সিনেমায় সুযোগ পাওয়ার ক্ষেত্রে কোন বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। ‘এক্স ইকুয়ালস টু প্রেম’ (X = Prem) ছবির মুক্তির আগে একান্ত সাক্ষাৎকারে জানালেন অভিনেতা অর্জুন চক্রবর্তী (Arjun Chakraborty)। শুনলেন বিদিশা চট্টোপাধ্যায়।
‘এক্স ইক্যুয়াল্টু প্রেম’ তো ফিউচারিস্টিক ছবি।
প্রেমটা ফিউচারিস্টিক নয়, তবে যেহেতু একটা মেমোরি ট্রান্সপ্ল্যান্টের ব্যাপার আছে, সেক্ষেত্রে কনসেপ্টটা ফিউচারিস্টিক।
আপনার চরিত্রটা নিয়ে একটু বলবেন?
চরিত্রের নাম অর্ণব। বেশ ম্যাচিওর, শান্ত, রিজার্ভ একজন মানুষ যার বিবাহিত জীবন বেশ ভাল। স্ত্রী অদিতির সঙ্গে সম্পর্কও ভাল। কিন্তু ফ্ল্যাশব্যাকে আমরা দেখতে পাই, কলেজে অর্ণবের ‘জয়ী’র প্রতি একটা ভালবাসা ছিল। সেটা পরিণতি পায়নি। কিন্তু সেটা আবার ফিরে আসে অর্ণব আর অদিতির জীবনে।
সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ছবিতে সুযোগ পাওয়া মানে তো বিশাল ব্যাপার। কতটা এক্সাইটেড?
অবশ্যই। আমার একটা উইশলিস্ট ছিলই। সৌভাগ্যক্রমে এই বছরই দু’জন তেমন পরিচালকের সঙ্গে কাজ করা হল– সৃজিত মুখোপাধ্যায় এবং কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়। সৃজিতদার সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছেটা অনেকদিন ধরেই। খুব আনন্দ হয়েছিল সৃজিতদা যখন নিজে থেকেই ফোন করে বলেছিল যে, ‘মনে হচ্ছে একসঙ্গে একটা কাজ করার সুযোগ
তৈরি হয়েছে’।
সৃজিত পরিচালক হিসাবে কতটা কড়া?
আমি তো হার্ড টাস্কমাস্টার শুনেই সেটে গিয়েছিলাম। আমার মনে হয় যেহেতু গল্পের স্কেলটা ‘এক যে ছিল রাজা’, বা ‘রাজকাহিনী’র মতো নয় এবং একটা আর্বান প্রেমের গল্প, তাই সেটে চাপটা কম ছিল। আমার যতটা মনে পড়ে সেটে বেশ আরামেই কাজ হয়েছে। পরিচালক হিসাবে খুব কড়া মনে হয়নি। তবে হ্যাঁ, সেটে বেশ গম্ভীর, কিন্তু কী চান, সেটা সুন্দরভাবে, পরিষ্কার করে বুঝিয়েও দেন।
‘অর্ণব’ শান্ত, স্মার্ট, কম কথা বলে। আপনার সঙ্গে মিল আছে?
বেশিরভাগটাই অমিল। তবে হ্যাঁ, মিল আছে। সেন্স অফ হিউমারের জায়গায় মিল আছে। আমি কতটা স্মার্ট সেটা বলতে পারব না।
স্মার্টনেস নিয়ে বিনয় করবেন?
না, না, একেবারেই না। আমি ওই রসবোধের জায়গাটাতেই রিলেট করতে পারি। আর আমিও একটু কম কথা বলি।
আপনি বেশ অল্প বয়সে শুরু করেছেন। একদিকে সাফল্য পেয়েছেন, আবার অনেকটা পথচলা বাকি। অভিনেতা হিসাবে কোনও লক্ষ্য আছে? নিজেকে ব্যালান্স করেন কীভাবে? ওভার কনফিডেন্সও তৈরি হতে পারে…
প্রায়োরিটি বা লক্ষ্য যদি বলেন তাহলে সেটা হল, আরও ভাল অভিনয় করা, আরও ভাল মানুষ হওয়া। মাথা ঘুরে যাবে বলে মনে হয় না। হ্যাঁ, ওভারকনফিডেন্ট হয়ে যাচ্ছি এই ভয়টা থাকে। তাই নতুন প্রোজেক্ট যখন আসে, তখন আমি চেষ্টা করি ‘প্রথম’ প্রোজেক্টের মতো করেই মন দেওয়ার। এখনও অনেক শেখার বাকি এটা সত্যি। ‘আমি বারো বছর কাজ করছি, আমাকে জ্ঞান দিতে এসো না’– এই অ্যাটিটিউড যেদিন আসবে, সেদিন আমি শেষ।
টলিউডে নতুনদের জায়গা করতে গেলে, অভিনয় ছাড়া আর কী দরকার?
আনফরচুনেটলি যাঁরা এখন কাস্টিং করেন, তাঁরা খুবই সোশ্যাল মিডিয়াতে ফলোয়ার নিয়ে চিন্তিত। এটা তো মাপকাঠি হওয়া উচিত নয়। এটা না হলে বোধহয় ভাল হত। কারণ অনেক সময় হয়, আমার কিছু পোস্ট করতে ইচ্ছে করছে না, তাও পোস্ট করতে হচ্ছে। রেলিভেন্ট থাকতে হয় বলে পোস্ট করতে হয়। ব্যক্তিগত পোস্ট বা কিছু কাজ নিয়ে পোস্ট করা, সেটা ঠিক আছে। কিন্তু রেলিভ্যান্ট থাকতে সোশ্যাল মিডিয়াকে একটা মাপকাঠি হিসাবে ধরে নেওয়াটা খুব বিরক্তিকর। অডিশন আর কাজের মানের ওপর নির্ভর করে কাস্টিং হওয়াটা বেটার।
আপনি যতটা কাজ করেন, গৌরব তুলনামূলকভাবে একটু কম। দুই ভাইয়ের মধ্যে এই নিয়ে কখনও জটিলতা হয়েছে?
এটা নিয়ে আমাদের মধ্যে কোনও অস্বস্তি নেই। কাজ নিয়ে নানা আলোচনা হয় ঠিকই। আসলে দাদা খুবই ম্যাচিওরড, সেন্সিবল। আর কাজ করতে হচ্ছে বলে কাজ করা, বা চাপে পড়ে কাজ করা এটা ওর ধাতে নেই। দাদা প্রথম থেকেই খুব চুজি ওর কাজ নিয়ে। তাহলে তো সব অফারেই হ্যাঁ, বলত। সেটা যে হচ্ছে না, দেখতেই পাচ্ছি।
কোনও চরিত্রে ‘হ্যাঁ’ বলার আগে কোনটা ম্যাটার করে? চরিত্র, ব্যানার, টাকার অঙ্ক?
আসলে সবক’টাই ম্যাটার করে। বড় ব্যানার অবশ্যই জরুরি। আজকাল মার্কেটিং, রোজগার করা– এই সবই খুব গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু তাই বলে বড় ব্যানার ছাড়া কাজ করব না, এমন নয়। ভাল চরিত্র পেলে সেটাও করি। কনটেন্ট ড্রিভেন চয়েস যেমন আছে, তেমন কোন প্ল্যাটফর্ম সেটাও দেখার দরকার রয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.