আমাজন প্রাইমে মুক্তি পেয়েছে বিদ্যা বালান ও শেফালি শাহ অভিনীত নতুন ছবি ‘জলসা’। ইতিমধ্যেই ছবি নিয়ে উৎসাহ তৈরি হয়েছে সিনেপ্রেমীদের মধ্য়ে। ছবি তৈরির নেপথ্যের গল্প বললেন বিদ্যা বালন। শুনলেন বিদিশা চট্টোপাধ্যায়।
যখনই বিদ্যা বালানের ছবি মুক্তি পায়, আমরা মিনিংফুল কনটেন্টের অপেক্ষায় থাকি। কেরিয়ারের কোনও একটা সময় এই ধরনের ছবির দিকে আপনি ঝুঁকেছিলেন। কীভাবে নিজের স্ক্রিপ্ট বেছে নেন?
বিদ্যা বালান: কেরিয়ারের এতবছর পেরিয়ে আসার পর আমার মনে হয় একটা সময় এসেছিল যখন আমি বাইরের যা কিছু শোরগোল, সেটা বাদ দেওয়ার কথা ভেবেছিলাম। লোকের কাছে যেটা ঠিক সেটা বাদ দিয়ে নিজের ইন্সটিংক্ট-কে গুরুত্ব দিয়েছিলাম। নিজের গাট ফিলিং-কে মান্যতা দিতে শুরু করি। আমি কিন্তু ছবির ব্যবসায়িক সাফল্যের কথা বলছি না। যে ধরনের ছবি আমি নিজে করতে চাই সেই ছবির কথা বলছি। ‘ইশকিয়া’-র আগে নিজেকে ‘হে বেবি’, ‘কিসমত কানেকশন’ ছবিতে দেখে বুঝতে পেরেছিলাম এখানে আমি ফিট করি না। এই ধরনের ছবির প্রতি আমার দায়বদ্ধতা খুবই কম। অভিনেতা হিসাবে এই ধরনের ছবি আর রিপিট করতে চাইনি।
‘জলসা’ ছবিতে আপনাকে সাংবাদিক ‘মায়া’-র চরিত্রে দেখা যাবে। আজকের দিনে কোনও পেশাই দুর্নীতির ঊর্ধ্বে নয়। ছবিতে ‘মায়া’ কী ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়?
বিদ্য়া বালান: ‘মায়া মেনন’ চরিত্রটি যে কোনও পেশায় দেখা দিতে পারত। কিন্তু সাংবাদিক হওয়ার কারণে তার চ্যালেঞ্জ অনেক বেশি। মায়া তার কাজের ক্ষেত্রে সত্যের পথেই হাঁটার পক্ষপাতী। কিন্তু এমন কিছু ঘটনা ঘটে যখন ক্যামেরার লেন্স তার ব্যক্তিগত জীবনের সত্যের দিকে ঘুরে যায়। তখন কী হয় সেটাই দেখায় ‘জলসা’।
এখন নারীকেন্দ্রিক ছবির সংখ্যা বেশি। আপনি এই ট্রেন্ড বছর দশেক আগেই শুরু করেছিলেন। নিজেকে সময়ের চেয়ে এগিয়ে মনে হয়?
বিদ্যা বালান: এই প্রশ্নের উত্তর আমি কীভাবে দেব আমার জানা নেই। যে ধরনের ছবি করতে চেয়েছিলাম সেইরকম ছবি করার সুযোগ হয়েছিল। মে বি ইটস অ্যাবাউট বিইং অ্যাট দ্য রাইট প্লেস, অ্যাট দ্য রাইট টাইম।
ভারতীয় সিনেমার একশো বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরেও লিড চরিত্রে নায়িকা থাকলে ‘নারীকেন্দ্রিক’ ছবি বলে উল্লেখ করি আমরা। কী মনে হয় এটা কাটতে আরও একশো বছর লাগবে?
বিদ্যা বালান: ঠিকই, কিন্তু আমাদের ভেবে দেখতে হবে, যদি ওভারঅল রেশিও দেখতে হয় তাহলে নারীকেন্দ্রিক ছবির সংখ্যা কত? নারীকেন্দ্রিক ছবি যত বেশি সাফল্যের মুখ দেখবে, আরও বেশি করে তৈরি হবে, তখন এই ধরনের লেবেলিং বন্ধ হবে।
শেফালি শাহ্র সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন? আপনারা দু’জনেই খুব শক্তিশালী অভিনেতা।
বিদ্যা বালান: শেফালির কাজের আমি অনেক দিনের ভক্ত। ও এমন একজন অভিনেতা যে নিজের কাজের দ্বারা অন্যকে প্রভাবিত করতে পারে।
‘নো ওয়ান কিলড জেসিকা’ ছবিতে আপনি ভিকটিম এবং রানিকে সাংবাদিকের চরিত্রে দেখা গিয়েছিল। এখানে আপনি সাংবাদিকের চরিত্রে। কীভাবে দেখবেন এই দু’পক্ষকেই?
বিদ্যা বালান: এই ছবির ক্ষেত্রে এবং সাধারণত রিয়েল লাইফেও, দুটো পক্ষকে এভাবে আলাদা করা যাবে না। আমরা প্রত্যেকেই পরিস্থিতির শিকার। দু’পক্ষের জন্য আমার সহানুভূতি রয়েছে।
কেরিয়ারের একটা সময় আপনি নাকি দশটা ছবি থেকে বাদ পড়েছিলেন! আপস সব পেশাতেই করতে হয়। আপনি এই পরিস্থিতি কীভাবে সামলে উঠেছিলেন?
বিদ্যা বালান: আমার প্রথম মালয়ালম ছবি আটকে যায় কারণ পরিচালকের সঙ্গে অভিনেতা মোহনলালের সমস্যা হয়েছিল। তখন তারা কারণ হিসাবে আমাকে দেখিয়ে বলে, আমি নাকি অপয়া। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই, আমি আরও বেশ কিছু ছবি থেকে বাদ পড়ে যাই– কারণ আমাকে নিলে নাকি ছবি আটকে যাবে। এরপর দক্ষিণ থেকে এক সাংবাদিক এসে আমাকে নিয়ে একটা পজিটিভ অথচ ভুয়ো খবর করতে চেয়েছিল। আমি না বলেছিলাম, কারণ ভুয়ো খবর করে অভিনেতা হওয়া যায় না। পিছন ফিরে তাকালে আমার কৃতজ্ঞতাবোধ হয়। এই অভিজ্ঞতা পেরিয়েই আমি আজ এখানে।
প্ল্যান বি হিসাবে এখন অনেক অভিনেত্রী প্রযোজনায় আসছেন। আপনি অভিনয় ছাড়া কিছু করতে চান?
বিদ্যা বালান: অভিনয় ছাড়া আমি কিছুই করতে চাই না। আমার কোনও প্ল্যান বি নেই।
নিজের স্বামী এবং প্রযোজক সিদ্ধার্থ রায় কাপুরের ছবিতে অভিনয় করবেন না এটা আপনারা দু’জনে মিলেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কোনও বিশেষ কারণ?
বিদ্যা বালান: আমাদের মনে হয়েছিল, এটা আমাদের সম্পর্ককে অনেক সুস্থ রাখবে। বিয়েটা আমাদের দু’জনের কাছেই খুব গুরুত্বপূর্ণ। পেশাগত কারণে দ্বন্দ্ব হলে তার প্রভাব বিয়েতে পড়বে। সেই রিস্ক নিতে চাইনি। তাছাড়া আমার চেয়ে অন্য কোনও অভিনেতাকে বেশি গুরুত্ব দিলে তা সে পৃথিবীর যত বড়ই স্টার হোক না কেন, মেরিল স্ট্রিপ হলেও –আমি কিছুতেই মেনে নিতে পারব না। (হাসি)
এমন কোনও চরিত্র আছে যেটাতে আপনি অভিনয় করতে চান?
বিদ্যা বালান: আমার বহুদিনের ইচ্ছে চার্লি চ্যাপলিনের মতো কমেডি করার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.