ভুতরকমের সাদৃশ্য রয়েছে নগেন্দ্রপ্রসাদের। শরীরী ভাষা আয়ত্ত করার জন্য অবশ্য দেবকে বেশ কয়েকটা ওয়ার্কশপ করতে হয়েছে। কোনওদিন ফুটবল খেলেননি, অথচ ভারতীয় ফুটবলের জনকের ভূমিকায় অভিনয় করবেন। অতঃপর কসরতও কম করেননি। মাস দু’-তিনেক ধরে হাজারও ব্যস্ততার মাঝেও ভোরবেলা-সকাল-বিকেল যখন সময় পেয়েছেন পায়ে ফুটবল নিয়ে মাঠে ঘাম ঝরিয়েছেন। অভিজ্ঞ ফুটবলারদের কাছ থেকে রপ্ত করেছেন ময়দানের কৌশলও। গায়ের রঙে সাদৃশ্য আনার জন্য ‘ট্যানড’ হয়েছেন। চরিত্রের প্রয়োজনে কুস্তিও শিখেছেন দেব। আর হ্যাঁ, খালি পায়েও ফুটবল খেলা প্র্যাকটিস করেছেন। এককথায় হোমওয়ার্কে কোনও রকম ফাঁক রাখেননি। আজ থেকে শুরু হল পরিচালক ধ্রুবর সেই কর্মযজ্ঞ। যার কাণ্ডারী দেব।
হেয়ার স্কুলে তার সহপাঠীদের সঙ্গে দল গড়ে ফুটবল খেলতে আরম্ভ করেছিলেন দেব। যার মাত্র কয়েক বছর আগে কলকাতার বুকে ব্রিটিশরা ফুটবল খেলতে শুরু করেছিল। ভারতবাসী হিসেবে প্রথম ফুটবলে পা দেওয়া সেই মানুষটি কিন্তু আদ্যোপান্ত এক বাঙালি। কিন্তু এমন গৌরবান্বিত ইতিহাস বোধহয় সিকিভাগ লোকেরই জানা। এই বাংলার অতীতেই লুকিয়ে রয়েছে কত অজানা গল্প। যার সঙ্গে মিলেমিশে রয়েছে পুরোদস্তুর বাঙালিয়ানা। বাংলা ইতিহাসের পরতে পরতে সুপ্ত থাকা সেই গল্পকেই সিনেম্যাটিক ফরম্যাটে জীবন্ত করে তুলতে চলেছেন ধ্রুব ‘গোলন্দাজ’-এর মাধ্যমে। নেপথ্যে এসভিএফ। শুটিং হবে কলকাতা এবং শহরতলীতে। ক্যামেরার দায়িত্বে সৌমিক হালদার।
ভারতীয় ফুটবলের জনকের জীবনকাহিনি ফ্রেমে তুলে আনতে ধ্রব বন্দ্যোপাধ্যায় কিন্তু চরিত্রের সঙ্গে মানিয়ে বেশ ভালই কাস্টিং করেছেন। শ্রীকান্ত আচার্য অভিনয় করবেন দেবের বাবার ভূমিকায়। নগেন্দ্র প্রসাদ সর্বাধিকারির স্ত্রী কমলিনীর চরিত্রে দেখা যাবে অভিনেত্রী ইশা সাহাকে। ব্যক্তিগতজীবনে কমলিনীই ছিলেন নগেন্দ্র প্রসাদের অন্যতম অনুপ্রেরক। অর্থাৎ টলিউডে আবারও একটা ফ্রেশ জুটি, দেব-ইশা।
সৃজিতের ‘দ্বিতীয় পুরুষ’ অনির্বাণ ভট্টাচার্যকে দেখা যাবে স্বাধীনতা সংগ্রামী ভার্গবের চরিত্রে। তাঁর হাত ধরেই দেশের ফুটবলের ইতিহাস এবং তৎকালীন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের মেলবন্ধন দেখানো হবে পর্দায়। যার কারিগর ‘গোলন্দাজ’ পরিচালক ধ্রবজ্যোতি। কাহিনিকার বিশিষ্ট ক্রীড়া সাংবাদিক দুলাল দে। প্রসঙ্গত, অনির্বাণ নিজেও ফুটবলের বড় ভক্ত। ইন্দ্রাশীসকে দেখা যাবে আরও এক দেশপ্রেমিকের ভূমিকায়। যার চরিত্রের নাম জিতেন্দ্র। অন্যদিকে দেবের শৈশবের বন্ধু বিনোদের ভূমিকায় দেখা যাবে জন ভট্টাচার্যকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.