মুক্তি পেল ‘মিথ্যে প্রেমের গান’ (Mitthye Premer Gaan)। পরমা নেওটিয়া পরিচালিত প্রথম ছবি। ত্রিকোণ প্রেমের ছবিতে অন্যতম প্রধান মুখ ইশা সাহা (Ishaa Saha)। সম্পর্ক, কাজ ও তাঁকে ঘিরে গসিপ নিয়ে স্পষ্ট কথায় অভিনেত্রী। মুখোমুখি শম্পালী মৌলিক।
দারুণ ফেজের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন, যাকে বলে বৃহস্পতি তুঙ্গে।
আমি তেমন দেখছি না কিন্তু (হাসি)।
এই জন্য বলছি, কিছুদিন আগে ‘কাছের মানুষ’-এ আপনাকে দেখা গেল প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় এবং দেবের সঙ্গে। এবার ‘মিথ্যে প্রেমের গান’-এ আপনাকে পাওয়া যাবে অনির্বাণ ভট্টাচার্য ও অর্জুন চক্রবর্তীর সঙ্গে। এটা কি ভাল সময় নয়?
গুড ফেজ হয়তো। তবে বৃহস্পতি তুঙ্গে এটা ঠিক বুঝতে পারছি না (হাসি)। আসলে এই ফেজে কিন্তু এগুলো ঘটেনি। এইগুলো সবই গত বছর শুট করা। ফলে ভাল ফেজ ওই সময় ছিল। এই মুহূর্তে সত্যি কিছু করছি না। যেটা বললে, ‘বৃহস্পতি তুঙ্গে’– তার ফল এবার পাব। ফাইনালি এবারে কাজটা লোকজনের সামনে আসবে।
‘মিথ্যে প্রেমের গান’ ভ্যালেন্টাইনস ডে-র মুখে ১০ ফেব্রুয়ারি (আজ) আসছে। সত্যি প্রেমের গানটা কবে গাইবেন?
(জোরে হাসি) সবসময় গাইছি কিন্তু সেটা ভীষণ প্রাইভেট। আমি খুব প্রাইভেট পার্সন।
প্রেমের অর্থ ঠিক কীরকম আপনার কাছে? একজন মানুষকে ভাল লাগার শুরুটা কীভাবে?
কী বলব, সেরকম কোনও পার্টিকুলার প্যারামিটার তো হয় না প্রেমের। কন্ডিশনস তো থাকে না, যে এইটা হলে ওইটা হবে। হঠাৎ করেই হয়। সেটা কারও গান শুনে হতে পারে, কথা শুনে, কবিতা শুনে বা অ্যাক্টিং দেখেও হতে পারে।
আপনার ক্ষেত্রে কি ‘লাভ অ্যাট ফার্স্ট সাইট’ হতে পারে বা হয়েছে?
না, আমি খুব প্র্যাকটিকাল। আমার একটু সময় লাগে।
এই ছবিটা মিউজিক্যাল। ১১টা মতো গান রয়েছে…
হ্যাঁ, গানগুলো দারুণ। অনির্বাণের লিপে ঈশানের গান রয়েছে, আমার সবগুলোই দারুণ লেগেছে। তার ওপর রণজয় (ভট্টাচার্য) – কলকাতায় আমার প্রিয় সিঙ্গার, লিরিসিস্ট, কম্পোজারদের মধ্যে রণ অন্যতম। সেই ‘প্রেমে পড়া বারণ’ থেকে ভাললাগাটা ছিল। অনির্বাণ, অর্জুন ছাড়াও, আমার বাবার চরিত্রে দেবেশদাও গান করেছেন– সবমিলিয়ে দারুণ লেগেছে। শ্রোতা হিসাবেও উপভোগ করছি, নিজের ছবি বলে নয়।
অনির্বাণ ভট্টাচার্যর সঙ্গে আগে কাজ করেছেন ‘ডিটেকটিভ’-এ, কিন্তু বড়পর্দায় এই প্রথমবার। কেমন অভিজ্ঞতা?
আমার কাছে বড়পর্দা, ছোটপর্দা বলে আলাদা কিছু করার নেই। কিন্তু ‘ডিটেকটিভ’-এর সময় কথা কম হয়েছে আমাদের। সবে লকডাউন গিয়েছে তখন, আমরা ড্রপলেটের ভয় পাচ্ছি, যে ছড়াবে! অনস্ক্রিন সিনও কম ছিল। এই ছবিতে অনির্বাণের সঙ্গে কাজের ক্ষেত্রে বলব– উলটো দিকে যখন ভাল কো-অ্যাক্টর থাকে, এক্সাইটমেন্টের সঙ্গে চাপও থাকে। কারণ, আমাকে তাঁর মাত্রা অবধি পৌঁছতে হবে। তখন অটোমেটিক্যালি কাজ আরও ভাল হয়। শুরুর দিকে আমার একটু চাপ মনে হয়েছিল। প্রথমদিনই দু’জনের একসঙ্গে সিন ছিল। খুব ভয়ে ছিলাম, কিন্তু মসৃণ হয়ে গিয়েছিল। পরমা বলে, ‘তোমরা বাই নেচার এত আলাদা, যে তোমাদের অনস্ক্রিন দেখতে ভাল লাগছে।’
এই ছবিতে অর্জুন চক্রবর্তীও গুরুত্বপূর্ণ রোলে। ত্রিকোণ সম্পর্কের অ্যাঙ্গেল রয়েছে। অর্জুনের সঙ্গে সোনাদা ফ্র্যাঞ্চাইজিতে কাজ করেছেন। সেখানে তো মজার সম্পর্ক, এখানে অনেক গভীর বিষয়…
ওই ছবিগুলোতে কাজের ফলে অর্জুনের সঙ্গে আমার সম্পর্কটা ছোটবেলার বন্ধুর মতো, সারাক্ষণ হাহা-হিহির। এখানে তা নয়। এক্ষেত্রে সিরিয়াস সিন করতে গিয়ে অনেক সময়ই দেরি হয়েছে। কারণ, হেসে ফেলেছি আমি।
পরমা নেওটিয়ার ডিরেক্টোরিয়াল ডেবিউ এটা। কেমন লেগেছে কাজ করে?
দারুণ লেগেছে। পরমার ফিল্ম নিয়ে পড়াশোনা রয়েছে। আমার যেহেতু সেটা নেই, অভিনয়ের কোনও ট্রেনিং নেই, যাদের আছে, তাদের খুব ভাল লাগে। কারণ টেকনিক্যালিটিস খুব ভাল জানে। যেমন অনির্বাণ। পরমা কিন্তু আমার থেকে বয়সে ছোট। ওর ভিশন খুব ক্লিয়ার। ও জানে কী চায়। ওর ফেভারিট ফিল্ম লিস্টে সবার আগে ‘ডিডিএলজে’। তারপর যশ চোপড়া এবং শাহরুখের ছবিগুলো। পরমা নিউ ইয়র্ক থেকে পড়াশোনা করে এসেছে, ফলে বোঝাই যাচ্ছে কীরকম মিশ্রণ পাওয়া যাবে। পরমা অনেকদূর যাবে, খুব ঠান্ডা মাথার মানুষ।
‘ইন্দু’-র দ্বিতীয় সিজনের ফিডব্যাক কেমন?
ভাল। ভাল বললেও সবার একটা কমপ্লেন আছে যে শেষ কেন হল না। সেটা আমরা বলতে পারি না, মেকাররা ভাল জানবে। তারা যদি ভাবে তৃতীয় সিজন হলে দর্শক আগ্রহী হবে, তাহলে হবে।
সিরিজে প্রধান মুখ হয়েছেন, এবং হইচই-এ আপনি নিয়মিত। সিনেমায় ‘সোয়েটার’-এ কেন্দ্র চরিত্রে পেয়েছি আপনাকে। তারপরের ছবিগুলোতে আপনাকে দেখা গিয়েছে নায়কের পাশে। যেখানে আপনি কেন্দ্র চরিত্র নন। সেটা নিয়ে ভাবছেন না?
আমার ভাবার ওপর প্রথমত কিছু নির্ভর করছে না। এক্ষেত্রে আমার একটা প্রশ্ন আছে, এই যে কেন্দ্র চরিত্র শেষ চার-পাঁচ বছর ধরে দেখছি হচ্ছে, তাহলে কি তার আগে যাঁরা করেছেন, তাঁরা অভিনেত্রী নন? এখন বরং মেয়েদের নিয়ে কাজ বেশি হচ্ছে।
দর্শক কিন্তু আপনাকে ‘সোয়েটার’-এর মতো লিডে পেতে চায়।
আই অ্যাম শিওর প্রোডিউসার-ডিরেক্টররা চাইলে দর্শক দেখতে পাবে। নিশ্চয়ই আমাকে ব্যালান্স করতে হবে। আমার অসুবিধা হচ্ছে না, যে নায়কের পাশে থাকছি। আমি এভাবে দেখছি না। নায়কের পাশে আমার চরিত্র না থাকলে ফিল্মটা জমবে না। সব চরিত্রই প্রয়োজন। আমি দেখি ক্যারেক্টার কেমন। আর নায়কের পাশে আমি ছাড়া যেন কেউ না থাকে (জোরে হাসি)। এবার ভাল চিত্রনাট্যের অপেক্ষায় আছি, ইন্টারেস্টিং চরিত্রের অপেক্ষায় আছি।
আপনার মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে পরমব্রতর সঙ্গে ‘ঘরে ফেরার গান’। আর কিছু?
নাহ, ওটা ছাড়া আর কিছু নেই। গত বছরে যা যা শুট করা সবই বেরিয়ে যাচ্ছে। আর কয়েকটার কথা চলছে।
‘ইশা’ নামের খুব কাছাকাছি ‘ইশক’ শব্দটা। সেই কারণে কি আপনাকে নিয়ে এত প্রেমের গুঞ্জন?
না, সেই কারণে নয় (হাসি)। আমার মনে হয় হয়তো ইশাকে নিয়ে ইশক বা প্রেমের গুঞ্জন হলে সেই খবরটা বেশি বিক্রি হয়।
বিভিন্ন গুঞ্জন নয়, একটাই বলব– ইন্দ্রনীল সেনগুপ্তকে নিয়ে আপনার সম্পর্কে একটা গুঞ্জন রয়েছে। যে, তাঁর সঙ্গে সম্পর্কে রয়েছেন…
তুমি তো ভাল একটা কথা বললে যে, একজনের নাম। অনেক জনের নাম আমি শুনেছি। আমি শুনেছি যার সঙ্গেই কাজ করি…
এই ধরনের গুঞ্জন-আলোচনা কতটা এফেক্ট করে?
এখন আর করে না। একেবারে করে না-ও বলব না। আল্টিমেটলি আমরা সবাই মানুষ। আমাদের সবার ইমোশন আছে। আমি জানি কোনটা সত্যি বা মিথ্যে। এখনও বলতে পারি, এটা নয় বা এটা। মনে হয় আমাদের সব ইমোশনই বোধ হয় বিক্রি করা হয়। চুপ করে থাকাটাই প্রেফার করছি।
এই ছবিতে সদ্য জার্নালিস্টের চরিত্রে কাজ করেছেন। তাদের সাইকি নিশ্চয়ই বুঝতে পারেন। তারা প্রশ্ন করে হয়তো এই জন্য যে, মানুষ তারকার জীবনটা জানতে চায়। প্রশ্ন করলে হয়তো আপনাদের খারাপ লাগে…
না না, ডেফিনিটলি… প্রশ্ন করাটা ভাল। আমার ক্ল্যারিফাই করার চান্স থাকে। যেখানে প্রশ্ন না করে ভুল তথ্য দিয়ে লেখা হয়, ডিমিন করার জন্য, সেটা ঠিক না। এটা হয়তো নায়িকাদের সঙ্গে বেশি হয়। হয়তো দর্শক নায়িকাদের জীবনের সম্বন্ধে বেশি জানতে চায়। ছেলেদের ক্ষেত্রে জানতে চায় না তা-ও বলব না। গসিপ করো, ছোটবেলায় আমিও গসিপ কলম পড়তাম। কিন্তু আমি বলছি অসম্মান করার অধিকার নেই।
দেবের সঙ্গে ‘গোলন্দাজ’ এবং ‘কাছের মানুষ’ করেছেন। এই দুটো ছবির পরে হয়তো বন্ধুত্বের জায়গা তৈরি হয়েছে কো-আর্টিস্ট হিসাবে। সেই জন্যই কি আপনাদের নিয়ে কথা শোনা যাচ্ছে?
আমার মনে হয়, যারা বলে তাদের জিজ্ঞেস করলে বেটার উত্তর পাবে। আমার তরফ
থেকে এটার কোনও উত্তর নেই। বানিয়ে নিলে কিছু বলার নেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.