সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ছবি মুক্তির আগেই আইনি রোষানলে পড়ল আয়ুষ্মান খুরানার ‘আর্টিকল ১৫’। পরশুরাম সেনাদের তোপের মুখে পড়ার পর এবার এক আইনজীবী মামলা দায়ের করে এই ছবির নির্মাতাদের বিরুদ্ধে। দুই দলিত কিশোরীকে ধর্ষণ করে খুন করার পর তাদের দেহ গাছের ডালে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল বদায়ুঁতে। সেই ঘটনার পর পাঁচ বছর কেটে গিয়েছে। প্রমাণের অভাবে ছাড়াও পেয়ে গিয়েছে অভিযুক্তরা। অনুভব সিনহার ছবি ‘আর্টিকল ১৫’ বদায়ুঁ ধর্ষণ মামলার উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে। গুজরাতের উনার ঘটনাটি ২০১৬ সালের। গোরক্ষার নামে ব্যাপক মারধর করা হয় একই দলিত পরিবারের সাতজনকে। গত তিন বছর ধরে সেই ঘটনার বিচার আজও চলছে। সাম্প্রতিক অতীতে আরও একটি ঘটনা ঘটে খাস মুম্বইয়ে। দলিত শ্রেণিভুক্ত ভিল সম্প্রদায়ের এক চিকিৎসক পায়েল তাদভির আত্মহত্যার নেপথ্যে অভিযোগ ওঠে জাতিবিদ্বেষের। আর এই সমস্ত ঘটনা ভারতীয় সংবিধানের যে ১৫ নম্বর অনুচ্ছেদে অপরাধ বলে গণ্য। এসমস্ত বিষয়গুলোরই ঝলক মিলেছে ‘আর্টিকল ১৫’-এর ট্রেলারে।
[আরও পড়ুন: চিত্রনাট্য চুরির অভিযোগ, থানায় ডেকে পাঠানো হল আয়ুষ্মানকে ]
এর আগে ছবির ট্রেলার দেখে ক্ষুব্ধ হয়েছিল পরশুরাম সেনা। তাঁদের অভিযোগ ছিল, ব্রাহ্মণদের মধ্যেও উচ্চবর্ণ মহান্তদের উপর প্রশ্নচিহ্ন তুলেছে এই ছবি। তাঁদের অপরাধী হিসেবে প্রতিপন্ন করা হয়েছে। যা একেবারেই অনুচিত। পরশুরাম সেনারা এও হুমকি
দিয়েছিলেন যে, ‘পদ্মাবত’ ছবির বিরোধিতা যদি ঠাকুররা করতে পারে, তাহলে নিজের সম্মান রক্ষার্থে তারাই বা ছবির বিরোধিতা করতে পারবে না কেন? এই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় আন্দোলন করার কথাও জানিয়েছিলেন তাঁরা।
সোমবার শিবকুমার ঝাঁ বিহারের মুজফফরপুরে মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাসে ‘আর্টিকল ১৫’-এর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। তাঁর দাবি, ব্রাহ্মণ-সহ সমাজের উচ্চবর্ণের বিরুদ্ধে অবমাননাকর মন্তব্য করা হয়েছে ‘আর্টিকল ১৫’ ছবিটিতে।
তিনি নিজে একজন ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের মানুষ হিসেবে ট্রেলার দেখে বেশ আঘাত পেয়েছেন। তাঁর ধারণা, ছবিটি সাম্প্রদায়িক ভেদাভেদকে উসকানি দিয়ে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে আরও অশান্তির সৃষ্টি করতে পারে। আর তাই এই মর্মে ছবির মূল অভিনেতা আয়ুষ্মান খুরানা-সহ পরিচালক অনুভব সিনহা, সিনেম্যাটোগ্রাফার এবং দুই সংগীত পরিচালক অনুরাগ শইকিয়া ও মঙ্গেশ ধাকড়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন ঝাঁ। ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৩, ১৫৩ এ, ৫০০ এবং ৫০৬ ধারায় দায়ের
করা হয়েছে ওই মামলা। ওই চারটি ধারাই দাঙ্গামূলক ঘটনা, ধর্ম, জাতি, ভাষা, বর্ণের ভিত্তিতে সাম্প্রদায়িক বিভেদ সৃষ্টি এবং জাতিগত ঐক্য নষ্ট করার ঘটনার প্রতিরোধ করে। যার শুনানি হবে আগামী ১৭ জুন।
[আরও পড়ুন: এবার সুজিত সরকারের ছবিতে একসঙ্গে অমিতাভ-আয়ুষ্মান]
ধর্ম, জাতি, সম্প্রদায়, লিঙ্গ এবং জন্মস্থানের ভিত্তিতে মানুষে মানুষে ভেদাভেদের বিরুদ্ধে কথা বলে ভারতীয় সংবিধানের ১৫ নম্বর অনুচ্ছেদ। উক্ত বিষয়গুলোর ভিত্তিতে মানুষের অধিকারগত তফাতের বিরুদ্ধেও কথা বলে। আয়ুস্মান খুরানা অভিনীত এই ছবিটি জাতিবিদ্বেষ, শ্রেণি ভেদাভেদ সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়েই কথা বলেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.