এবার পুজোয় বাংলার বক্স অফিসে সেরায় সেরায় টক্কর। তাতে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের বাজি ‘দশম অবতার’। ছবির মুক্তির আগে বিদিশা চট্টোপাধ্যায়ের মুখোমুখি পরিচালক।
ট্রেলারের রেসপন্স তো খুব ভালো। আপনি ‘দশম অবতার’ নিয়ে আত্মবিশ্বাসী?
মেসেজের জোয়ার, ধস লেগেছে বলা যায়। বড় বড় মেসেজ পাচ্ছি, পুরনো স্মৃতির কথা বলছে সবাই, সৃজিত ইজ ব্যাক এমন কথাও লিখছে। ইটস ক্রেজি। আমি খুব ওভারহোয়েলমড!
বক্স অফিসের রেসপন্স নিয়ে কতটা আশাবাদী? সকাল আটটার শো হাউসফুল হবে?
আমি ঠিক জানি না। হোপফুলি হবে। আমি চারটে ছবির সাফল্যই কামনা করি। একটা খুব সুন্দর জিনিস দেখলাম। ‘পাঠান’, ‘গদর টু’, ‘ওহ মাই গড’-এর সমবেত কালেকশন দেখিয়ে বলা হয়েছে– বলিউড ইজ ব্যাক। আমি চাই এবার পুজোয় যেন বলা যেতে পারে, টলিউড ইজ ব্যাক।
ট্রেলার দেখে বোঝা যাচ্ছে, সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের সিগনেচার স্টাইল ইজ ব্যাক! চরিত্ররা চোখে চোখ রেখে ধারালো সংলাপ বলছে। সৃজিতের নিজের অবতারের কাছে ফিরে যাওয়া কি পাবলিক ডিমান্ড?
‘প্রবীর’-এর প্রত্যাবর্তনের জন্য একটা ডিমান্ড ছিলই। ‘দ্বিতীয় পুরুষ’ রিলিজের সময় বুম্বাদা ফোন করে বলেছিল, এ কি! ‘বাইশে’-র সিক্যুয়েল কোথায়? ‘প্রবীর’ একমাত্র ফেরত আসতে পারে ‘প্রিক্যুয়েল’-এ। তো সেটাই হল। আসলে আমি থ্রিলারের কাছে ফেরত যেতে চাই বারবার। দ্যাটস মাই কমফর্ট জোন। আর এই যে আমার চরিত্ররা, সেটা আমার নিজের কনশাসনেস, নিজের জীবন, আমার অভিজ্ঞতা, ভালোবাসা, ভালোলাগা– এই সবকিছু থেকে বেরিয়ে আসে। এই চরিত্ররা আমারই অংশ, আমারই বন্ধু। আমি তাদের ভালোবাসি, আমি তাদের প্রেমে পড়ি। এই পুরনো চরিত্রদের সঙ্গে আবার কথা বলতে ইচ্ছে করে। আর সেই জন্যই অভিজিৎ পাকড়াশি কেম ব্যাক ইন ‘দ্বিতীয় পুরুষ’। আই অলসো ওয়ান্টেড টু মিট ‘বিজয় পোদ্দার’, ‘প্রবীর রায়চৌধুরি’– তারা কী করছে, তারা আগে কেমন ছিল, এগুলো ভাবতে ইচ্ছে করেছে– তাই এই ডবল প্রিক্যুয়েল, কপ ইউনিভার্স।
যেটা বলতে চাইছি, আপনার সিগনেচার স্টাইলে চরিত্ররা কথার লড়াইয়ে একে অপরকে টেক্কা দেয়, সেটার কাছেও ফেরা!
হ্যাঁ, এটা আমার সিগনেচার স্টাইল। অবশ্যই সেটার কাছেও ফেরা। হয়তো এই কারণেই অভিনেতারা আমার ছবিতে কাজ করতে ভালোবাসেন। কারণ আমি তাদের সেই ‘স্পেস’-এ ঠেলে দিই, যেখানে চ্যালেঞ্জ আছে। এবং কেউ যদি তার সেরাটা না দেয় তাহলে অন্য জন মেরে বেরিয়ে যাবে। তাই দু’জনেই নিজের সেরাটা দিয়ে অভিনয়টা করেছে। এরকম সিনের পর সিন আছে বুম্বাদা এবং অনির্বাণের, বুম্বাদা-যিশুর। নানা সংঘাত আছে এই ছবিতে।
আপনি দু’জন অভিনেতাকে এইভাবে লড়িয়ে দিয়ে খুব মজা পান, তাই না?
ওহ! ইয়েস, খুবই মজা পাই। আমার দারুণ লাগে।
আপনি নিজে এই ধরনের পরিস্থিতিতে পড়েছেন কখনও?
আমি এই ধরনের পরিস্থিতিতে খুব পড়ি, এবং সবসময় সেটা প্ল্যানড হয় তেমন না। সেখানে আমার সংলাপের তীক্ষ্ণ বিনিময় ভালো লাগে। তাই বোধহয় অনেকে আমার সঙ্গে ঝগড়া করতে ভয় পায়। আসলে ঝগড়া বললে ভুল হবে। ওই চোখে চোখ রেখে শেষ কথাটা আমিই বলব।
তার মানে সৃজিত মুখোপাধ্যায় শেষ কথাটা বলতে ভালোবাসে?
হ্যাঁ, তা তো বাসে!
