Advertisement
Advertisement
পার্নো মিত্র

‘কাজ পেতে রাজনীতিতে যোগ দেওয়া বোকামি’, অকপট পার্নো মিত্র

রাজনীতি এবং নতুন কাজ নিয়ে কথা বললেন পার্নো।

Foolish to join politics for personal gain, says Parno Mittra
Published by: Sandipta Bhanja
  • Posted:August 3, 2019 9:47 am
  • Updated:August 3, 2019 9:47 am

তিনি বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড়। যাবতীয় বিতর্কের জবাবে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন পার্নো মিত্র। শুনলেন বিদিশা চট্টোপাধ্যায়

আপনাকে এর আগে সেভাবে পলিটিক্যালি সরব হতে দেখিনি। সোশ্যাল মিডিয়া বা অন্য কোথাও কোনও রাজনৈতিক দলের পাশেও ছিলেন না। হঠাৎ বিজেপিতে যোগ দিলেন কেন?

Advertisement

আমি মনে করি সব কিছুর একটা সময় থাকে। অ্যান্ড মাই টাইম হ্যাজ কাম। আমার রাজনৈতিক মতামত নিশ্চয়ই আছে, কিন্তু সেটা নিয়ে হয়তো প্রকাশ্যে কখনও আলোচনা করিনি। আর আমি ওই ঘরে বসে ফেসবুক আর টুইটারে মন্তব্য করায় এমনিতেও বিশ্বাস করি না। আমাদের মতো ইয়ং জেনারেশনের ছেলেমেয়েরা যদি এগিয়ে না আসে তাহলে দেশে বদল আসবে কী করে? ঘরে বসে ফেসবুকে প্রতিবাদ করলে তো আসবে না। এটাই আমার মনে হয়েছিল তাই যখন অফারটা আসে নিয়ে নিই।

যখন এই পদক্ষেপ নিলেন, তখন জানতেন যে অনেকেই অনেক কথা বলবে। কীভাবে নিজেকে তৈরি করেছিলেন?

সত্যি কথা বলতে কী, আমি ভাবিনি আমাকে নিয়ে কেউ মাথা ঘামাবে বা এত কথা বলবে কিংবা এতটা গুরুত্ব দেবে। আমি তো ভাবতাম আমি অভিনেত্রী, আমার ছবি আর কাজকে লোকে গুরুত্ব দেবে। কিন্তু  সেখানে গুরুত্ব না দিয়ে এই বিষয়ে দিয়ে ফেলেছে। ইট’স ওকে। তাই এত কিছু ভাবিওনি। আমি তো কলকাতায় ফিরেছিলাম দু’দিন পর। তবে হ্যাঁ, শুনেছিলাম এটাই হট টপিক হয়ে গিয়েছিল, এখনও তাই দেখছি। তবে আমি যে ধরনের মানুষ, এসব নিয়ে আমার কিছু এসে যায় না।

আপনি তো সেভাবে কোনও রাজনৈতিক দলের প্রতি ঝুঁকে ছিলেন না, কী মনে হয় আপনার এই নিরপেক্ষ থাকা কোনওভাবে আপনার কেরিয়ারে প্রভাব ফেলেছে? এবং সেটাও একটা কারণ এই সিদ্ধান্তের?

অনেস্টলি স্পিকিং আমার এতদিন নিরপেক্ষ থাকা যদি আমার কেরিয়ারে এফেক্ট করে থাকে তাহলে সেটা খুবই দুঃখজনক। আর সেটা ভেবে যদি আমি বিজেপিতে যোগ দিয়ে থাকি তাহলে সেটা আরও বড় রিস্ক এবং বোকামি, সেটা খুব ভালই জানি। কারণ তাহলে তো আরওই কেউ কাজ দেবে না আমাকে। আমার মনে হয় না তেমন অসুবিধে হয়েছে, কারণ আমি তো বরাবরই বেছে কাজ করেছি। কিন্তু হ্যাঁ, পলিটিকালি এফিলিয়েটেড থাকায় কিছু লোকের থেকে হয়তো কিছু লোকের বেশি সুবিধে হয়েছে। তো সেই সুবিধেটা না নিয়েও আমার চলে গিয়েছে। আমি অনেক জায়গায় না বলে দিয়েছি। আই অ্যাম ভেরি ওপেন অ্যাবাউট ডুইং সার্টেন থিংস। আমি অভিনয় করতে এসেছি, অভিনয়টাই করব। সেই সময় আমি কোনও রাজনৈতিক দলে যুক্ত হতে চাইনি। আমি সাফার করেছি কি না আমি জানি না। ইনডিরেক্টলি হয়তো করেছি, সেটা যারা করিয়েছে তারা বলতে পারবে।

