Advertisement
Advertisement
abir chatterjee

‘পুজোয় বক্স অফিসে লড়াই তো হবেই’, ‘রক্তবীজ’ ছবি নিয়ে আত্মবিশ্বাসী আবির চট্টোপাধ্যায়

নন্দিতা-শিবুর পরিচালনায় এটাই প্রথম কাজ আবিরের।

Exclusive interview of Abir chatterjee on Raktabeej| Sangbad Pratidin
Published by: Akash Misra
  • Posted:October 6, 2023 11:19 am
  • Updated:November 4, 2023 6:13 pm  

পুজোয় আসছে নন্দিতা রায় ও শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ‘রক্তবীজ’। ছবিতে অ‌্যাকশন অবতারে আবির চট্টোপাধ্য়ায়। ‘রক্তবীজ ‘নিয়ে বিশেষ আড্ডায় অভিনেতা। শুনলেন শম্পালী মৌলিক। 

মিস্টার বচ্চন ‘টিম রক্তবীজ’-কে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন!
আবির: অসংখ‌্য ধন‌্যবাদ ওঁকে এজন‌্য। উনি এত কাজের মধ্যেও আমাদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, যেটা গোটা টিমকে আলাদা এনার্জি দেবে।

Advertisement

জেন্টলম‌্যান আবির চট্টোপাধ‌্যায়ের অ‌্যাকশন অবতার দেখে সবাই তো চমকে যাচ্ছে।
আবির: অ‌্যাকশন আমি করেছি আগে। কিন্তু এই ছবিটা যেহেতু সত্যি ঘটনা অবলম্বনে, তার গুরুত্ব আলাদা। কাজেই খুব বাস্তবসম্মত ভাবে অ‌্যাকশন সিকোয়েন্সগুলো করার চেষ্টা করা হয়েছে। মনোহরজি (ভার্মা) এসেছিলেন, ফাইট ডিভাইস করার জন‌্য। আর দেখতেও যাতে ভালো লাগে, আবার খুব অবাস্তব না লাগে তেমন ভাবে করা হয়েছে। যদিও ‘ওভার দ‌্য টপ’ অনেকের খুব ভালো লাগে কিন্তু এই গল্পে তার জায়গা নেই। আমার যে চরিত্র, পঙ্কজ সিনহা তার বড় দায়িত্ব হল, দেশের প্রথম নাগরিককে সুরক্ষিত রাখা। সেই সঙ্গে আশপাশের প্রচুর মানুষের নিরাপত্তার দায়িত্বও তার, কারণ এটা দুর্গাপুজোর সময়ের গল্প। যতটা সম্ভব রিস্ক মিনিম‌্যালাইজ করে অ‌্যাকশন সিনগুলো করা হয়েছে।

আপনি তো বডি ডাবল নেননি।
আবির: না, চেষ্টা করেছি যতটা সেফলি কাজটা করা যায়। যাঁরা শুটিংয়ে বডি ডাবলের কাজ করেন, বা স্টান্ট-এর কাজ করেন তাঁদের প্রতি আমার অপরিসীম শ্রদ্ধা। কারণ, তাঁরা কোনওদিন ছিটেফোঁটাও প্রশংসা পান না। তাঁরা প্রচণ্ড ঝুঁকি নেন, অসম্ভব কাজগুলো করেন। ওদিকে প্রশংসাটা আমরা পাই। তো তাঁদের হ‌্যাটস অফ। বিশেষ করে আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতেও যাঁরা আছেন ফাইটের টিম, তাঁদের কথাও বলব। এখানে যদিও তাঁদের নেওয়া হয়নি। কিন্তু আমাদের ফাইটমাস্টার ছিলেন, উনি সেভাবেই পুরোটা সাজিয়েছেন, যেন আমরা সেফলি কাজটা করতে পারি।

 

চলন্ত নাগরদোলা থেকেও ঝাঁপ দিয়েছেন, ছফুট উচ্চতার বাঁশের বেড়া এক হাতে ভর দিয়ে নিমেষে টপকে গিয়েছেন। ভয় হয়নি?
আবির: ভয় খুব একটা করেনি। যেহেতু আমি আগেও ফাইট সিকোয়েন্স করেছি। কাজেই জানি ইন্সট্রাকশন কী ভাবে ফলো করব। একটু-আধটু চোট লাগেই। একজন অভিনেতা হিসাবে সেটা নিয়ে খুব বেশি কথা না বলাই উচিত। কারণ, ওটা আমাদের কাজের অংশ। রিস্ক ফ‌্যাক্টর কমানো, মনোযোগ দেওয়া, এটা একদম অঙ্কের মতো। এর আগে ‘বর্ণ পরিচয়’ ছবিতে সুনীল রডরিকসের সঙ্গে কাজ করেছি। ‘কানামাছি’-তে রকি রাজেশের সঙ্গে করেছি। সোনাদায় রাজেশ কান্নানের সঙ্গে কাজ করেছি। ডান্স কোরিওগ্রাফি আর ফাইট কোরিওগ্রাফি কোথায় যেন কাছাকাছি। অঙ্কের মতো চলে। ছোট থেকে প্রচুর অ‌্যাকশন ফিল্ম দেখে বড় হয়েছি। কাজেই একটা ইচ্ছেও ছিল, এরকম করব। চোট-আঘাতও হয়েছে (হাসি)।

কীরকম?
আবির: বিভিন্ন জায়গায় কালশিটে আবিষ্কার হচ্ছিল, সারারাত শুটিংয়ের পরদিন সকালে। ধরো, রাতে ক্লান্ত হয়ে শুয়ে পড়েছি, সকালে দেখলাম ঘাড় নাড়তে পারছি না। কোনওটাই খুব সাংঘাতিক কিছু নয়। এর আগে একটা ছবি করতে গিয়ে এমন চোট লেগেছিল, আমি এখন বঁা হঁাটু ঠিক করে মুড়তে পারি না। এখনও যদি হাঁটু মুড়ে নায়িকাকে প্রোপোজ করতে হয়, আমাকে নিক‌্যাপ পরতে হয়। (হাসি) ছবির শুটিংয়েই এই আঘাত। কিন্তু সেটাকে গ্ল‌্যামারাইজ করছি না। অনেকে যদিও করেন। ছোটদের সেটায় বেশ মজা লাগে, যে দ‌্যাখো আমার হিরো কী করছে। এই ব‌্যাপারে আমি নীরস উত্তর দিই। তাই আমার কথা মানুষের পছন্দ হয় না। এটাই সিনেমা যে, রিস্ক কমিয়ে টেকনিক‌্যালি কাজটা করো। আমার এত নীরস কথা বলা উচিত নয়। বোধহয় অ‌্যাপ্রোচটা পাল্টাতে হবে। বুঝতে পারছি এগুলো খুব একটা খাচ্ছে না (হাসি)।

‘রক্তবীজ’ পলিটিক‌্যাল থ্রিলার। আপনি আইপিএস অফিসার পঙ্কজ সিনহা। আরেকটু জানতে চাই চরিত্রটা নিয়ে।
আবির: হ্য়াঁ, এই লোকটার মূল কর্মক্ষেত্র দিল্লি। পশ্চিমবঙ্গে বিশেষ মিশনে সে এসেছে। দুর্গাপুজোর সময় বিশেষ উন্মাদনা থাকে, তার মধ্যে সাধারণ মানুষ যাতে সুরক্ষিত থাকে, সেটা এর দায়িত্ব। তার চেয়েও বড়– দেশের প্রথম নাগরিকের নিরাপত্তার দায়িত্ব তার। রাষ্ট্রপতি সেই সময় এখানে। পঙ্কজ ভীষণ ফোকাসড তার কাজে। এসব বিশেষ কাজে তার সুনাম আছে এবং এর টিম আগেও অনেক কঠিন কাজ সামলেছে। তাই সেন্ট্রাল থেকে এই টিমকে রাজ্যে পাঠানো হয়েছে। আসলে পঙ্কজের কেরিয়ারের ইতিহাস বলে, এই ধরনের কাজে সে দড়। তাই তাকেই সেন্ট্রাল থেকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এটুকুই বলব।

Abir Chatterjee speaks about Tollywood and Maayakumari

মিমি চক্রবর্তীও পুলিশের চরিত্রে। আপনারা জুটি হিসাবে লড়ছেন?
আবির: ওই যে আমার সংলাপ আছে, ‘স্টেট এবং সেন্ট্রাল একসঙ্গে হাত না মেলালে কাজটা সম্ভব না।’ (হাসি)

বহুদিন পর আপনি আর মিমি একসঙ্গে কাজ করলেন।
আবির: হ্যাঁ, আর নায়ক-নায়িকা হিসাবে এই প্রথমবার। মজার বিষয় হল, মিমির প্রথম ছবিতে আমার গেস্ট অ‌্যাপিয়ারেন্স ছিল। ‘বোঝে না সে বোঝে না’ করেছি আমরা। সোহমের সঙ্গে মিমি ‘বাঙালি বাবু…’ বলে যে ছবিটা করেছিল, সেখানেও আমার গেস্ট অ‌্যাপিয়ারেন্স ছিল। ‘কাটমুণ্ডু’-তে আমরা একসঙ্গে কাজ করেছি। বেশ কয়েকটা ছবিতে আমরা একসঙ্গে থাকলেও, কোনওটাতে নায়ক-নায়িকা ছিলাম না। মাঝে বেশ কিছু ছবিতে আমাদের কথা হলেও কাজগুলো হয়নি। আমার মনে হয় ‘রক্তবীজ’ হল ঠিক ছবিটা, যেটা আমাদের একসঙ্গে ডিজার্ভ করে।

ভিক্টর বন্দ্যোপাধ‌্যায়ের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?
আবির: একটা জিনিস আমার খুব মনে হয়, যাঁরা প্রকৃত অর্থে সুপারস্টার তাঁদের স্টারি ট‌্যানট্রামস বা ঝামেলা কিছু থাকে না, এবার ওঁকে সামনে থেকে এতদিন দেখেও সেটাই মনে হয়। ভিক্টরদা হলিউডের প্রথম সারির পরিচালকদের সঙ্গে নিয়মিত কাজ করেছেন। সত‌্যজিৎ রায়ের হিরো উনি। এমনকী, মেনস্ট্রিম বাংলা ছবিরও হিরো ছিলেন। অদ্ভুত রেঞ্জ! ওঁকে দেখে মনে হয়েছে, এই প্রসেসটা উনি উপভোগ করেছেন। নতুনদের সঙ্গে কাজ করাটা উনি এনজয় করেছেন। এবং তাদের ওয়েলকামিং ফিলিং দিয়েছেন। অনেক শিখেছি ওঁর থেকে।

পুজোয় ‘রক্তবীজ’ যেমন আসছে, আরও তিনটে হেভিওয়েট ছবিও আসছে, ‘দশম অবতার’, ‘বাঘা যতীন’, ‘জঙ্গলে মিতিন মাসি’। লড়াই অনুভব করছেন?
আবির: পুরোপুরি লড়াই আছে। এটা অস্বীকার করার জায়গা নেই। লড়াইটা হবেই। কারণ, আমরা লক্ষ করছি যে, রিলিজ উইন্ডোগুলো, মানে কোন সময়ে মানুষ দেখবেন, সেগুলো একটু সীমিত হয়ে গেছে। যেমন– ছুটি, পুজো। তার ফলে লড়াইটা আরও বাড়বে বই কমবে না।

আপনার লাস্ট রিলিজ ‘বিয়ে বিভ্রাট’। তার আগে ‘উইন্ডোজ’-এর সঙ্গেই ‘ফাটাফাটি’ করেছেন। আবার ‘রক্তবীজ’। ঘরের লোক হয়ে উঠেছেন তো?
আবির: এটা নন্দিতাদি-শিবুদার পরিচালনায় প্রথম কাজ আমার। খুব ভালো লেগেছিল যখন ‘ফাটাফাটি’-র ‘বাচস্পতি’-র পরে আমাকে ‘রক্তবীজ’-এর পঙ্কজ সিন্‌হার চরিত্রটা দেয় ওরা। কোনওভাবে দুটোর মিল নেই। আমাকে চ‌্যালেঞ্জটা দেওয়ায় খুব ভালো লেগেছিল (হাসি)।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement