সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মহাকাশ নিয়ে বরাবর কৌতূহল ছিল সুশান্ত সিং রাজপুতের। অ্যাস্ট্রোফিজিক্স নিয়ে পড়াশোনা করতেন। মহাকাশের গ্রহ, নক্ষত্র দেখতে বাড়ির বারান্দায় বসিয়েছিলেন একটি টেলিস্কোপ। মাঝে মধ্যেই তাতে চোখ লাগিয়ে মহাকাশে হারিয়ে যেতেন তিনি। ১৪ জুনের পর তো তিনি তারাদের কাছেই চলে গিয়েছেন। তাই সুশান্তের নামেই একটি তারার নাম দিলেন তাঁরই এক অনুরাগী রক্ষা। প্রিয় অভিনেতাকে এভাবেই শ্রদ্ধা জানালেন তিনি। মহাকাশে তারাটির অবস্থান নিয়ে টুইটারে জানিয়েছেন রক্ষা।
তারার নামকরণের সার্টিফিকেটে লেখা হয়েছে এক মন ছুঁয়ে যাওয়া মেসেজ। সেখানে বলা হয়েছে, ‘সুশান্ত সিং রাজপুত, তোমাকে সবাই মিস করব। তোমার নাম ভবিষ্যতে আমাদের সবাইকে উজ্জ্বল করবে। তোমার চোখের দ্যুতি প্রতিফলিত হয়ে আমাদের কাছে পৌঁছবে। তোমার উজ্জ্বল হাসি আমাদের আলো দেখাবে। তুমি যে ভাবে নিজের একের পর এক স্বপ্নকে সফল সফল করার একাগ্রতা ও পরিশ্রম আমাদের অনুপ্রাণিত করবে। কাজ নিয়ে তোমার আনুগত্য ও ভালোবাসা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। তোমার আত্মা শান্তিতে থাকুক। সব তারা মধ্যে সবচেয়ে উজ্জ্বল হয়ে বিরাজ করো তুমি।’
সুশান্ত সিং রাজপুতের আত্মহত্যার তদন্ত প্রায় প্রতিদিনই নতুন মোড় নিচ্ছে। সোমবার পরিচালক সঞ্জয় লীলা বনশালির বয়ান রেকর্ড করে মুম্বই পুলিশ। এদিন বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ বান্দ্রা থানায় পৌঁছন বনশালি। সঙ্গে ছিলেন তাঁর আইনজীবী এবং তাঁর কয়েকজন কর্মচারী। সূত্রের খবর, বনশালি তাঁর ‘রামলীলা’ ছবির জন্য প্রথমটায় সুশান্তকেই বেছে নিয়েছিলেন। কিন্তু যশরাজ ফিল্মসের সঙ্গে সেই সময়ে সুশান্ত চুক্তিবদ্ধ থাকায়, সংশ্লিষ্ট প্রযোজনা সংস্থার কর্ণধার আদিত্য চোপড়া সুশান্তকে অনুমতি দেননি। সেই কারণে বনশালিকে ফিরিয়ে দেন সুশান্ত। এরপর বনশালির ছবিটি (রামলীলা) সুপারহিট হয়। ফলে মনক্ষুণ্ণ হয়েছিলেন সুশান্ত। শুধু তাই নয়। তাঁকে আদিত্য চোপড়া অনুমতি দেয়ননি অন্য প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে কাজ করার। অথচ রণবীর সিং কিন্তু যশরাজ ফিল্মসের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ থাকাকালীনও অন্যান্য প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে কাজ করেছেন। তাতে আদিত্য চোপড়া কোনও রকম বাধা দেননি! তাই কেন দুই অভিনেতার সঙ্গে দু’রকম আচার-ব্যবহার? এই প্রশ্ন কিন্তু ইতিমধ্যেই উঠেছে। সেই প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই সঞ্জয় লীলা বনশালিকে ডেকে পাঠানো হয়।
এদিকে সুশান্তের আত্মহত্যার পর নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি উঠেছে দেশজুড়ে। ময়নাতদন্ত এবং ভিসেরা রিপোর্টে ‘আত্মহত্যা’র কথা স্পষ্ট উল্লেখ থাকলেও পেশাগত রেষারেষি কিংবা শত্রুতার বিষয়টিও একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ। সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ (Anil Deshmukh) আশ্বাস দিয়েছিলেন যে সুশান্তের মৃত্যু নিয়ে যথাযথ তদন্ত হবে। প্রয়োজনে অভিযোগের ভিত্তিতে খতিয়ে দেখা হবে যে, পেশাগত বিদ্বেষই অভিনেতাকে এমন চরম সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছে কিনা! এর জন্য সিবিআই তদন্তেরও দাবি করেছেন শেখর সুমন-সহ অনেকেই। এবার এই দাবি নিয়ে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দ্বারস্থ হলেন নেটিজেনরা। তাদের বক্তব্য মনমীত গ্রেওয়াল, প্রেক্ষা মেহতা, দিশ সালিয়ান- প্রত্যেকে সুশান্তের কাছে লোক ছিলেন বলে শোনা যায়। কয়েক দিনের ব্যবধানে পরপর ৪ জন কীভাবে আত্মহত্যা করলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। এই কারণেই তদন্তের ভার এবার কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার হাতে তুলে দিতে হবে বলে প্রধানমন্ত্রীকে আর্জি জানাতে শুরু করেন নেটিজেনরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.