[আরও পড়ুন: ‘নাচ বলিয়ে’র নয়া সিজনে কসৌটি জুটি পার্থ-এরিকা, খুশি নন ‘প্রাক্তন কমলিকা’ ঊর্বশী]

সত্যিই কি কোনওভাবে এফেক্ট করেনি?

অনেস্টলি বলতে আমাকে সেভাবে এফেক্ট করেনি। অল ইউ হ্যাভ টু ডু ইজ ইউ হ্যাভ টু বি ভেরি ক্লিয়ার আব্যাউট হোয়াট ইউ ওয়ান্ট। আমি ক্লিয়ার ছিলাম। এতদিন আমি সত্যি কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত থাকতে চাইনি। আমার মায়ের দিক সিপিএম, আমার বাবার দিক বিজেপি। আমি এই ক্ল্যাশ দেখে বড় হয়েছি। আমি যখন অভিনয় করতে এসেছিলাম তখন ভেবেছিলাম মন দিয়ে শুধু অভিনয়টা করলেই হবে।

কীভাবে ইন্ডাস্ট্রি বদলাতে দেখেছেন?

দেখুন, একটা বায়াসনেস তো রয়েইছে যারা ডিরেক্টলি না হলেও ইনডিরেক্টলি কোনও দলের সঙ্গে যুক্ত। তারা হয়তো বেশি সুবিধা পেয়ে থাকলেও থাকতে পারে। আমি একশোভাগ শিওর নই এবং আমি কাউকে এর জন্য দোষ দেব না । তবে হয়তো কিছু মানুষ ওদের সঙ্গে কাজ করতে বেশি কমফর্টেবল। কখনও কখনও মনে হয় যেন দুটো গ্রুপ হয়ে গিয়েছে। আমার মতো অন্যান্য অভিনেতাদের সঙ্গে কাজ করতে কমফর্টেবল ছিল না। তবু আমি বলব ভাল অভিনয় করলে এইসব নিয়ে ভাবার দরকার নেই। আমার এই সমস্যা তাই সেভাবে হয়নি। কারণ আমি সময়মতো প্রোজেক্টকে হ্যাঁ-ও বলেছি, সময়মতো না-ও বলেছি। আমি না বলতে পিছিয়ে যাইনি কখনওই। তাই আমার ক্ষেত্রে ‘খুব অসুবিধে হয়েছে’ এই থিওরি অ্যাপ্লাই হয় না।

অনেকেই হয়তো টিএমসি-তে ছিল এবং এখন বিজেপিতে যোগ দিতে চায়।

আপনার কী মনে হয় ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকতে গেলে কোনও না কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত হওয়া বাধ্যতামূলক?

একদম না, একেবারেই না। ইন্ডাস্ট্রিতে এমন অনেকেই আছেন যাঁরা নিরপেক্ষ। অনেক সিনিয়র আছেন যাঁরা নিরপেক্ষ হয়েও কাজ করছেন এবং তাঁদের নিজস্ব রাজনৈতিক মতামত থাকলেও কোনও দলকে তাঁরা রিপ্রেজেন্ট করেন না। তাদের তো অসুবিধে হয়নি। এবং আমি মনে করি শিল্প এবং রাজনীতি এক হওয়া উচিত নয়। আমি মেলাতেও চাই না। ইন্ডাস্ট্রি শুড বি অ্যাপলিটিকাল।

দেশের রুলিং পার্টির হিন্দুত্ববাদী মতাদর্শকে কীভাবে দেখছেন?

