Advertisement
Advertisement

Breaking News

Nandita-Shiboprosad Interview

একের পর এক হিট ছবি, এতদিনের পার্টনারশিপ, কীভাবে? জানালেন নন্দিতা-শিবপ্রসাদ

'হামি ২' সিনেমার নেপথ্যের কাহিনিও শোনালেন পরিচালক জুটি।

Exclusive Interview of Nandita Roy and Shiboprosad Mukherjee before Haami 2 movie release | Sangbad Pratidin
Published by: Suparna Majumder
  • Posted:December 16, 2022 2:23 pm
  • Updated:December 16, 2022 4:04 pm  

দুই দশকেরও বেশ সময় ধরে একসঙ্গে কাজ করছেন। জুটি বেঁধে একের পর এক সুপারহিট ছবি উপহার দিয়েছেন। এবার বড়দিনে নিয়ে  আসছেন ‘হামি ২’ (Haami 2)।  তার আগে সংবাদ প্রতিদিনের প্রতিনিধি বিদিশা চট্টোপাধ্যায় মুখোমুখি নন্দিতা রায় ও শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়।

টেলিভিশন আর বড়পর্দা মিলিয়ে আপনাদের পার্টনারশিপের প্রায় ২৪-২৫ বছর হল। বিয়েও টেকে না আজকাল। আপনারা এতদিন একসঙ্গে কীভাবে এটা সম্ভব করলেন?
নন্দিতা: আমার মনে হয় পার্টনারশিপটা টিকে থাকার কারণ, যেহেতু শিবু আমার থেকে ছোট, তাই আমাদের সম্পর্কে শ্রদ্ধা কাজ করে।
শিবপ্রসাদ: একসঙ্গে কোনও কাজ করতে গেলে ব‌্যালান্স আর ট্রাস্ট খুব গুরুত্বপূর্ণ। আর দিদির জন‌্যই ভারসাম‌্য আছে। একটা উদাহরণ দিই। আমাদের পোস্টারে, সিনেমায় সবসময় ‘নন্দিতা-শিবপ্রসাদ’ এইভাবে লেখা হয়। কিন্তু মিডিয়া বা ইন্ডাস্ট্রির পেট্রিয়ার্কাল সিস্টেমে সবসময় লেখা হয় শিবপ্রসাদ-নন্দিতা। সবসময়ই আমাকে সামনে রেখে দেখা হয়, দু’জনের ইউনিট হিসাবে নয়। এটা মেনে নিয়ে, অপ্রভাবিত থেকে নিজের কাজটা দিনের পর দিন সেই মানুষটাই করতে পারে যার নিজের মধ্যে একটা ব‌্যালান্স আছে। নন্দিতাদি সেই মানুষটা। আর আমি অভিনেতা, লাইমলাইট আমার দিকে বেশি। ‘হামি টু’-তে আমি বেশিরভাগটাই অভিনেতা হিসাবে কাজ করেছি। নন্দিতাদি পরিচালনার কাজটা সামলেছেন। তবু আমার দিকেই ফোকাস বেশি থাকে। সেটাকে মেনে নিজেদের মধ্যে ট্রাস্ট এবং কাজের পরিবেশ টিকিয়ে রাখা কিন্তু শক্ত। এই দীর্ঘ পথচলার ক্রেডিটটা আমি নন্দিতাদিকেই দেব।

Advertisement

shiboprasad-nandita1

কেমন বিষয় নিয়ে ছবি করবেন, সেটা কীভাবে ঠিক করেন আপনারা?
নন্দিতা: শিবুই সবসময় নিত‌্যনতুন আইডিয়া নিয়ে আসে।
শিবপ্রসাদ: আমি প্রায় প্রত্যেকদিন একটা করে আইডিয়া দিই, আর দিদি সেটাকে রিজেক্ট করে।

‘হামি টু’ কীভাবে এল?
নন্দিতা: ২০১৮ মানে যখন ‘হামি’ মুক্তি পায় সেই সময় শিবু এই রিয়ালিটি শো-এ শিশু প্রতিযোগীদের অংশ নেওয়া এবং বাবা মায়ের অবস্থান– সব মিলিয়ে কনসেপ্টটা দেয়। আমার খুব ভাল লেগেছিল। মনে হয়েছিল এটা থেকে একটা গল্প দাঁড় করাতে পারব।
শিবপ্রসাদ: আমরা তো টিভিতে প্রচুর নন-ফিকশন শো করেছি। ‘সা থেকে সা’, ‘ঋতুর মেলা…’ এমন রিয়ালিটি শোও রয়েছে। এইসব কাজের অভিজ্ঞতা থেকেই মনে হয়েছিল রিয়ালিটি শোয়ের জগৎ নিয়ে একটা ছবি হতে পারে। ছবিতে অঞ্জন দত্তর একটা সংলাপ সার কথাটা বলে দেয়– “বিস্ময় হতে যেও না, বিস্মিত হয়ে যাবে”। আর এই যে রিয়ালিটি শো-তে ছোটদের জিনিয়াস, ব্রিলিয়ান্ট বলে তোল্লাই দেওয়া হয়ে থাকে – এটা তো ক্ষণস্থায়ী। এত ভ‌্যালিডেশন ওই ছোট অপোক্ত মনের পক্ষে হ‌্যান্ডেল করা শক্ত। জিনিয়াস হতে গেলে অনুশীলন লাগে– এটা বোঝা দরকার।

Haami-2-Cricket

[আরও পড়ুন: শাহরুখের মা-বাবার ছবি আঁকলেন কলকাতার ইউসুফ, ক্যানভাস হাতে পেয়ে কী বললেন বাদশা?]

‘হামি টু’ ছবির ট্রেলার দেখে বোঝা যাচ্ছে যে রিয়ালিটি শো নিয়ে আপনাদের একটা ‘স্ট‌্যান্ড’ রয়েছে। কী মনে হয় ইন্ডাস্ট্রির ব‌্যাকল‌্যাশ আসতে পারে বা আপনারা কখনও এই ধরনের শিশুদের রিয়ালিটি শো প্রোডিউস করবেন?
নন্দিতা: না, না, মনে হয় না করব।
শিবপ্রসাদ: আর করলেও সেটা অন‌্যরকম হবে। তাদের কিছু একটা শেখানো দরকার। শোয়ে তেমন একটা জায়গা তৈরি করতে হবে।

রিয়ালিটি শো-তে কিছু শেখা সম্ভব?
নন্দিতা ও শিবপ্রসাদ: হ্যাঁ, হ্যাঁ, কেন সম্ভব নয়!

আপনাদের মধ্যে মতবিরোধ কতটা হয়?
নন্দিতা: নানা বিষয় নিয়ে ডিবেট হয়।
শিবপ্রসাদ: আসলে দিদির একটা সূক্ষ্ম মাপবোধ আছে। কখন কোনটা প্রায়োরিটি সেটা বুঝে ‘না’ বলতে পারে।

Nandita Shiboprasad

 

এই যে মাপের কথা বললেন, পপুলার বিষয় নিয়ে ছবি করতে গেলে অনেক সময় চরিত্র লিখতে গিয়ে পিতৃতান্ত্রিক সমাজের গাইডলাইন মানতে হয় কিংবা চেনা ধারণাগুলোকে মাত্রাতিরিক্ত হাইলাইট করতে হয়। মা মানেই ছেলের কেরিয়ার নিয়ে আকুল, ‘মালিনী’-র মতো না হয়ে ‘সুদীপা’-র মতো হলে সংসার ভাঙে, কিংবা একটি শিশু মোটা হলে বেশি খাবে এবং সেটাই হাস‌্যরস উদ্রেক করবে। লেখার সময় এসব কীভাবে সামলান?
নন্দিতা: আমি তো নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে লিখি। দীর্ঘদিনের মানুষ-চেনা, নানান ঘটনা ভিত্তি করে লিখি, নিজের জীবনের পথ চলা নিয়ে থার্ড আই খুলে গিয়েছে বলা যায়। আমি যেটা বুঝি, যে ভাবে ব‌্যালান্স করতে পারি সেইভাবেই লিখি।

অঞ্জন দত্ত এবং প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ‌্যায় এক ছবিতে! এটা তো দারুণ ব‌্যাপার! অঞ্জন দত্তকে রাজি করালেন কী করে? তিনি তো এই ধরনের ছবি থেকে দূরে থাকতেন?
শিবপ্রসাদ: বুম্বাদা এখানে নিজের ভূমিকাতেই থাকছেন। অনেকটা ‘স্লামডগ মিলিওনেয়ার’-এর অনিল কাপুরের মতো। বুম্বাদার শোয়ের মধ্যে দিয়ে জীবনের একটা নতুন জায়গা সামনে চলে আসে। আর এটা ঠিকই, অঞ্জনদা এই ধরনের ছবি করতে চাইতেন না। প্রথমদিকে ওঁর হয়তো একটা সংশয় ছিল। কিন্তু চরিত্রটা বোঝার পর উনি যখন পুরোদমে কাজটা করলেন তখন বুঝলাম একজন অভিনেতা হিসাবে কীভাবে গভীরভাবে ভিতরে ঢুকে গেলেন। ‘হামি টু’-তে ওয়ান অফ দ‌্য মেন ট্রাম্প কার্ড ইজ অঞ্জন দত্ত। সেটা দেখলে বুঝতে পারবে।

‘লাল্টু’ কখনও ‘বিশ্বাস’ হয়েছে, কখনও ‘দত্ত’ কখনও বা ‘মণ্ডল’। ‘লাল্টু- মিতালি’কে কীভাবে পেলেন?
নন্দিতা: আসলে লাল্টুর চরিত্রটা আমি ক্রিয়েট করেছিলাম ‘আর কে লক্ষ্মণ’-এর ‘কমন ম‌্যান’ থেকে ইন্সপায়ার হয়ে। যে ‘কমন ম‌্যান’ জনসাধারণের কথা বলে। সো দ‌্যাট ‘কমন ম‌্যান’ ওয়াজ ‘লাল্টু’ ফর মি। পদবি বদলাতে পারে, পরিস্থিতি বদলাতে পারে– কিন্তু লাল্টু, রিমেনস লাল্টু।

Haami-2-Laltu-Mitali

আপনারা দু’জনে দীর্ঘদিন একসঙ্গে কাজ করেছেন। পরস্পরের থেকে সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি?
শিবপ্রসাদ: নন্দিতাদির থেকে সবচেয়ে বড় পাওনা এবং শিক্ষা হল মাটিতে থাকা, গ্রাউন্ডেড থাকা, অন‌্যদের শ্রদ্ধা করা, উদ্ধত না হওয়া। এগুলো নন্দিতাদি প্রতিদিন আমাকে বলেন।

মানে শিবপ্রসাদ মুখোপাধ‌্যায়কে ‘লাল্টু’ হতে শিখিয়েছেন নন্দিতা রায়?
শিবপ্রসাদ: একেবারেই তাই। প্রিভিলেজ-এর সুযোগ না নিতে শিখিয়েছেন নন্দিতাদি। গ্রাউন্ডেড থাকাটা খুব দরকার। অল্প বয়সে বাবাকে হারিয়েছিলাম। এমন একজনের মতো গুরুজন দরকার ছিল।
নন্দিতা: আমি একটা জিনিস বলতে চাই শিবু কিপস মি ইয়াং! ইফ শিবু ইজ অ‌্যারাউন্ড, আই ডোন্ট থিংক আই উইল এভার গ্রো ওল্ড। হি ইজ সো ডায়নামিক। ইট কিপস মি গ্রোয়িং!

[আরও পড়ুন: চঞ্চল চৌধুরীর অভিনয়েই বাজিমাত, সত্যিই ঝড় তোলার মতো ছবি ‘হাওয়া’, পড়ুন রিভিউ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement