১৫ জুলাই মুক্তি পাবে পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের নতুন ছবি ‘সাবাশ মিতু’। ছবি নিয়ে বিশেষ আড্ডায় পরিচালক। শুনলেন বিদিশা চট্টোপাধ্যায়।
সাধারণত নিজের স্ক্রিপ্ট নিয়েই ছবি করেন। ‘সাবাশ মিতু’ ব্যতিক্রম। এর সুবিধে বা অসুবিধে কোনখানে?
সৃজিত: এর আগে ‘রে’ করেছি, যেটা আমার চিত্রনাট্য নয়। সাধারণত অন্য কারও চিত্রনাট্য হলে নিজের ভিশনে পৌঁছনোর আগের স্টপ বা মাইলফলকটা অন্য কারও হয়। সেখানে একটা ডিটুর করতে হচ্ছে। কিন্তু সুবিধেও আছে। একটা অন্য পরিপ্রেক্ষিত পাওয়া যায়। তবে আমার সেনসিবিলিটি বা ভিশন অনুযায়ী যেখানে ভিন্ন মত তৈরি হয়েছে সেটা আমরা কথা বলে ঠিক করে নিয়েছি। স্ক্রিপ্টটা ভাল লেগেছিল কারণ সাধারণ বায়োপিকের থেকে বেশ আলাদা।
কীরকম?
সৃজিত: সেটা ছবিটা দেখলে বোঝা যাবে, নর্মাল স্পোর্ট বায়োপিক-এর থেকে কোথায় আলাদা। আর এটা শুধু ক্রিকেটের গল্প নয়। এক নারীর গল্প যে জেন্ডার ইকুয়ালিটি এবং সেক্সিজমের সঙ্গে লড়াই করেছে। আসলে মিতালির জীবনে এই লড়াইয়ের অনেকটা জায়গা রয়েছে।
আপনি ছবির পরিচালক যাঁর একটা ক্রিকেটীয় সত্তা আছে। শুটিং ফ্লোরে তাপসীকে ক্রিকেট টিপসও দিয়েছেন?
সৃজিত: প্রথম মিটিংয়েই তাপসীর স্টান্স এবং ফুটওয়ার্ক ঠিক করেছিলাম। মিতালির সঙ্গে কথা বলে, তাপসীর যে কোচ তাঁকে বোঝালাম এগজ্যাক্টলি কী চাইছি। সবচেয়ে বড় কথা, আমি নিজেও প্র্যাকটিস করতাম। টানা এক, দেড়মাস আমরা এটা করেছি। এটা করতে করতে তাপসী ক্রিকেট ভালবেসে ফেলল। যেটা ছবির জন্য খুব জরুরি ছিল। শুটিংয়ে এমনও হয়েছে, আমি প্যাকআপ বলার পরও তাপসী ব্যাটিং করে যাচ্ছে। শি স্টার্টেড এনজয়িং দ্য গেম। আর বাকি যে অভিনেতারা, দুই-একজন বাদে প্রত্যেকেই স্টেট লেভেল প্লেয়ার। ফলে খেলার মানটা হাই ছিল। আর ঠিক করেছিলাম যে একটা টেকে যতটা অ্যাকশন রাখা যায়। সাধারণত সেটা হয় না। আমি চেয়েছিলাম, বোলার বল করবে, তাপসী ব্যাট চালাবে– গোটাটা একটা টেক-এ রাখব। এবং বডি ডাবল ব্যবহার করব না, তাপসীকেই খেলতে হবে। ছবিতে একটা অথেনটিসিটি নিয়ে আসে।
প্র্যাকটিসে আপনি তাপসীকে বল করেছেন?
সৃজিত: আমি তো বল করি না। আমরা পাশাপাশি নেট-এ ব্যাট করেছি। আর বেশ কিছু ক্রিকেটের কোরিওগ্রাফিও দেখিয়ে দিয়েছি।
ক্রিকেট বললে আমরা ‘মেন ইন ব্লু’-ই বুঝি। একজন মহিলা ক্রিকেটারের জীবন পর্দায় দেখতে দর্শক কতটা তৈরি?
সৃজিত: ২০১৭ সালে বিশ্বকাপে ভাল পারফরম্যান্স করার পর মহিলাদের ক্রিকেট নিয়ে আলোচনা হয় এবং এই অসমতা নিয়ে কথা হয়। মিতালি রিটায়ার করার পর আরেক রাউন্ড আলোচনা হয়। মানুষ তখন খানিকটা বুঝতে পারে, মিতালি কত বড় মাপের ক্রিকেটার। এবং ক্রিকেটে মিতালির অবদান এই ছবির পর মানুষ আরও বেশি করে জানতে পারবে। এরপর তো ঝুলনকেও নিয়েও ছবি হচ্ছে। অনুষ্কা শর্মা অভিনয় করছে। এটাও দারুণ খবর, আমি ঝুলনকে ব্যক্তিগতভাবে চিনি, খুব বড় ক্রিকেটার এবং মাটির মানুষ। ওদের নিয়ে সেলিব্রেট করার সময় এসে গিয়েছে।
লর্ডস-এ শুটিং-এর অভিজ্ঞতা কেমন?
সৃজিত: ওহ! লর্ডস-এ শুটিং করা একটা সাররিয়াল অভিজ্ঞতা। আমি লর্ডস-এর বিখ্যাত ড্রেসিং রুম, বারান্দায় এবং মাঠে শুটিং করেছি।
২০১৭-র বিশ্বকাপে মিতালি রাজের ক্যাপ্টেনসিতে ভারত ৯ রানে ইংল্যান্ডের কাছে হেরে যায়। স্পোর্টস ফিল্ম-এর ফর্মুলা অনুযায়ী শেষে জয় মাস্ট। এই ছবির শেষটা তাহলে কীভাবে দেখাবেন?
সৃজিত: এটার জন্য ছবিটা দেখতে হবে। তবে এটুকু বলতে পারি, শেষ ম্যাচ জিতে বাড়ি ফেরার ঘটনাটা চিরাচরিত হয়ে যায়। বরং একদিক ভাল যে অন্যরকম একটা পরিণতি হয়েছে।
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের বায়োপিক করার কথা ছিল আপনার…
সৃজিত: সেটা আপাতত হচ্ছে না, তার বদলে ‘সাবাশ মিতু’ করলাম। ট্রেলার দেখে দাদা (সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়) তাঁর ভাল লাগার কথা জানিয়েছেন।
তাপসীর সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন?
সৃজিত: ও প্রচণ্ড ইনভলভড। প্রতিটা সিন করার আগে সেটাকে ডিভাইস করায় ও বিশ্বাসী। এটা আমারও কাজের পদ্ধতি। ফলে খুব ভালভাবে কাজ হয়েছে।
[আরও পড়ুন: সিনেমার পর্দায় জন ও অর্জুনের সংঘাত, ‘এক ভিলেন রিটার্নস’-এর ট্রেলারে ভরপুর অ্যাকশন]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.