আমি হিন্দু এবং সেকুলার। অন্যান্য সব ধর্মের প্রতি আমার শ্রদ্ধা আছে। আমার যে বেস্ট ফ্রেন্ড সে মুসলিম। আমি ছোট থেকে বড় হয়েছি ওর সঙ্গে। প্রতি বছর ওর বাবার থেকে ইদি পেয়েছি। আমি এবারও কালিম্পং-এ শুট করতে গিয়ে ওদের বাড়ি লাঞ্চ করেছি। আমাদের সম্পর্কটা এরকমই। ও আমার পরিবারের মতো। এখানে কিছু লোক আছে যারা আইন হাতে নিয়ে ভুল কাজ করছে, সেটা দেখা দরকার। তবে অ্যান্টি মুসলিম কথাটা ঠিক নয়। না হলে ট্রিপল তালাকের মতো ইস্যু নিয়ে সোচ্চার হত না। হ্যাঁ, পার্টি হিসেবে হয়তো কোনও এক নির্দিষ্ট মাইনরিটি গ্রুপকে অ্যাপিজ করে না। সবার জন্য ইকুয়ালিটির কথা বলে এবং সেটা গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের রাজ্যে যে মাইনরিটি অ্যাপিজমেন্ট হচ্ছে সেটা ভাল কিছু করছে না, ইউ ডু সামথিং ইউ গেট অ্যাওয়ে উইথ ইট, সেটা তো ঠিক নয়। মাই পয়েন্ট ইজ অ্যাপিজ টু মাইনরিটি, দ্যাটস ফাইন, বাট অ্যাপিজ দেম ইন এ পজিটিভ ওয়ে। শিক্ষা ব্যবস্থার দিকে নজর দেওয়া হোক।

আমি দুঃখ পেয়েছি। অঞ্জনদার যদি সত্যি কিছু বলার থাকত, তাহলে উনি আমাকে ফোন করে বলতে পারতেন।

পনার ওপর কোনও দায়িত্ত্ব দেওয়া হয়েছে?

পার্টি যেভাবে বলবে কাজ করব। এখন আমি সেটার অপেক্ষাতেই রয়েছি। দেখা যাক। আমি মহিলাদের জন্য, বাচ্চাদের শিক্ষা নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী। লেট’স সি।

এটা কি আপনার কেরিয়ার শিফ্‌ট?

ইটস টু আর্লি টু সে দ্যাট।

অপর্ণা সেন বলেছিলেন, এই রাজ্যের রুলিং পার্টি যেহেতু ‘ডুবন্ত জাহাজ’ তাই সবাই সেটা ছেড়ে পাওয়ার-এর কাছাকাছি থাকতে চাইছে। কী বলবেন?

তিনি অত্যন্ত অভিজ্ঞ, তিনি যেটা ভাল মনে করেছেন বলেছেন। ইট ইজ হার আন্ডারস্ট্যান্ডিং অফ থিংস। অনেকেই হয়তো টিএমসি-তে ছিল এবং এখন বিজেপিতে যোগ দিতে চায়। বাট, এই যুক্তি আমার ক্ষেত্রে খাটে না। আমি কোনও পার্টির সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না। আর তিনি যদি মনে করেন রাজ্যের রুলিং পার্টি সিঙ্কিং শিপ তাহলে সেখানে থেকে তো কাজ করা যাবে না, তার জন্য সেলিং শিপে সওয়ার হতে হবে।

আচ্ছা, আপনার আর মৈনাকের বিয়েটা কি হবে?

এক্ষুনি কী করে বলব! লাইফ ইজ টু আনসার্টেন। আমি কী জানতাম যে আমি বিজেপি জয়েন করব। তেমন ওটাও জানি না।

আপনি সম্প্রতি, যে ৪৯ জন শিল্পী প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন তাঁদের ‘সিলেক্টিভ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন..

হ্যাঁ, কারণ কোনও একটা পার্টিকে লিঞ্চিং-এর জন্য দায়ী করা ঠিক নয় বলে আমি মনে করি। আমি আগেও বলেছি, যে বা যারা এই কাজ করছে তাদের সাজা হওয়া উচিত। উপযুক্ত শাস্তি হওয়া উচিত। এবং লিঞ্চিং-এর প্রথা আজকের নয়। এর আগেও হয়েছে। কিন্তু শুধু একটি স্লোগানকে ইস্যু করে যারা এই প্রশ্ন তুলছে তাদের আর নিরপেক্ষ মনে করতে পারছি না। ভারতীয় নাগরিক হিসেবে আমি এটাই বলব, আমি এবং আমার মতো যারা তারা কেউই ভায়োলেন্স চায় না।

সম্প্রতি একটি সাংবাদিক সম্মেলনে অপর্ণা সেনকে যেভাবে একজন নির্দিষ্ট সাংবাদিক একই মর্মে হেনস্তা করেছেন সেটা নিয়ে আপনি কিছু বলবেন?

