বাংলার মিষ্টি তাঁর খুব ভালো লাগে। সুযোগ পেলে গাইতে চান রবীন্দ্রসঙ্গীত। রিয়েলিটি শোয়ে বাচ্চাদের উপকার হয় না অপকার? সব কিছু নিয়ে একান্ত সাক্ষাৎকারে সুপর্ণা মজুমদারের সঙ্গে কথা বললেন বলিউডের ‘পপ প্রিন্স’ আরমান মালিক। জানালেন নিজের নতুন গান ‘তেরা মে ইন্তেজার’-এর কথাও।
বাংলায় একাধিকবার আশা হয়েছে। এবারের অভিজ্ঞতা কেমন?
প্রতিবার যখন কলকাতায় আসি খুব ভালো লাগে। এখানকার পরিবেশ। সঙ্গীত অনুরাগ, খাবারের প্রতি প্রেম। আমি যে ধরনের খাবার খেতে পছন্দ করি। সবেচেয়ে পছন্দ তো পাতুরি মাছ। এবারে এখনও খাবার সুযোগ পাইনি। তবে আমি আমার নতুন গান ‘তেরা মে ইন্তেজার’ নিয়ে কথা বলতে এক্সাইটেড।
এটাই আমার পরের প্রশ্ন ছিল। আপনার প্রেমের অপেক্ষা তো শেষ। তার পরও কেন ‘তেরা মে ইন্তেজার’-এর মতো বিরহের সুর?
(হেসে) অনেক সময় ধরে আমার অনুরাগীরা এই ধরনের গানের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অনেক অপেক্ষার পর আমার এমন একটা সোলফুল গান এল। এটা অনুরাগীদের আমার উপহার। আমার ভাই আমাল মালিকের সঙ্গে এই গানে আমি কাজ করেছি। সেটাও অনেকদিন পর। গানের জন্য অনেক ভালোবাসা পাচ্ছি।
এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে মন ছুঁয়ে যাওয়া প্রশংসা কী পেলেন?
আমাদের অরিজিনাল আরমানকে ফিরে পেলাম। এই প্রশংসা শুনে দারুণ লাগে। আমার ফ্যানেরাও বলতে থাকে। অনেকদিন পর এমন একটা গান তাঁরা পেলেন। মেলোডি এখন আর তেমন হয় না। এই গানে সেটা রয়েছে। আমাল কিন্তু মেলোডি অত্যন্ত নজর দেয়। আমি সত্যিই কৃতজ্ঞ যে এমন একটা মেলোডি গান গাওয়ার সুযোগ পেলাম।
সঙ্গীত জীবনে আপনি বরাবর এক্লপ্লোর করেছেন। এবারে কোন পথে যেতে চান?
আমি কখনও সেভাবে র্যাপ করিনি। এই একটা দিক যেটা আমি এক্সপ্লোর করতে চাই। জানি না কীভাবে, কখন করতে পারব। কিন্তু খুব শিগগিরিই করতে চাই। এভাবেই নিজের সঙ্গীত জীবনে নানা রং ভরতে চাই।
আন্তর্জাতিক পপতারকা এড শিরানের সঙ্গে মিলে কাজ করছেন। সেই অভিজ্ঞতা জানতে চাইব।
দারুণ অভিজ্ঞতা। দারুণ শিল্পী। মুম্বই আসার এক-দুবছর আগেই একসঙ্গে কাজ করেছিলাম ‘দু স্টেপ’ গানে। সেই গানই মুম্বইয়ে একসঙ্গে পারফর্ম করেছিলাম। এটা আমার কাছে স্বপ্নপূরণ। এমন আরও স্বপ্ন পূরণ করতে চাই। আরও অনেক শিল্পীর সঙ্গে কাজ করতে চাই।
এতে আবার শাহরুখ কানেকশনও তো রয়েছে।
(হাসি) হ্যাঁ, আমি শাহরুখ খানের আইকনিক পোজ শিখিয়েছিলাম। আমরা ডিনার করছিলাম একসঙ্গে উনি জানতে চাইলেন কী এমন করা যায় যাতে মনে হয় তিনি ভারতে এসে গিয়েছেন। তখনও বলছিলাম, তুমি এই পোজটা একবার করে দাও সবাই খুশি হয়ে যাবে। পরে তো ওনার সঙ্গে শাহরুখ খানের দেখাও হয়েছে।
আরমান মালিক নাম নিয়ে একটা বিতর্ক সম্প্রতি হয়েছিল…
এটা নিয়ে যা বলার আমি সোশাল মিডিয়াতে বলেই দিয়েছি। নতুন করে আর কিছু বলতে চাই না।
বেশ তবে খাবারের কথা হোক। মাছ বাদে বাংলার আর কোন খাবার খেতে চাইবেন?
ডাল আমার বেশ ভালো লাগে। আর যদি মিষ্টি থাকে তাহলে তো আর কথাই নেই। আমি মিষ্টিপ্রেমী। কোথাও মিষ্টির কাউন্টারে বাংলার মিষ্টি থাকলে আমি সেটা খাব না হতেই পারে না। রসগোল্লা তো আছেই তবে ক্ষীরকদম আমার সবচেয়ে পছন্দের মিষ্টি।
আশনাকে এত সুন্দর করে প্রপোজ করেছেন। সেই সম্পর্কে কিছু বলুন। বিয়ে নিয়েও জানতে চাইব।
প্ল্যান করেই প্রপোজ করেছি। নতুন গানও গেয়েছিলাম ‘কসম সে’। অনেক কিছু মাথায় ছিল। তবে যা করতে চেয়েছিলাম। খুব ভালোভাবেই করেছি। আশনাও ভাবতে পারেনি। হ্যাঁ, আমরা এক বছর ধরে এনগেজড। খুব শিগগিরিই বিয়ে করব।
বিয়ের কী প্ল্যান?
সে তো যখন হবে তখন সব জানাবো (হাসি)। সারপ্রাইজ।
রিয়ালিটি শোয়ে এই খুদে প্রতিযোগীরা অংশ নেয়। কী মনে হয়? এতে কি ওদের ছোটবেলাটা নষ্ট হচ্ছে, না নতুন কিছু শিখছে। আপনি নিজে ছোটবেলায় রিয়ালিটি শোয়ে কমপিট করেছিলেন।
কঠিন প্রশ্ন। একদিকে আমার ময় রিয়ালিটি শোয়ে নতুনরা সুযোগ পায়। তবে হ্যাঁ, অনেক কম বয়সেই তারা বিনোদন জগতে এক্সপোজ হয়ে যায়। আর সেই বয়সে তো পড়াশোনাও আছে। অনেক সময় তো তাঁরা পড়ুয়া জীবনটাই পায় না। আমি কলেজ শুরু করার পর বলিউডে সুযোগ পেয়েছিলাম। কিন্তু আমার মা বলেই দিয়েছিলেন যে মিউজক করতে করতেই পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হবে। সেটা ছাড়া যাবে না। আমার মনে হয় রিয়ালিটি শোয়ে বয়স বেঁধে দেওয়া উচিত। কম বয়স, আর বেশি বয়স। আবার কিছু কিছু খুদে গায়কের প্রতিভা দেখলেও অবাক লাগে। আমাদের সময় এই ধরনের শো গুলো নতুন ছিল। এখন তো অনেক এক্সপোজার। আবার সোশাল মিডিয়াও আছে। এক্ষেত্রে গানে গুরুত্ব থাকাটা প্রয়োজন বলেই আমার মনে হয়। আর হ্যাঁ, এজ লিমিট থাকা দরকার।
খুদে শিল্পীদের কী পরামর্শ দেবেন?
রিয়ালিটি শো সবকিছু নয়। রিয়ালিটি শো ভালো, তাতে জনপ্রিয়তা পাওয়া যায়, সারা দেশের শিল্পীদের সঙ্গে গাওয়ার অভিজ্ঞতা হয়। কিন্তু তার পরের সফর খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাই রিয়ালিটি শো জিতে ফেলাও গুরুত্বপূর্ণ নয় বা রিয়ালিটি শো হেরে যাওয়া মানেই সব শেষ হয়ে যাওয়া নয়। এর পরে আনেক চ্যালেঞ্জ থাকে, আবার সুযোগও থাকে। তাই রিয়ালিটি শো সব নয়। এছাড়াও বিশাল একটা পৃথিবী রয়েছে।
শেষ বাংলা গান আপনার ২০২০ সালে। আবার কবে বাংলা গানে পাবো আপনাকে।
একটা গাওয়া দরকার না? ঠিক আছে। তৈরি করব। আসলে প্রায় চার বছর হয়ে গেল। চেষ্টা করব এই বছরের মধ্যেই কোনও কিছু করে ফেলার। আপনি মনে করে দিলেন। এবার কাজ শুরু করে দেব।
বাংলা গানের একাধিক বৈচিত্র। আপনি কোন দিকটা এক্সপ্লোর করতে চাইবেন?
অনেক রোম্যান্টিক গান গেয়েছি। অনেকে বলেন, আমার রবীন্দ্রসঙ্গীত গাওয়া উচিত।
আপনি শুনেছেন?
আমি আসলে সেভাবে শুনিনি। কারও সঙ্গে বসে শুনতে চাই। যাতে সেই মহাবিশ্বের কিছুটা জানতে পারি। এমনিই গেয়ে ফেলতে চাই না। কিছু করলে মন থেকে করতে চাই। তবে হ্যাঁ, বালার লোকগান নিয়ে কিছু করার আইডিয়াটাও ভালো।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.