প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় এবং অনির্বাণ ভট্টাচার্যর জুটির ওপর ছবিটা দাঁড়িয়ে…
জুটি হিসাবে ওরা ফ্যান্টাসটিক। এটুকু বলতে পারি অনেক নায়িকার কমপ্লেক্স হবে। ওদের নিয়ে আমি আরও ছবি করতে চাই। দিস ইজ গোয়িং টু বি এ ফ্র্যাঞ্চাইজি। ওরা একসঙ্গে অনেক কেস সলভ করবে।
আরও ছবি করবেন সেটা বুঝলাম। অনির্বাণের জন্য তবু ঠিক আছে, ওর হাতে সময় আছে। কিন্তু বুম্বাদার তো প্রতিবার বয়সটাকে কমিয়ে আনার ব্যাপার।
আমি তো বলছি, এটা বুম্বাদা বলেই আমি সাহস পাচ্ছি। কারণ যখন বুম্বাদা লুক সেট-এ এল, আমরা হাঁ হয়ে গিয়েছি। বুম্বাদা আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল, কত বছর কমাতে হবে? আমি বলেছিলাম, ‘পনেরো থেকে কুড়ি!’ বুম্বাদা আশ্বস্ত করে বলেছিল, ‘হয়ে যাবে’।
হ্যাঁ, মানে ষাট ছুঁয়ে ফেলে, পঁয়তাল্লিশকে ফিরিয়ে আনা!
ইনক্রেডিবল! এটা বুম্বাদা ছাড়া সম্ভব নয়।
বুম্বাদা না অনির্বাণ, কে এগিয়ে যাবে?
জুটির মজা হল, কাউকে আলাদা করা যাবে না। দে আর হান্টিং পেয়ারস! ওয়াকার ইউনিস এবং ওয়াসিম আক্রমের মতো।
সিনেমার পর্দায় কপ ড্রামায় আপনার প্রিয় জুটি কারা?
উমম… কপ ড্রামা বলব না, তবে প্রিয় জুটি বলতে হলে বলব ‘সেন্ট অফ এ উওম্যান’-এ অ্যাল পাচিনো এবং ক্রিস ও’ডোনেল– ওদের রসায়নটা আমার খুব পছন্দ।
বুঝতে পারছি, ভিন্নধর্মী দুই পুরুষ, একজন ডমিনেটিং, অন্যজন সাবমিসিভ– নানা বাধা পেরিয়ে তাদের কাছে আসা, আপনার খুব পছন্দের?
হ্যাঁ, এটা আমার কাছে খুব প্রিয় একটা স্ট্রাকচার।
আপনার জীবনে এইরকম পুরুষ কে? আপনি কোন জন? যে ডমিনেটিং নাকি যে তুলনামূলক সাবমিসিভ?
ওয়েল সেটা ডিপেন্ড করবে। পরমব্রত’র সঙ্গে যেমন আমার এক ধরনের রসায়ন।
সেখানে আপনি ডমিনেটিং? অ্যাল পাচিনো, তাই তো?
হা হা হা… না না অত না। ডমিনেটিং আমি বলব না, তবে যেহেতু আমি বয়সে বড়, সেই অ্যাডভানটেজটা নিয়ে থাকি। আবার অঞ্জনদা (দত্ত), সুমনদার-র কাছে আমি আবার সেই ছোকরাটা হয়ে যেতে পারি। দে আর পিপল হু হ্যাভ শেপড এ লট অফ আওয়ার চাইল্ডহুড!
যিশু সেনগুপ্তকে কি এমন চরিত্র অফার করলেন, যে না বলতে পারল না। সব মিটিয়ে আবার কাজ করল?
ঝগড়াঝাঁটি আগেই মিটে গিয়েছিল। স্বামী-স্ত্রীর মতো আমাদের চলতেই থাকে। তবে হ্যাঁ, রোলের ব্যাপারে ও খুঁতখঁতে। আই হ্যাভ টু অফার হিম সামথিং দ্যাট ইজ আউট অফ অর্ডিনারি অ্যান্ড স্পেশাল। যে কোনও সিরিয়াল কিলারকে নিয়ে ছবি হলে, সিরিয়াল কিলারের চরিত্রটা তো ভালোবেসে লিখতে হয়। এই ছবিতেও তেমনই।
অভিনেতাদের জন্য পাওয়ারফুল চরিত্র লেখেন সবসময়…
হ্যাঁ, নায়িকাদের প্রচুর অভিযোগ আছে, আমি যতটা অনির্বাণ, পরম, বুম্বাদা, যিশুকে ভালোবাসি, সেই জায়গা থেকে তারা একটু উপেক্ষিত। কিন্তু আমার ছবিতে তাদের যতটুকু অংশ আছে সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
হ্যাঁ, কিন্তু সেটা দিয়ে বা একটা ‘রাজকাহিনী’ দিয়ে কি ম্যানেজ করতে পারবেন?
(হা হা হা হা…) এটুকু বলতে পারি, জয়ার চরিত্রটা এখানে আর্ম ক্যান্ডি নয়। শি ইজ দ্য ব্যালেন্সিং ফ্যাক্টর অ্যামং অল দ্য আলফা মেল্স। একটা স্মিত প্রেজেন্স আছে। ওর একটা রোম্যান্টিক ট্র্যাক আছে। শি ব্রিংস স্যানিটি টু দ্য প্রোসিডিংস।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.