অন্যের কাজের জন্য আমি জবাবদিহি কেন করব! সেই সাংবাদিক নিজের কাজ করছেন। তাঁর কাজ করার পন্থা নিয়ে কথা বলতে আমি আগ্রহী নই!

পরিচালক অঞ্জন দত্ত’র ফেসবুক পোস্ট যে আপনাকে নিয়েই সেটা নিয়ে সন্দেহের কোনও অবকাশ নেই। এবং সেটা নিয়েও অনেক কথা হয়েছে। কী বলবেন?

আমি আগেও বলেছি, আমি দুঃখ পেয়েছি। অঞ্জনদার যদি সত্যি কিছু বলার থাকত, তাহলে উনি আমাকে ফোন করে বলতে পারতেন। দুটো মানুষের পলিটিকাল বিশ্বাস এক না-ই হতে পারে, ডেমোক্রেসি তো সেই কথাই বলে, তার জন্য সোশ্যাল মিডিয়াতে যেভাবে লিখেছেন সেটা আমাকে হার্ট করেছে।

অঞ্জন দত্ত’র সঙ্গে আপনার তো ‘শ্রীকান্ত’ ছবির সিরিজে কাজ করার কথা ছিল। কী মনে হয় সেটা আর সম্ভব হবে?

আমি পার্সোনাল এবং প্রফেশনাল জায়গা আলাদা করে দেখতে পারি। আমার কারও সঙ্গে কাজ করতেই কোনও আপত্তি নেই যদি স্ক্রিপ্ট পছন্দ হয়। আমার ব্যক্তিগত রাজনৈতিক মতামত থাকতেই পারে তার জন্য যদি কেউ আমার সঙ্গে কাজ না করতে চান সেটা নিয়ে আমার আর কিছু বলার নেই।

[আরও পড়ুন: অরুণাচলে খোশমেজাজে ভিকি, জওয়ানদের রুটি বানিয়ে খাওয়ালেন অভিনেতা]

কৌশিক সেন একটি বিবৃতি দিয়েছেন এবং আপনাকে প্রশ্ন করেছেন সম্প্রতি বিজেপির একটি বিল পাস নিয়ে। যেখানে বলা হচ্ছে সন্দেহের ভিত্তিতে যে কোনও ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা যেতে পারে। যে পার্টি এই বিল পাস করতে পারে সেই পার্টি সম্পর্কে আপনার কী মত, কৌশিক সেন জানতে চেয়েছেন।

আমি ওঁদের চিঠির প্রেক্ষিতে কিছু কথা বলেছি। ন্যাশনাল ইস্যুর কথা তুলে তো রাজ্যের সমস্যার কথা এড়িয়ে যাওয়া যায় না। আর এই প্রশ্নের উত্তর দেবে পার্টির স্পোক্‌সপার্সন। এবং এই প্রশ্ন যদি তুলতেই হয় তাহলে ওঁরা চিঠিতেই প্রশ্ন করতে পারতেন। আর আমি কোনও একজন ব্যক্তিকে উদ্দেশ্য করে কিছু বলিনি। চিঠির যে ইস্যু তাতে আমিও সহমত যে লিঞ্চিং বন্ধ হওয়া উচিত। আমি শুধু বলেছি লিঞ্চিং-এর জন্য কোনও একটি পার্টিকে দায়ী করা ঠিক নয়।

শুনলাম, সেপ্টেম্বর থেকে টানা শুটিংয়ে ব্যস্ত থাকবেন?

হ্যাঁ। জি-ফাইভ-এর একটা ওয়েব সিরিজ আর একটা ছবির কাজ নিয়ে। তবে ডিটেল্‌স এক্ষুনি বলতে পারব না।

ঋত্বিকের সঙ্গে হরনাথ চক্রবর্তীর ছবির শুটিং করে এলেন। কেমন অভিজ্ঞতা?

দারুণ। ঋত্বিকের সঙ্গে এই নিয়ে পরপর তিনটে ছবি করে ফেললাম। এটা থ্রিলার ছবি। বেশি কিছু বলব না। তবে হরদার ছবির সেট একেবারে পরিবারের মতো তাই খুব এনজয় করেছি (হাসি)।

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement